ছবি - সংগৃহীত
বাংলাদেশে গ্রাম পর্যায়ে ভালো চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা যায়নি বলে উন্নত চিকিৎসার জন্য মানুষ শহরমুখী হচ্ছে। এই সুযোগে শহরে ব্যাঙয়ের ছাতার মতো প্রাইভেট হাসপাতাল ও ক্লিনিক গড়ে উঠছে। এসব প্রতিষ্ঠানে সেবার চেয়ে বাণিজ্যিক দিকটাই প্রকট হয়ে উঠছে।
মানুষের বাঁচার জন্য পাঁচটি মৌলিক চাহিদা হলো-খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসা। এগুলোর মধ্যে চিকিৎসা অন্যতম। চিকিৎসা মানুষের একটি অন্যতম মৌলিক অধিকার। অসুস্থ ব্যক্তির সুস্থতার জন্য চিকিৎসার প্রয়োজন হয়। এক কথায়, জীবনকে বিপন্ন হওয়া থেকে বাঁচাতে এবং শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ অবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়াই হলো চিকিৎসার মূল উদ্দেশ্য। বর্তমানে নামি ডাক্তার এবং দামি হাসপাতাল না হলে সুস্থ মানুষও অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাছাড়া সাধারণ ঠান্ডা-কাশি হলেও আমরা অর্থ খরচ করে ডাক্তারের পেছনে দৌড়াতে পছন্দ করি।
জনগণের করের টাকাতেই কিন্তু একজন ডাক্তার তৈরি হন। রাষ্ট্রের টাকা খরচ করে তাদের মেডিকেল কলেজে পড়ানো হয়। কিন্তু ডাক্তার হয়েই তারা ভিজিট ছাড়া রোগী দেখেন না। ভিজিট নেয়াটা যদিও তাদের অধিকার, তবে সঠিক চিকিৎসা প্রদানও তাদের নৈতিক দায়িত্ব। সরকারি হাসপাতালগুলোতে নামমাত্র খরচে চিকিৎসা করানোর ব্যবস্থা থাকলেও, সেখানে ডাক্তারদের মন নেই। সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা না পেয়ে বাধ্য হয়ে প্রাইভেট হাসপাতালে আসতে হয়। আর প্রাইভেট হাসপাতালে চলে টাকার খেলা। সেখানে চলে চিকিৎসা বাণিজ্য। উপজেলা পর্যায়ের চিকিৎসা কেন্দ্র ও সদর হাসপাতালগুলোতে থাকে না পর্যাপ্ত চিকিৎসক।
মানুষ নিরুপায় হয়ে ডাক্তারের কাছে যায়। কিন্তু অধিকাংশ চিকিৎসকই রোগীর এই দুর্বলতাকে সুযোগ হিসেবে বেছে নেন। তখন টাকার নেশায় অপ্রয়োজনীয় টেস্ট ও ঔষধ দিয়ে থাকেন। অনেক সময় রোগী তাদের অবহেলার কারণে মারা যায়। এমন সংবাদ গণমাধ্যমে আসার পর প্রশাসন একটু নড়ে চড়ে বসে। তখন দু-একটা ক্লিনিকে অভিযান চালানো হয়। এরপরই আবার আগের নিয়মে চলে সব। এসব অনিয়ম বন্ধে সরকারের যথাযথ কর্তৃপক্ষকে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। মনে রাখতে হবে চিকিৎসা একটি মহান সেবা, কোনো বাণিজ্য নয়।
আই.কে.জে/