ছবি: সংগৃহীত
সাধারণত চোর অন্যের বাড়ি বা অফিসে চুরি করে! তবে অন্যের নয় নিজের বাড়িতেই বোরকা পরে চুরি করার ঘটনা ঘটেছে ভারতের রাজধানী দিল্লিতে। চোর এসময় লুট করে নগদ অর্থ, নিজের বোনের বিয়ের গহনাও। তবে কেন চুরি করেছেন, এই বর্ণনা শুনে হতবাক পুলিশও। সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে এমনটাই জানিয়েছে ভারতীয় এক সংবাদমাধ্যম।
জানা গেছে, কমলেশ নামে এক নারী দিল্লির উত্তম নগরে তার সেবক পার্কের বাড়িতে চুরির ঘটনার অভিযোগ জানাতে পুলিশের কাছে যান। কমলেশ দাবি করেন, গতমাসে দুপুর ২ টা থেকে আড়াইটার মধ্যে তার বাড়ি থেকে লাখ লাখ অর্থমূল্যের সোনা ও রূপার গয়না এবং নগদ ২৫ হাজার রুপি চুরি হয়ে গেছে। কিন্তু পুলিশ এই ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে সমস্যার মুখে পড়ে। মূলত চুরির আগে সেখানে জোর করে প্রবেশের কোনো চিহ্নই পুলিশ খুঁজে পায়নি। আবার বাড়ির প্রধান দরজা এবং আলমারির তালাও ছিল অক্ষত।
আরো পড়ুন: ৪১ টাকায় বিলাসবহুল হোটেলে ১৫ দিন!
পুলিশের দলটি তখন এলাকার সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখে এবং বোরকা পরা এক নারীকে সন্দেহজনকভাবে বাড়িতে ঢুকতে দেখে। একপর্যায়ে পুলিশের প্রযুক্তিগত তদন্তে কমলেশের বড় মেয়ে ৩১ বছর বয়সী শ্বেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের সময় অভিযুক্ত এই নারী জানায়, তার মা তার ছোট বোনকে বেশি ভালোবাসতেন, তাই এই চুরির পরিকল্পনা করেন তিনি। আর সেই ঈর্ষা থেকেই তিনি নিজের বাড়িতে চুরি করেছেন।
তবে এটাই একমাত্র কারণ নয়। অভিযুক্ত এই নারী আরো জানিয়েছেন, তার অন্য জায়গায় কিছু টাকা ধার নেওয়া ছিল। সেই ধার পরিশোধের জন্য তিনি মায়ের কাছে টাকা চেয়েছিলেন। কিন্তু মেলেনি। এদিকে, বোনের বিয়ের জন্য তার মা বেশ কিছু গহনা তৈরি করে রেখেছিলেন। তাই ধার পরিশোধের জন্য তিনি সেই বিয়ের গহনা এবং নগদ টাকা চুরি করতে বাধ্য হন।
অবশ্য বেশ ভালো পরিকল্পনা করেই শ্বেতা তার নিজের বাড়িতে চুরি করেন। পুলিশ জানিয়েছে,পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য গত জানুয়ারি মাস থেকে তিনি আলাদা থাকতেন। চুরির দিন সবজি কেনার নাম করে তিনি বাড়ির চাবি চুরি করে বেরিয়ে যান। তারপর পাবলিক টয়লেটে বোরকা পরে দুপুর ২টার দিকে তিনি বাড়িতে ঢোকেন।
সেই সময় বাড়িতে কেউ ছিলেন না। তারপর বাড়ির মেইন গেট খুলে ভেতরে ঢুকে আলমারির লকার খুলে নগদ টাকা ও গহনা নিয়ে পালিয়ে যান শ্বেতা। এরপর মা যখন তাকে টাকা, অলঙ্কার চুরির কথা জানান, তখন না জানার ভান করেন শ্বেতা। আর তাই চোরকে ধরতে তার মা পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন। তারপর তদন্তে নেমে সন্দেহবশত শ্বেতাকে আটক পুলিশ। আর শেষমেষ পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে সত্য ঘটনা স্বীকার করেন শ্বেতা।
আর তা শুনে হতবাক হয়ে যায় তার পরিবার থেকে পুলিশও। অভিযুক্ত শ্বেতা পুলিশকে জানিয়েছেন, তিনি গয়না বিক্রি করে দিয়েছেন। তবে পুলিশ সেসব গহনা উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে।
সূত্র:এনডিটিভি
এইচআ/ আই.কে.জে
খবরটি শেয়ার করুন