ছবি: রয়টার্স
এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে ইন্দোনেশিয়ায় সহিংস বিক্ষোভের পর গতকাল শুক্রবার (৫ই সেপ্টেম্বর) বিকেলে দেশটির পার্লামেন্টের সামনে ভোজ আয়োজন করতে দেখা গেছে বিক্ষোভকারীদের। গতকাল দেশটিতে সরকারি ছুটি ছিল। খবর রয়টার্সের।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের আয়োজন করা ‘বনভোজন বিক্ষোভে’ কবিতা ও বই পাঠের মতো কর্মসূচি রাখা হয়। এ সময় তারা রাজনীতিবিদদের ভাতা-সুবিধার সমালোচনা, আটক বিক্ষোভকারীদের মুক্তি এবং বেসামরিক নিরাপত্তা দায়িত্ব থেকে সামরিক বাহিনী প্রত্যাহারের দাবি জানান।
ইন্দোনেশিয়ার পদজাদজারান বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতা ভিনসেন্ট থমাসের এক বক্তব্য প্রচার করে দেশটির কম্পাস টিভি। সেখানে তিনি বলেন, ‘আমরা একসঙ্গে বনভোজন করি, সৃজনশীল ও উদ্ভাবনীভাবে আমাদের অভিব্যক্তি প্রকাশ করি। আমরা শুধু রাগ করে চিৎকার করি না, বরং শান্ত, সৃজনশীল উপায়ে আমাদের ক্ষোভ প্রকাশ করি।’
গত সপ্তাহে সংসদ সদস্যদের বিভিন্ন সুযোগ–সুবিধার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে শিক্ষার্থী, শ্রমিক এবং অধিকার সংগঠনের সদস্যসহ বিক্ষোভকারীরা জাকার্তার রাস্তায় নেমে আসেন। এর মধ্যে এক বিক্ষোভ সমাবেশে পুলিশের গাড়ির ধাক্কায় এক ট্যাক্সিচালক নিহত হওয়ার ঘটনায় সারাদেশে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
জাকার্তা পুলিশের মুখপাত্র আডে আরি শ্যাম ইন্দ্রাদি সাংবাদিকদের বলেন, শুক্রবার রাজধানীজুড়ে পুলিশ, সেনাসহ ১ হাজার ৩৭১ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
জাকার্তা থেকে প্রায় ৫০০ কিলোমিটার পূর্বে মধ্য জাভার সলো শহরে শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের অংশ হিসেবে প্রয়োজনীয় সামগ্রী বিতরণ ও বিনা মূল্যে স্বাস্থ্য পরীক্ষা চালিয়েছেন।
গত বৃহস্পতিবার ছাত্রসংগঠনগুলোর প্রতিনিধিরা মন্ত্রিসভার সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করে সংসদ সদস্যদের ভাতা ও বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে পুলিশের কৌশল নিয়ে অভিযোগ তোলেন।
সপ্তাহের শুরুর দিকে শিক্ষার্থী প্রতিনিধিরা কিছু সংসদ সদস্যের সঙ্গেও বৈঠক করেছিলেন। তবে এখনো তারা প্রেসিডেন্ট প্রাবোও সুবিয়ান্তোর সঙ্গে বৈঠকের দাবি আদায়ে সফল হননি।
অধিকার সংগঠনগুলোর তথ্য অনুযায়ী, নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে এ পর্যন্ত ১০ জন নিহত এবং ১ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।
নিউইয়র্কভিত্তিক অধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানিয়েছে, দেশজুড়ে চলমান দমন অভিযানে কর্তৃপক্ষ তিন হাজারের বেশি মানুষকে আটক করেছে।
প্রেসিডেন্ট প্রাবোও সুবিয়ান্তোর সঙ্গে বৈঠক চেয়ে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরেছেন শিক্ষার্থীরা। তবে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো নতুন সুস্পষ্ট ছাড়ের কথা উল্লেখ করা হয়নি। রাষ্ট্রসচিব প্রসেতিও হাদি জানান, সরকার শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো পর্যালোচনা করবে।
জে.এস/
খবরটি শেয়ার করুন