শুক্রবার, ৫ই জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২১শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কারাগারেই ভালো ছিলাম, বাইরের জীবন জটিল : জল্লাদ শাহাজান

নিউজ ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০৭:৫৬ অপরাহ্ন, ১লা এপ্রিল ২০২৪

#

ছবি: সংগৃহীত

কারাগারে ৪৪ বছর বন্দী থেকে বাইরে এসে নানান প্রতারণায় পড়ে কারাগারেই ভালো ছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন জল্লাদ শাহজাহান। তিনি বলেন, কারাগারের বাইরের জীবন এত জটিল কেন? জীবন এত কঠিন হবে জানলে কারাগারেই থেকে যেতাম।

সোমবার (১লা এপ্রিল) জাতীয় প্রেসক্লাবে জেল পরবর্তী জীবনের অভিজ্ঞতা ও নানা প্রতারণার ঘটনা জানাতে এক সংবাদ সম্মেলন এসব কথা বলেন আলোচিত জল্লাদ শাহজাহান।

শাহজাহান বলেন, জেল থেকে বের হয়ে নানাভাবে প্রতারিত হয়েছি। সাথী আক্তার নামে এক মেয়েকে বিয়ে করে প্রতারিত হয়েছি। সে আমার সব টাকা আত্মসাৎ করে উল্টো আমার নামে মামলা দিয়েছে। জেল থেকে বেরিয়ে প্রতারণার মধ্যে পড়তে হচ্ছে। এতো প্রতারক বাংলাদেশে হয়েছে। কারাগারের বাইরের লোকের সম্পর্কে এমন ধারণা ছিল না। ২৩ বছর বয়সে জেলে গিয়ে, ৪৪ বছর কারাভোগ শেষে অন্যরকম এক দেশ দেখছি।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জল্লাদ শাহজাহান বলেন, বেঁচে থাকার জন্য যা দরকার তা পাচ্ছি না। আমার দায়িত্ব নেয়ার মত কেউ নেই। তাই প্রধানমন্ত্রী ও বিত্তবানদের কাছে অনুরোধ, আমার থাকার ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দিন।

অর্থনৈতিক সংকটের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, আয় রোজগার, অর্থের যোগানদাতা, থাকার জায়গা কোনটাই আমার নেই। কারাভোগ শেষে যেখানেই যাচ্ছি প্রতারণার খপ্পরে পরছি।

গত বছরের ২১শে ডিসেম্বর বিয়ে করে সেখানেও সর্বশান্ত হয়েছি। বিয়ের কাবিন ৫ লাখ টাকা হলেও আমার কাছে থাকা ১০ লাখ টাকা স্ট্যাম্পে লিখিত দিয়ে আমার স্ত্রী সাথী আক্তার ফাতেমা ৫৩ দিনের মাথায় পালিয়ে গেছে। আমার নামে যৌতুকের মামলা দিয়েছে। আমি থানায় মামলা দিতে গেলে আমাকে ফিরিয়ে দিয়েছে।

পরে আইনজীবীর সহযোগিতায় গতকাল রোববার আদালাতে আমার স্ত্রী, শাশুড়িসহ ৬ জনের নামে মামলা দিয়েছি।

জেল থেকে বের হওয়ার পরের অভিজ্ঞতা জানিয়ে তিনি আরও বলেন, প্রথমে আমার ভাগিনা অটোরিকশা কিনে দেবে বলে টাকা মেরে দেয়। এরপর একটা চায়ের দোকান দেই। সেখানে কাজ করা একটি ছেলে ৩০ হাজার টাকা ও মোবাইল চুরি করে নিয়ে যায়। এখন উভয় সংকটে জীবনযাপন করছি। একদিকে অর্থনৈতিক সংকট অন্যদিকে একজন নারীর প্রতারণা ও যৌতুকের মামলা।

আরও পড়ুন: সাময়িক বরখাস্ত হলেন প্রকাশ্যে ঘুষ নেওয়া ভূমি অফিসের সেই কর্মী

জল্লাদ শাহাজাহান বলেন, কারাগার থেকে ছাড়া পাওয়ার পর প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিল থেকে আমাকে পাঁচ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছিল। এ ছাড়া বিভিন্ন জনের কাছ থেকে পাওয়া মোট ১৮ লাখ টাকা ছিল। এসব হারিয়ে এখন সর্বশান্ত হয়ে গেছি।

কীভাবে বাঁচবো, জীবন কীভাবে চলবে, কোথায় থাকবো কিছুই বুঝতে পারছি না। এখন খেয়ে না খেয়ে অনাহারে আমার জীবন চলছে। এভাবে চলতে থাকলে আমার আত্মহত্যা করা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী অপরাধীদের ফাঁসি দেওয়ার পুরষ্কার হিসেবে অমাকে একটি আবাসন ও জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত যেন চলতে পারি সেই কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা যেন করে দেয়। আমার অসহয়াত্বের অবসান চাই। আমাকে বাঁচান।

এসকে/ 

কারাগার জল্লাদ শাহাজান

খবরটি শেয়ার করুন