মঙ্গলবার, ২২শে জুলাই ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৬ই শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** সংসদে সংরক্ষিত আসন চায় দলিত সম্প্রদায় *** উত্তরায় বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নরেন্দ্র মোদির শোক *** সাগরিকার হ্যাটট্রিকে নেপালকে উড়িয়ে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ *** উত্তরায় বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর শোক *** হাসপাতাল এলাকায় অহেতুক ভিড় না করার অনুরোধ প্রধান উপদেষ্টার *** নিরীহদের হয়রানি না করতে অনুরোধ গোপালগঞ্জ জেলা বিএনপির *** পাইলট বিমানটিকে জনবিরল এলাকায় নেওয়ার চেষ্টা করেন: আইএসপিআর *** বিসিবির সিদ্ধান্ত বদল, স্টেডিয়ামে খাবার নিয়ে ঢুকতে মানা *** বিমান দুর্ঘটনা থেকে অল্পের জন্য বাঁচলেন অভিনেত্রী সানা *** জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আলোচনা মুলতবি

বারবার ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানোর নেপথ্যে কারা?

সম্পাদকীয়

🕒 প্রকাশ: ০৫:০৭ অপরাহ্ন, ১৯শে এপ্রিল ২০২৫

#

ছবি: সংগৃহীত

সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ১৪ টাকা বাড়িয়েছে সরকার। সেই সঙ্গে পাম তেলের দামও বাড়ানো হয়েছে লিটারে ১২ টাকা। নতুন দাম অনুযায়ী, প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল কিনতে খরচ হবে ১৮৯ টাকা, যা আগে ছিল ১৭৫ টাকা। পাম তেলের নতুন দাম প্রতি লিটার ১৬৯ টাকা, যা আগে ছিল ১৫৭ টাকা।

সরকার ভোজ্যতেল ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠকের পর সয়াবিন ও পাম তেলের নতুন দাম ঘোষণা করে। সরকারি ঘোষণার আগে ১৩ই এপ্রিল একই পরিমাণ দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেয় ‘ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স এসোসিয়েশন’। এমন প্রেক্ষাপটে প্রশ্ন ওঠছে- ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন কারা? সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা ব্যবসায়ীদের, নাকি সরকারের?

বাজার বিশ্লেষকদের মতে, ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মূলত দামের সিদ্ধান্ত আসে। তাদের সিদ্ধান্ত সরকার মানতে ‘বাধ্য’ থাকে। বারবার ব্যবসায়ীদের সিদ্ধান্ত সরকার মানতে ‘বাধ্য’ হচ্ছে। তাদের কাছে সরকার যেন ‘অসহায়’ হয়ে পড়ছে। তা না হলে সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগেই কীভাবে মালিক সমিতি দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেয়? 

দাম বাড়ানোর এ ঘোষণা প্রমাণ করে, ব্যবসায়ীরাই দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন। সরকার এ ক্ষেত্রে শুধু বৈধতা দেয় মাত্র। 

এবারের রোজার আগে দাম সহনীয় রাখতে সরকার ভোজ্যতেলের শুল্ক-করের যে  রেয়াত দিয়েছিল, এর মেয়াদ গত ৩১শে মার্চে শেষ হয়। এর আগেই ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দেন মিল মালিকরা। বোতলের সয়াবিনের দাম তারা এক লাফে ১৮ টাকা বাড়াতে চেয়েছিলেন। খোলা সয়াবিনের দাম বাড়াতে চেয়েছিলেন লিটারে ১৩ টাকা। 

ভোজ্যতেলের কর অব্যাহতি সুবিধার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরদিন ১লা এপ্রিল থেকে এ দর কার্যকরের ঘোষণা দেন ব্যবসায়ীরা। ঘোষণা অনুযায়ী দাম বাড়ানো হয়। বছরে প্রায় ৩০ লাখ টন ভোজ্যতেলের চাহিদার বিপরীতে দেশে সরিষা থেকে আসে প্রায় সাত লাখ টন। এর বাইরে রাইস ব্র্যান্ড থেকেও আসে ৬ লাখ টনের মতো। বাকি ভোজ্যতেল আমদানি করতে হয়।

সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘তেলের দাম এখন বাড়ালেও অদূর ভবিষ্যতে তা আবার কমে যাবে। প্রতিযোগিতা বাড়বার কারণে এ মূল্য একসময় কমবে।’ যদিও সরকারের প্রতিশ্রুতির বাস্তবে কোনো ভিত্তি নেই। দেশে একবার কোনো পণ্যের দাম বাড়লে, তা কমে আগের দামে ফেরার অতীত রেকর্ড নেই। 

‘তেলের দাম বাড়লেও এর প্রভাব পরিবারে খুব বেশি পড়বে না’ বলে মন্তব্য করেন বাণিজ্য উপদেষ্টা। তিনি দাবি করেন, ‘মূল্যস্ফীতি এখন নিয়ন্ত্রণের মধ্যে আছে। তাই এ বাড়তি ১৪ টাকা সংসারে খুব একটা প্রভাব ফেলবে না বলেই মনে হয়।’

একটা পরিবারে যদি মাসে ৫ লিটার তেল লাগে, তাহলে বাড়তি খরচ হবে ৭০ টাকা। মাসের সব খরচের সঙ্গে ৭০ টাকা বাড়তি হলে তা হয়তো কিছুটা হলেও সহনীয় হতো। সরকারের উপদেষ্টার বক্তব্যের সঙ্গে বাস্তব অবস্থার কোনো মিল নেই। কারণ, শুধু ভোজ্যতেলই নয়, এখন প্রতিটি জিনিসের দাম উর্ধ্বমুখী। এ অবস্থায় জনগণ নতুন করে বিড়ম্বনায় পড়বে।

কনজ্যুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ভোজ্যতেলের দাম নির্ধারণ করেছেন ব্যবসায়ীরাই। সরকার ব্যবসায়ীদের সিদ্ধান্ত মানতে ‘বাধ্য’ হয়েছে। এ দাম নির্ধারণটা একপক্ষীয়। এখানে ভোক্তার কোনো মতামত নেওয়া হয়নি। আন্তর্জাতিক বাজারে যখন তেলের দাম কম, তখন দেশে এক লাফে এত টাকা বাড়ানোর কোনো কারণ নেই। আসলে কোথাও কোনো জবাবদিহি নেই, যে যার মতো করে চলছেন।

এইচ.এস/


ভোজ্যতেল

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন