ছবি-সংগৃহীত
বাংলাদেশি নেপথ্য সঙ্গীতশিল্পী। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের গানের পাশাপাশি তিনি দেশাত্মবোধক গান থেকে শুরু করে উচ্চাঙ্গ, ধ্রুপদী, লোকসঙ্গীত ও আধুনিক বাংলা গানসহ বিভিন্ন ধারার নানান আঙ্গিকের সুরে গান গেয়ে নিজেকে দেশের অন্যতম সেরা সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। যে ধরনের গানই কণ্ঠে ধারণ করেছেন তা সুরের আকাশে ডানা মেলে সবার হৃদয় ছুঁয়ে গেছে।
তার কণ্ঠের অসংখ্য গানের জাদুতে আচ্ছন্ন হয়েছেন এদেশের সংগীতপ্রেমীরা। এ শিল্পীর নাম সাবিনা ইয়াসমিন। যাকে বাংলা গানের জীবন্ত কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী বলা হয়।
কণ্ঠ মাধুর্যতার কারণে সাবিনা ইয়াসমিনকে কোকিলকণ্ঠী শিল্পী বলা হয়। তিনি গান গেয়ে প্রজন্মের পর প্রজন্মের শ্রোতাদের হৃদয় জয় করে যাচ্ছেন। তার দীর্ঘ সংগীত ক্যারিয়ারে এখনো তিনি সমান জনপ্রিয়। শুধু বাংলাদেশে নয়, সাবিনা ইয়াসমিনকে উপমহাদেশের সেরা সংগীতশিল্পীদের একজন মনে করা হয়।
বাংলা গানের খ্যাতিমান শিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন ১৯৫৪ সালের আজকের দিনে (৪ সেপ্টেম্বর) সাতক্ষীরা জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা লুৎফর রহমান ও মায়ের নাম বেগম মৌলুদা খাতুন। তার পুরো পরিবারটি সংগীত পরিবার হিসেবে পরিচিত। তার পাঁচ বোনের মধ্যে চারজনই গান করেছেন। তারা হচ্ছেন, ফওজিয়া খান, ফরিদা ইয়াসমিন, নীলুফার ইয়াসমীন এবং সাবিনা ইয়াসমিন। তার বোন নীলুফার ইয়াসমিনের ছেলে আগুন এদেশের একজন তুমুল জনপ্রিয় শিল্পী।
সাবিনা ইয়াসমিন ১৯৬৭ সালে আমজাদ হোসেন ও নূরুল হক বাচ্চু নির্মিত ‘আগুন নিয়ে খেলা’ চলচ্চিত্রে আলতাফ মাহমুদের সংগীত পরিচালনায় ‘মধু জোছনা দীপালি’ গানের মাধ্যমে সিনেমায় প্লে-ব্যাক শুরু করেন।
অন্যান্য শাখার গানের পাশাপাশি সাবিনা ইয়াসমিন দেশের গানে অসামান্য পারদর্শিতা দেখিয়েছেন। তার কণ্ঠে নঈম গহরের লেখা ও আজাদ রহমানের সুরে ‘জন্ম আমার ধন্য হলো মাগো’ গানটি দেশাত্ববোধক গানের মধ্যে অন্যতম সেরা একটি গান।
এ ছাড়াও সাবিনা ইয়াসমিনের জনপ্রিয় দেশের গানের মধ্যে রয়েছে, ‘সব কটা জানালা খুলে দাও না’, সেই রেল লাইনের ধারে’, ‘সুন্দর সুবর্ণ’, ‘একটি বাংলাদেশ’ প্রভৃতি।
আরো পড়ুন: পার্টিতে শাহরুখকে দেখেই জড়িয়ে ধরে এ কি করলেন আমিশা
সাবিনা ইয়াসমিনের কণ্ঠে যেসব গান বাণীবদ্ধ হয়েছে এর অধিকাংশই ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। তার কণ্ঠের অসংখ্য শ্রোতাপ্রিয় গান রয়েছে।
সাবিনা ইয়াসমিনের যেসব গান জনপ্রিয়তার শীর্ষে এর মধ্যে রয়েছে, ‘এই মন তোমাকে দিলাম’, ‘তুমি বড় ভাগ্যবতী’, ‘মনেরই রঙে রাঙাবো’, ‘একবার যেতে দে না’, ‘ও আমার রসিয়া বন্ধু রে’, ‘এই পৃথিবীর পরে’, ‘আমার হৃদয়ের আয়না’, ‘তুমি যে আমার কবিতা’, ‘আমি রজনীগন্ধা ফুলের মতো’, ‘বাবা বলে গেলো’, ‘একি সোনার আলোয়’, ‘কতো সাধনায় এমন ভাগ্য মেলে’, ‘ও মাঝি নাও ছাইড়া দে’সহ আরও অনেক গান।
সাবিনা ইয়াসমিন ১৯৭৫ সালে ‘সুজন সখী’ সিনেমায় গান গাওয়ার জন্য প্রথম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছিলেন। এখন পর্যন্ত তিনি ১৪বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন।
শুধু চলচ্চিত্র পুরস্কার নয়, সাবিনা ইয়াসমিন বাংলা সংগীতে অসামান্য অবদান রাখায় একুশে পদক ও স্বাধীনতা পুরস্কার লাভ করেছেন। আজ এই খ্যাতিমান শিল্পীর জন্মদিনে রইলো শুভেচ্ছা ও শুভকামনা।
এসি/ আই.কে.জে