ছবি: সংগৃহীত
পাঙাশ মাছ দিয়ে পায়েস! শুনতে অবাক লাগলেও এমন ব্যতিক্রমী সব রেসিপি তৈরি করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হইচই ফেলে দিয়েছেন সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার দুই ভাই। শুধু রান্না নয়, ইউটিউব ও ফেসবুকে সেই রান্নার ভিডিও দিয়ে মাসে ৬ থেকে ৭ লাখ টাকা আয় করছেন তারা।
সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ পুস্তিগাছা গ্রামের হারুন-অর-রশিদ ও আশরাফুল ইসলাম নামের এ দুই ভাই পাঙাশ মাছের পায়েস, গরুর ভুনা, শজনে পাতার রুটি, এমনকি ইলিশ মাছের রুটির মতো অভিনব সব পদ রান্না করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন সবাইকে। রান্নার পর তারা সেই খাবার বিনা মূল্যে প্রতিবেশী এবং দূর-দূরান্ত থেকে আসা লোকজনকে খেতে দেন।
আশরাফুল আগে স্থানীয় শলী বনানী বাজারে মোবাইল ফোন মেকানিকের কাজ করতেন। তিনি বলেন, ‘ফেসবুকে ভিডিও দিয়ে ইনকামের কথা শুনে আমিও চেষ্টা শুরু করি। প্রথমে ছয় মাস কমেডি ভিডিও বানালেও সাড়া পাইনি। পরে রান্নায় পটু ছোট ভাই হারুনকে নিয়ে রান্নার ভিডিও শুরু করি। প্রথমে মুড়ি ভাজার ভিডিও আপলোড করি, সেটিই ভাইরাল হয়ে যায়।’ এরপর তাদের যাত্রা আর থেমে থাকেনি। একে একে ইলিশ মাছের রুটি, শজনে পাতার রুটি ও গরুর ভুঁড়ির পায়েসের ভিডিও ভাইরাল হয়।
আশরাফুল বলেন, ‘আয় করে সংসারের পাশাপাশি সমাজের অসহায় মানুষের জন্যও কিছু করতে চাই।’
হারুন-অর-রশিদ বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই রান্না করতে ভালোবাসতাম। ভাইয়ের সঙ্গে মিলে নতুন কিছু করার ভাবনা থেকেই এখন নানা রকম খাবার বানাই। পাঙাশ মাছের পায়েস, গরুর ভুঁড়ির পায়েস বা ইলিশ মাছের রুটি—এসব রেসিপি মানুষ পছন্দ করায় আমাদের উৎসাহ আরও বেড়েছে। ভবিষ্যতে আরও নতুন রেসিপি আনতে চাই। বর্তমানে ৬-৭ লাখ টাকা আয় হচ্ছে মাসে।’
পাঙাশ মাছের পায়েস তৈরির পদ্ধতি জানাতে গিয়ে হারুন বলেন, ‘প্রথমে মাছ কেটে পরিষ্কার করে কুচি কুচি করে ভেজে নেওয়া হয়। এরপর তা পাটায় বেটে রাখা হয়। আলাদা করে দুধ জ্বাল দিয়ে তাতে বাটা মাছ, চিনি, কিশমিশ, বাদাম ও নানা মসলা মিশিয়ে জাল করতে হয়। কিছু সময় পর ঘন হয়ে এলে তৈরি হয়ে যায় ভিন্ন স্বাদের পাঙাশ মাছের পায়েস।
আশরাফুল ও হারুনের মা মোছা. কহিনুর বেগম বলেন, ‘ছেলেরা ছোট থেকে অনেক কষ্ট করেছে। এখন নিজেদের উদ্যোগে রান্না করে ইউটিউব-ফেসবুকে ভিডিও দেয়। সেই আয়ে সংসার চলে।’
ভোজনরসিক তামিম ও সৈকতের ভাষায়, ‘তাদের বানানো খাবার শুধু অভিনবই নয়, বেশ সুস্বাদুও।’
জে.এস/
খবরটি শেয়ার করুন