বুধবার, ৩রা জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
১৮ই আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এখনো গুহায় বাস করে যেখানকার মানুষ!

নিউজ ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ১২:১৯ অপরাহ্ন, ১৫ই এপ্রিল ২০২৪

#

ছবি : সংগৃহীত

প্রাচীনকালে আদি মানুষরাই যখন ঘর বাড়ি তৈরি শেখেনি তখন তারা পাহাড়ের গুহায় বসবাস করত, একথা সবারই জানা। তবে একবিংশ শতাব্দীতে এসে এখনো মানুষ গুহায় বাস করেন তা বিশ্বাস করা কঠিন বটে। জানলে অবাক হবেন বৈকি, গুহার মধ্যে আছে আস্ত এক গ্রাম। যেখানে গ্রামের যত কিছু দরকার সবই আছে।

চীনের গুইঝো প্রদেশে অবস্থিত ঝংডং নামক গ্রামটি বিশ্বের কাছে গুহা গ্রাম হিসেবে পরিচিত। ১৯৪৯ সালে চীনের গৃহযুদ্ধের শেষের দিকে, দস্যুদের থেকে লুকানোর জন্য গুহাটিতে আশ্রয় নেন কিছু মানুষ। গৃহযুদ্ধ শেষ হলে সেখানেই থেকে যান তারা। লোকালয়ে আর ফেরেননি। বিশ্বের অন্যতম সেরা দেশ, বিশেষ করে প্রযুক্তি খাতে যেখানে চীন এতো এগিয়ে সেখানকারই নাকি একদল মানুষ এখনো বাস করছেন গুহার মধ্যে!

এই গ্রামের বেশিরভাগ বাড়ি কাঠ এবং বাঁশ দিয়ে তৈরি। বাড়িগুলো গুহার প্রবেশদ্বারের কাছে অবস্থিত। ২০০০ সাল পর্যন্ত এই গ্রামে কোনো বিদ্যুৎও ছিল না। একজন আমেরিকান পর্যটক পর্বতারোহণের সময় গুহাটি আবিষ্কার করেছিলেন এবং সেখানে বসবাসকারী শিশুদের জন্য গুহার ভেতরে একটি স্কুল নির্মাণের জন্য অর্থ দান করেছিলেন।

৭ হাজার ফুট উঁচুতে অবস্থিত গুহাটি একটি ছোট পাহাড়ে অবস্থিত। এর নিকটতম শহুরে এলাকা, জিয়ুনের কাউন্টি থেকে এক ঘণ্টা লাগে সেখানে পৌঁছাতে। গ্রামটিতে এখন প্রতি বছর প্রচুর সংখ্যায় পর্যটক যান। যাদের মধ্যে চীন ছাড়াও অন্য দেশের পর্যটকরা রয়েছেন।

আরো পড়ুন : বিশ্বের অন্যতম নিরাপদ দেশ, কিছুই হারায় না যেখানে!

তবে গ্রামের বাসিন্দাদের স্থানান্তরিত করতে উন্নত সুযোগ সুবিধার ব্যবস্থা করেছে সরকার। তা সত্ত্বেও, গ্রামবাসীরা তাদের ঐতিহ্যবাহী জীবনযাপন ত্যাগ করতে অস্বীকার করেছেন বারবার। এটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৮০০ মিটার (প্রায় ৬ হাজার ফুট) উচ্চতায় অবস্থিত। এটি বাসিন্দাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা তৈরি করে।

২০০৮ সালে যখন সরকার গ্রামের স্কুলগুলো বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয় তখন তারা বেশ সমস্যায় পড়েছিল। তারপরও তারা সেখান থেকে যেতে রাজি হননি। এমনকি দুই ঘণ্টার পথ পাড়ি দিয়ে সন্তানদের গ্রামের বাইরে অবস্থিত স্কুলে নিয়ে যেত তারা।

প্রাথমিকভাবে যথাযথ অবকাঠামো এবং বিনোদনের সুযোগ সুবিধা না থাকায় সরকারি প্রচেষ্টায় গ্রামটি রূপান্তরিত হয়। তবে পর্যটকদের ক্রমবর্ধমান সংখ্যার কারণে, যোগাযোগ উন্নত করতে গ্রামে একটি রাস্তাও নির্মাণ করা হচ্ছে। যদিও কিছু বাসিন্দা চলে গেছে, কিন্তু এখনও অনেকে গ্রামে বাস করছে।

পাশাপাশি, গ্রামের বাইরে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা তাদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে সাপ্তাহিক ছুটিতে আসে। ঝোংডংয়ের বাসিন্দা লুও দেংগুয়াং গ্রামের জীবন সম্পর্কে বলেন, ‘এখানকার জীবন কঠিন। কিন্তু গুহা আমাদেরকে শীতের তীব্র ঠান্ডা এবং গ্রীষ্মের উত্তাপ থেকে রক্ষা করে।

এস/  আই.কে.জে


আদি মানুষ গুহা

খবরটি শেয়ার করুন