ফাইল ছবি (সংগৃহীত)
চলতি বছর নভেম্বরের শেষে বা ডিসেম্বরের শুরুতে আবার শুরু হচ্ছে দ্রুতগতির উড়ালসড়ক ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ। ৯ মাস কাজ বন্ধ থাকার পর এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণকাজের ৫১ শতাংশ শেয়ারের অধিকারী ইতালিয়ান থাই (ইতালথাই) ডেভেলপমেন্ট পাবলিক কোম্পানিকে বাদ দিয়ে শুরু হচ্ছে এ কাজ। শেয়ার নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে ব্যাংকঋণ ছাড় না হওয়ায় অর্থসংকটে এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাজ এ বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে ধাপে ধাপে বন্ধ হয়ে যায়।
সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের (পিপিপি) বড় এ প্রকল্পে বাংলাদেশ ছাড়াও রয়েছে থাইল্যান্ডের প্রতিষ্ঠান ইতালথাই, চীনের শেনডং ও সিনো হাইড্রো করপোরেশন। এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণ ও পরিচালনার জন্য এফডিইই লিমিটেড নামের কোম্পানি গঠন করে ইতালথাই। প্রকল্পে বিদেশি তিন প্রতিষ্ঠানের শেয়ার যথাক্রমে ৫১, ৩৪ ও ১৫ শতাংশ। বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ (বিবিএ) এক্সপ্রেসওয়ের নির্বাহক প্রতিষ্ঠান।
গত সেপ্টেম্বরে শেয়ার হস্তান্তরের বিরুদ্ধে বাংলাদেশে ও অক্টোবরে সিঙ্গাপুরে আইনি লড়াইয়ে ইতালথাই হেরে যাওয়ায় তাদের শেয়ার নিয়ে নিচ্ছে অপর অংশীদার চীনের শেনডং ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক অ্যান্ড টেকনিক্যাল কো-অপারেশন গ্রুপ। ফলে এ নির্মাণকাজ শুরু করা প্রতিষ্ঠান ইতালথাইকে সরে যেতে হচ্ছে। সময়মতো সুদ পরিশোধ করতে পারেনি ইতালথাই। আর শেনডংয়ের শেয়ার ৩৪ শতাংশ থেকে বেড়ে দাঁড়াচ্ছে ৮৫ শতাংশে।
এ বিষয়ে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের পরিচালক এ এইচ এম সাখাওয়াত আখতার একটি গণমাধ্যমকে বলেন, ইতালথাই অনেক চেষ্টা করেও অর্থ জোগাড় করতে পারেনি। তারা ঋণখেলাপি হয়ে পড়ে। সেপ্টেম্বরে উচ্চ আদালত শেয়ার হস্তান্তরে কোনো বাধা নেই বলে রায় দিয়েছিলেন। পরে ২০শে অক্টোবর সিঙ্গাপুর ইন্টারন্যাশনাল আরবিট্রেশন সেন্টারেও শুনানিতে ইতালথাই জিততে পারেনি। এর ফলে তাদের শেয়ার হস্তান্তর করতে হচ্ছে। এ প্রকল্পে ইতালথাই আর থাকছে না। ইতোমধ্যে শেয়ার হস্তান্তরের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। নভেম্বরের শেষ নাগাদ কাজ শুরু করা যাবে বলে আশা করা যায়।
এর আগে, এফডিইইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) থাই নাগরিক ভাসকন খান্নাভা জানিয়েছিলেন, শেয়ার নিয়ে দ্বন্দ্ব ও অর্থের অভাবে কাজ বন্ধ রয়েছে। তারা অর্থ জোগাড়ের চেষ্টা করছেন। ইতালথাইয়ের সঙ্গে চীনা ঋণদাতা ও অংশীদারত্বের মধ্যে দ্বন্দ্ব রয়েছে। কোনো আইনি ভিত্তি ছাড়াই তারা এফডিইইর শেয়ার স্থানান্তর চান।
এদিকে এফডিইইর আইনজীবীরা জানিয়েছিলেন, ইতালথাই প্রকল্পের শুরু থেকে সব ঝক্কি নিয়েছে। অথচ, অন্যায়ভাবে তাদের শেয়ার হস্তান্তরে চাপ দেওয়া হয়েছে।
ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প ২০০৯ সালে নেওয়া হয়। ২০১১ সালে প্রথমে বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে ইতালথাইয়ের সঙ্গে সরকারের ৮ হাজার ৭০৩ কোটি টাকার চুক্তি হয়। সাড়ে ৩ বছরের মধ্যে নির্মাণকাজ শেষ করে দ্রুতগতির উড়ালসড়কটি চালু করার কথা ছিল। তবে অর্থায়ন নিয়ে সমস্যা দেখা দেওয়ায় প্রকল্পটি ঝুলে যায়।
ওআ/কেবি