ছবি: সংগৃহীত
বরাবরই হলুদ চাষে পাহাড়ের জুড়ি নেই। পাহাড়ের পতিত টিলাভূমিতে উৎপাদিত হলুদের খ্যাতি দেশজুড়ে। পাহাড়ে কৃষিপণ্যের তালিকায় সবার শীর্ষে ‘হলুদ’। এসব কারণেই হলুদ সংগ্রহে ঢাকা, চট্টগ্রাম, যশোর, ফেনী, নোয়াখালী ও কুমিল্লা থেকে পাইকাররা ভিড় করেন খাগড়াছড়ির বিভিন্ন হাট-বাজারে।
পাহাড়ে এসব হলুদ শুকিয়ে শেষে বিশালাকার একটি ফলার মেশিনে দিয়ে হলুদের উপররের অংশ ছাড়ানো হয়। এরপর ফলার মেশিন থেকে হলুদ বের করে বিক্রির উদ্দেশ্যে প্রস্তুত করা হয়।
তবে অনুকূল আবহাওয়ায় চলতি বছরেও পাহাড়ে হলুদের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে। গত বছর কাঁচা হলুদ চারশ টাকা মণ বিক্রি হলেও এ বছর বেড়ে তা হয়েছে ১১০০ টাকা। অন্যদিকে শুকনো হলুদ বিক্রি হচ্ছে ৮-৯ হাজার টাকা। অন্য বছরের তুলনায় এ বছর হলুদের দাম বেড়েছে দিগুণেরও বেশি। এছাড়া শুকনো হলুদের উচ্ছিষ্ট অংশ প্রতি মণ ৫০০-৫৫০ টাকা করে কিনে নিয়ে যায় মশার কয়েল উৎপাদনের কাঁচামাল হিসেবে।
খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গার মুসলিমপাড়া, তবলছড়ি এবং গুইমারার বড়পিলাক, সিন্ধুকছড়ি ও হাফছড়ি ঘুরে প্রান্তিক চাষি এবং সবচেয়ে বড় হলুদের বাজার গুইমারায় আসা খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য জানা গেছে।
খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গার মুসলিমপাড়ার হলুদ ব্যবসায়ী মো. দেলোয়ার হোসেন হলুদ ব্যবসার লাভ-লোকসান নিয়ে বলেন, ‘এ বছর প্রায় ৫০-৬০ লাখ টাকার হলুদ বিক্রি করেছেন।’ হলুদের দাম ভালো পাওয়ায় গত বছরের ক্ষতি পুষিয়ে লাভের মুখ দেখবেন বলে আশা করছেন তিনি।
গুইমারা বাজারে হলুদ বিক্রি করতে আসা কৃষক মো. আব্দুল করিম বলেন, ‘প্রতি মণ হলুদ সর্বোচ্চ ১১০০ টাকা দরে বিক্রি করেছি। এ বছর দাম ভালো পাওয়ায় গত বছরের লোকসান উঠে আসবে। সিন্ধুকছড়ি এলাকার হলুদ চাষি জীবন ত্রিপুরা ও আথুইপ্রু মারমা বলেন, ‘গত বছর হলুদের দাম কমে যাওয়ায় অনেকেই হলুদ চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। তবে এ বছর হলুদের দাম পাওয়ায় পাহাড়ের চাষিরা হলুদ চাষে ভাগ্য বদলের স্বপ্ন দেখছেন।’
আরো পড়ুন: লাল মরিচে স্বপ্ন দেখছেন সারিয়াকান্দির চাষিরা
হলুদের আমদানি নির্ভরতা কমানোর দাবি জানিয়ে দীর্ঘদিন হলুদ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত মো. দুলাল হোসেন ও হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘পাহাড়ের হলুদ অত্যন্ত ভালো। এ হলুদের খ্যাতি দেশজোড়া। হলুদের বাজার তৈরি করতে সরকারকে আরও বেশি উদ্যোগী হতে হবে।’
এসি/ আই. কে. জে/