ছবি: সংগৃহীত
চলতি বছরের শুরুতে রাজধানীর গোপীবাগে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুনের ঘটনায় পাঁচজন মারা যান। সে সময় এ ঘটনা বেশ আলোড়ন তোলে। ভয়াবহ এ ঘটনায় অষ্টম শ্রেণির ছাত্র রাইয়ান আজাদ অঙ্কুরের মনেও দাগ কাটে। তখন থেকেই তার মাথায় ঘুরতে থাকে কীভাবে ট্রেন দুর্ঘটনা রোধ করা যায়। সবশেষ পাঁচ মাসের চেষ্টায় সে একটি পদ্ধতি উদ্ভাবন করে।
তার উদ্ভাবিত পদ্ধতি ট্রেনে আগুনের ঘটনা ঘটলে চালকের কাছে বার্তা পৌঁছাবে এবং স্বয়ংক্রিয়ভাবে পানি ছিটিয়ে অগ্নিনির্বাপণের ব্যবস্থা করবে। এছাড়া এই পদ্ধতিতে কোনো স্থানে রেল সংযোগ বিচ্ছিন্ন হলে বা রেল লাইনের পাত বেঁকে গেলে স্টেশন মাস্টার ও ট্রেন চালকের কাছে সংকেত পাঠাবে। দুর্ঘটনার আগেই সংকেত পাওয়ায় তা রোধ সম্ভব হবে।
অঙ্কুর ঈশ্বরদীর পৌর শহরের শেরশাহ রোড এলাকার হাবিবুল আজাদের ছেলে। সে ভাষা শহীদ বিদ্যানিকেতনের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। অঙ্কুর জানায়, মাত্র পাঁচ মাসের চেষ্টায় তিন হাজার টাকা খরচ করে এটি উদ্ভাবন করেছে।
এ বিষয়ে ভাষা শহীদ বিদ্যানিকেতনের প্রধান শিক্ষক মুক্তার হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, অঙ্কুর পড়াশোনায় মেধাবী। পড়াশোনার পাশাপাশি তার এই উদ্ভাবনী চিন্তা খুবই প্রশংসনীয়। বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে তার কার্যক্রমকে সব সময়ই সহযোগিতা করেছি। আশা করি নতুন নতুন উদ্ভাবন নিয়ে সে পরিবার ও বিদ্যালয়ের মুখ উজ্জ্বল করবে।
অঙ্কুরের মা জিন্নাত রেহেনা বলেন, অঙ্কুর ছোটবেলা থেকে পড়াশোনার পাশাপাশি নানা কিছু উদ্ভাবন নিয়ে ভাবতো। পরিবারের পক্ষ থেকে তাকে মানসিক ও আর্থিকভাবে সহযোগিতা করেছি। রাইয়ান যদি দেশ ও জাতির জন্য কিছু করতে পারে তবে সেটুকুই আমাদের সার্থকতা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুবীর কুমার দাস জানান, রাইয়ান আজাদ অঙ্কুর ট্রেন দুর্ঘটনায় স্বয়ংক্রিয় প্রতিরোধক পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছে। তার পদ্ধতি নিয়ে ৪৫তম জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সপ্তাহ প্রতিযোগিতায় উপজেলা ও জেলায় প্রথম হয়ে জাতীয় পর্যায়েও অংশগ্রহণ করেছিল। এছাড়া বঙ্গবন্ধু সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ-২০২৪ এ অংশগ্রহণ করে উপজেলায় প্রথম এবং জেলা পর্যায়ে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছে সে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তার এই উদ্ভাবন পদ্ধতি সম্পর্কে রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হবে। তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখবেন এটি কাজে লাগিয়ে রেল দুর্ঘটনা রোধ করা সম্ভব কি না।
কেবি/ আই.কে.জে/