ছবি: সংগৃহীত
মানবদেহে অঙ্গ প্রতিস্থাপন ও ১৫০ বছর পর্যন্ত বাঁচার সম্ভাবনা নিয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের মধ্যে আলাপচারিতার ভিডিওটি সরিয়ে ফেলেছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। খবর আল জাজিরার।
চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম কর্তৃপক্ষ ওই ভিডিও ব্যবহারের আইনি অনুমতি প্রত্যাহার করায় এবং ভিডিওটি সরানোর দাবি জানানোর কারণে এমন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
চীনের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন চ্যানেল সিসিটিভির আইনজীবী দলের পক্ষ থেকে এক লিখিত অনুরোধে বলা হয়, রয়টার্স তাদের চুক্তির শর্তের বাইরে গিয়ে ভিডিও ব্যবহার করেছে। ভিডিওটি সম্পাদনা করা নিয়েও সমালোচনা করেছে তারা।
এমন পরিস্থিতিতে রয়টার্স কর্তৃপক্ষ গত শুক্রবার (৫ই সেপ্টেম্বর) ভিডিওটি তাদের ওয়েবসাইট থেকে সরিয়ে নিয়েছে।
গত বুধবার বেইজিংয়ের তিয়েনআনমেন স্কয়ারে হাঁটতে হাঁটতে কথা বলছিলেন পুতিন ও সি চিন পিং। ওই সময় তাদের সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং–উনও ছিলেন। পুতিন ও সি মানবদেহে অঙ্গ প্রতিস্থাপন এবং মানুষের আয়ু ১৫০ বছর পর্যন্ত দীর্ঘ করার সম্ভাবনা নিয়ে কথা বলছিলেন। ওই কথোপকথন অসতর্কতাবশত মাইক্রোফোনের মাধ্যমে চীনের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচার হয়ে যায়।
পুতিনের বক্তব্যকে তার এক দোভাষী চীনা ভাষায় বুঝিয়ে বলছিলেন, ‘জীবপ্রযুক্তির ক্রমাগত উন্নতি হচ্ছে। মানুষের অঙ্গ বারবার প্রতিস্থাপন করা সম্ভব। আপনি যত বেশি দিন বাঁচবেন, ততই তরুণ থাকবেন, এমনকি অমরত্বও অর্জন করা সম্ভব।’
জবাবে সি বলছিলেন, ‘কেউ কেউ ভবিষ্যদ্বাণী করছেন যে এই শতাব্দীতে মানুষ ১৫০ বছর বাঁচতে পারে।’
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরিসমাপ্তি ও চীনের কাছে জাপানের আত্মসমর্পণের ৮০ বছর পূর্তি উপলক্ষে বেইজিংয়ে আয়োজিত এ সামরিক কুচকাওয়াজে এই তিন নেতা ছাড়াও দুই ডজনের বেশি রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান অংশ নেন।
সিসিটিভির ক্যামেরায় ধারণ হওয়া ও লাইসেন্সকৃত ভিডিওটি সম্পাদনা করে বার্তা সংস্থা রয়টার্স চার মিনিটের একটি ভিডিও বানায়। পরে তারা সেটি এক হাজারের বেশি গ্রাহক তথা আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমকে দেয়।
পুতিন ও সির মধ্যকার এ গোপন আলাপটি বিশ্বব্যাপী সংবাদমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ব্যাপকভাবে শেয়ার হয়েছে।
সিসিটিভির আইনজীবী দলের তত্ত্বাবধায়ক লিখিত অনুরোধে বলেছেন, রয়টার্স যেভাবে লাইসেন্সকৃত ওই ভিডিও সম্পাদনা করেছে, তাতে ভিডিওর মূল তথ্য ও বক্তব্য ভুলভাবে উপস্থাপিত হয়েছে। তবে সিসিটিভি কর্তৃপক্ষ ঠিক কোন বিষয়টিকে আপত্তিকর মনে করছে, সে ব্যাপারে বিস্তারিত উল্লেখ করেনি।
পরে রয়টার্স তাদের ওয়েবসাইট থেকে ভিডিওটি সরিয়ে ফেলেছে। বার্তা সংস্থাটির পক্ষ থেকে গ্রাহকদের বলা হয়েছে যে ভিডিওটি আর প্রকাশ করার আইনি অনুমতি তাদের নেই।
তবে রয়টার্স কোনো দোষ স্বীকার করেনি। বার্তা সংস্থাটির কর্তৃপক্ষ বলেছে, তারা প্রকাশিত তথ্যের নির্ভুলতার বিষয়ে অটল।
রয়টার্স আরও বলেছে, ‘আমরা প্রকাশিত ফুটেজ সতর্কভাবে পর্যালোচনা করেছি এবং রয়টার্সের দীর্ঘদিনের নিরপেক্ষ ও সঠিক সাংবাদিকতার প্রতিশ্রুতি ক্ষুণ্ন হওয়ার মতো কোনো কারণ পাইনি।’
জে.এস/
খবরটি শেয়ার করুন