বৃহঃস্পতিবার, ২১শে নভেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
৭ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যেতে হবে : প্রধান উপদেষ্টা *** রাজধানীতে সড়ক অবরোধ করে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের বিক্ষোভ *** এক যুগ পর আজ সেনাকুঞ্জে যাচ্ছেন খালেদা জিয়া *** দুর্যোগে সশস্ত্র বাহিনী দুর্গত জনগণের শেষ ভরসার স্থান : প্রধান উপদেষ্টা *** জাতি গঠনমূলক কাজে সশস্ত্র বাহিনী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে : রাষ্ট্রপতি *** ১৪ ডিগ্রিতে নামল পঞ্চগড়ের তাপমাত্রা *** জাতীয় দলে কবে খেলবেন জানালেন সাকিব! *** যেসব এলাকায় আজ ১২ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না *** বাংলাদেশ ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে আগ্রহী : প্রধান উপদেষ্টা *** আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পরিদর্শনে দুই উপদেষ্টা

জান্নাতের ৪টি নদী —যেগুলো পৃথিবীতে বহমান

ধর্ম ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ১২:০৮ পূর্বাহ্ন, ১৮ই নভেম্বর ২০২৪

#

ফাইল ছবি (সংগৃহীত)

মহান আল্লাহ তার অতুলনীয় নৈপুণ্যে মহাবিশ্ব সৃষ্টি করেছেন। আর সেই সৃষ্টির অন্যতম সেরা নিদর্শন হলো পৃথিবী। কোরআনের বর্ণনায়ও স্থান পেয়েছে পৃথিবীর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সমাহার ও বৈচিত্র্য। পৃথিবীকে যে উপাদানগুলো দিয়ে সাজিয়েছেন তার মধ্যে একটি হলো নদ-নদী। তবে পৃথিবীকে শোভামণ্ডিত করা এমনও কিছু নদী রয়েছে যার উৎপত্তি জান্নাতে।

সহিহ মুসলিম শরিফের হাদিসে ৪টি নদীকে জান্নাতের সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে বর্ণনা করা হয়েছে। বলা হয়েছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, পৃথিবীতে এমন ৪টি নদী প্রবাহিত হয়েছে, যেগুলো জান্নাতের নদীগুলোর অন্তর্ভুক্ত। এ নদীগুলো শুধু ভৌগোলিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং তাদের ঐতিহাসিক ও আধ্যাত্মিক তাৎপর্য ইসলামের ঐতিহ্যকে আরও সমৃদ্ধ করেছে।

ফোরাত নদী

ফোরাত নদী বা ইউফ্রেটিয়াস রিভার। ২,৮০০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই নদীটি তুরস্ক, সিরিয়া ও ইরাকের ওপর দিয়ে বয়ে গেছে। আজ থেকে প্রায় ১৪০০ বছর আগে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) বলে গেছেন, কেয়ামতের আগে শুকিয়ে যাবে এই ফোরাত নদী। ইতোমধ্যে এই নদী শুকানো শুরু করেছে। আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ততক্ষণ পর্যন্ত কেয়ামত সংগঠিত হবে না, যতক্ষণ না ফোরাত নদী শুকিয়ে যায় এবং তার মাঝ থেকে একটি স্বর্ণের পাহাড় উন্মোচন হয়। মানুষ এই স্বর্ণের জন্য যুদ্ধ করবে এবং প্রতি ১০০ জনের মাঝে ৯৯ জনই মারা যাবে এবং তারা প্রত্যেকেই ভাববে হয়ত আমিই সেই বেঁচে যাওয়া একজন।

মিসরের নীল নদ

নীল নদের উৎস ছিল এক মহারহস্য। নীল নদটি সহিহ মুসলিমে বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে, যেখানে রসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘নীল ও ফোরাত জান্নাতের নদীগুলোর মধ্যে রয়েছে। নীল নদ ইসলামের ঐতিহ্যের সঙ্গে সবচেয়ে বিখ্যাত সংযোগ হলো নবী মুসা (আ.)-এর গল্প। তার মা ফেরাউনের আদেশ থেকে তাকে রক্ষা করার আশায় একটি ঝুড়িতে রেখে নীল নদীতে ভাসিয়ে দেন, যা অবশেষে ফেরাউনের পরিবারের কাছে পৌঁছে যায়। মুসার নবী হওয়ার যাত্রা শুরু হয় সেখান থেকেই।

মহানবী (সা.) মিরাজে গিয়ে জান্নাতের ৪টি নদী দেখেছেন। দুটি বাহ্যিক ও দুটি অভ্যন্তরীণ। বাহ্যিক নদী দুটি দুনিয়ায় প্রবহমান, নীল ও ফোরাত।

তুরস্কের জয়হান নদী

সহিহ মুসলিমে জয়হান নদীকে জান্নাতের নদীগুলোর মধ্যে একটি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, অর্থাৎ পৃথিবীতে আমরা যেসব উপহার উপভোগ করি তা জান্নাতের অফুরন্ত দানের একটি ক্ষুদ্র ঝলক। এ নদী পূর্ব তারাস পর্বতমালার নুরহাক পর্বত থেকে উৎপন্ন হয়ে প্রায় ৫০০ কিলোমিটার প্রবাহিত হয়ে ভূমধ্যসাগরে গিয়ে মিশেছে। এটি প্রাচীনকাল থেকে একটি প্রাকৃতিক সীমানা ও বিভিন্ন সভ্যতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ হিসেবে পরিচিত ছিল।

তুরস্কের সিহান নদী

যেটি সেরাস নামেও পরিচিত। সিলিসিয়া অঞ্চলের দীর্ঘতম নদী এটি। যা প্রায় ৫৬০ কিলোমিটার প্রবাহিত হয়ে ভূমধ্যসাগরে মিশেছে। প্রাচীন লেখকরা সিহান নদী সম্পর্কে বিশদভাবে লিখেছেন, এটি সিলিসিয়া অঞ্চলের সভ্যতার বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এ নদীটি কৃষি ও বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এখানে গম, ভুট্টা, বার্লি, তুলা, ফল এবং সবজি চাষ করা হয়, যা স্থানীয় অর্থনীতির একটি বড় অংশ।

অন্য এক বর্ণনায় আছে, রসুলল্লাহ (সা.) বলেছেন, সিহান ও জায়হান, ফোরাত এবং নীল প্রত্যেক নদীই জান্নাতের নদ-নদীসমূহের অন্যতম।

জান্নাতের নদীমালার মধ্যে একটির নাম কাউসার; যা শেষ নবী (সা.)-কে হওজরূপে দান করা হয়েছে। যেখান হতে মহানবী (সা.) তার উম্মতকে কিয়ামতে পানি পান করাবেন। সুর্ববৃহৎ হওজ ও কাউসার নহর থাকবে জান্নাতি শরাবে পরিপূর্ণ। যে পবিত্র শরাব বা পানীয় দুধের চেয়েও সাদা, বরফের থেকেও শীতল, মধুর চেয়েও মিষ্ট এবং মিসকের চেয়েও সুগন্ধময়। হাদিসে বলা হয়েছে, যে একবার সে পানি পান করবে তাকে আর কোনোদিন পিপাসা স্পর্শ করবে না।

ওআ/ আই.কে.জে/

জান্নাত

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন