ছবি: সংগৃহীত
আজ বৃহস্পতিবার শেষ হচ্ছে এবারের হজ নিবন্ধনের সময়। তিন দফা বাড়ানোর পরও হজের কোটা পূরণ হয়নি। সবশেষ তথ্যানুযায়ী সরকারি ও বেসরকারিভাবে হজে যাওয়ার জন্য মোট ৬৮ হাজার ৩৫৫ জন নিবন্ধন করেছেন।
তাদের মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৪ হাজার ৫৬ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৬৪ হাজার ২৯৯ জন নিবন্ধন করেছেন।
সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের চুক্তি অনুযায়ী, চলতি বছর হজ পালনে ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জনের নিবন্ধন করার কথা। হিসাব অনুযায়ী কোটা পূরণে এখনও প্রায় ৫৯ হাজার নিবন্ধন দরকার।
এদিকে কোটা পূরণ না হলেও হজ নিবন্ধনের সময় আর বাড়াতে চায় না ধর্ম মন্ত্রণালয়। তবে নিবন্ধনের সময় আরও বাড়ানোর দাবি হজ ট্রাভেল এজেন্সিগুলোর।
এজেন্সি মালিকরা মনে করছেন, বাংলাদেশে বর্তমানে অর্থনৈতিক সংকট চলছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে মানুষ দিশেহারা। দেশের মানুষ তাদের মৌলিক চাহিদা মেটাতেই হিমশিম খাচ্ছে।
সব ক্ষেত্রেই খরচ কয়েকগুণ বেড়ে যাওয়ায় মানুষের হাতে পর্যাপ্ত টাকাও নেই। এর ওপর আবার হজ প্যাকেজের দামও বেশি। ফলে সাধারণ মানুষ এবার হজের প্রতি আগ্রহ কম দেখাচ্ছেন।
এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, নিবন্ধনের সময় শেষ হচ্ছে বৃহস্পতিবার। এরপর আর সময় বাড়ানো হবে না। কারণ, আগামী ৭ই ফেব্রুয়ারি হজযাত্রীর সংখ্যা সৌদি কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে বাকি কোটা ফিরিয়ে দিতে হবে। তাই সময় বাড়ানোর সুযোগ আর মন্ত্রণালয়ের হাতে নেই। যারা নিবন্ধন করেছেন, তাদের নিয়েই হজ ফ্লাইট সৌদি যাবে।
২০২৩ সালের ১৬ই সেপ্টেম্বর থেকে এবারের হজ নিবন্ধন শুরু হয়। যা চলে ১০ই ডিসেম্বর পর্যন্ত। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত পরিমাণ নিবন্ধন না হওয়ায় ৩১ই ডিসেম্বর পর্যন্ত ফের সময় বাড়ানো হয়। এরপর আরেক দফা বাড়ানো হয় সময়।
যা চলে ১৮ই জানুয়ারি পর্যন্ত। এরপর তৃতীয় দফা এবং সবশেষ নিবন্ধনের সময় ১লা ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত করা হয়। ফলে আজ শেষ হচ্ছে সেই সময়সীমা। তবে সময়সীমা শেষ হলেও বাংলাদেশের কোটার প্রায় অর্ধেক হজযাত্রী নিবন্ধনের বাইরে রয়েছেন।
আরো পড়ুন: বইমেলা শুরু হচ্ছে আজ, কোনদিকে কি থাকছে
মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ২০২২ সালে সরকারি ব্যবস্থাপনায় মোট তিনটি প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়। প্রথম প্যাকেজ ৪ লাখ ২৫ হাজার টাকা, দ্বিতীয় প্যাকেজ ৩ লাখ ৬০ হাজার এবং তৃতীয় প্যাকেজ ৩ লাখ ১৫ হাজার টাকা ছিল। বেসরকারি প্যাকেজ ছিল ৩ লাখ ৫৮ হাজার টাকা।
তবে পরের বছরই খরচ বেড়ে যায়। সরকারি ব্যবস্থাপনায় তখন হজের খরচ নির্ধারণ করা হয় ৬ লাখ ৮৩ হাজার ১৮ টাকা এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৬ লাখ ৭২ হাজার ৬১৮ টাকা। তবে এবার হজের প্যাকেজ আগের বছরের চেয়েও কম নির্ধারণ করা হয়। এবার সাধারণ প্যাকেজে ৫ লাখ ৭৮ হাজার ৮৪০ টাকা এবং বিশেষ প্যাকেজে ৯ লাখ ৩৬ হাজার ৩২০ টাকা ব্যয় হবে।
বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৮৩ হাজার ২০০ টাকা কমিয়ে সাধারণ প্যাকেজ ৫ লাখ ৮৯ হাজার ৮০০ টাকা এবং বিশেষ প্যাকেজ ৬ লাখ ৯৯ হাজার ৩০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
উল্লেখ্য, করোনা মহামারির কারণে ২০২০ এবং ২১ সালে সীমিত আকারে হজ অনুষ্ঠিত হয়। তখন বাংলাদেশ থেকে কেউ হজের সুযোগ পাননি।
পরে ২০২২ সালে বাংলাদেশকে মাত্র ৬০ হাজার হজযাত্রীর কোটা দেওয়া হলে তা পূরণও হয়। সবশেষ ২০২৩ সালে বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ ২২ হাজার ৫৫৮ জন হজ পালন করেন।
এসি/