শুক্রবার, ৫ই জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২১শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আফগানদের গুঁড়িয়ে বিশ্বকাপ শুরু বাংলাদেশের

স্পোর্টস ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০৫:০৩ অপরাহ্ন, ৭ই অক্টোবর ২০২৩

#

মাঠ আর মাঠের বাইরের সব বিতর্ক পারফরম্যান্স দিয়ে উড়িয়ে দিয়েছে টাইগাররা। বিশ্বকাপের আসরে নিজেদের প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানকে হারিয়ে ভারত মিশনের শুরুটা রাঙাল সাকিব আল হাসানের দল। প্রতিপক্ষ অপেক্ষাকৃত দুর্বল ছিলো বটে,  তবে এই ম্যাচটা নিয়ে বড় ভয় ছিল বাংলাদেশের। একে তো বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচ। তার ওপর আফগানিস্তানের বোলিং আক্রমণ বরাবরই দুশ্চিন্তার কারণ ছিলো।

শনিবার (৭ অক্টোবর) ধর্মশালার হিমাচল প্রদেশ ক্রিকেট এসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে টস হেরে আগে ব্যাটিং করতে নেমে ৩৭ ওভার ২ বলে ১৫৬ রান তুলে অলআউট হয় আফগানিস্তান। সর্বোচ্চ ৪৭ রান এসেছে রহমানুল্লাহ গুরবাজের ব্যাট থেকে। ৩টি করে উইকেট শিকার করেছেন মেহেদি হাসান মিরাজ ও সাকিব আল হাসান। জবাবে খেলতে নেমে ৩৪ ওভার ৪ বলে ৬ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। টাইগারদের হয়ে হাফ সেঞ্চুরি পেয়েছেন মিরাজ ও নাজমুল হোসেন শান্ত।

রশিদ খান, মুজিব উর রহমান, মোহাম্মদ নবি, ফজলহক ফারুকি-আফগানদের এই বোলিং লাইনআপ যে যেকোনো দলকেই ধসিয়ে দিতে পারে যে কোনো দিন।

তবে বাংলাদেশকে চমকে দিতে পারলো না আফগানিস্তান। বরং শক্তিমত্তার পার্থক্য বুঝিয়ে দুর্দান্ত জয়েই বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করলো সাকিব আল হাসানের দল, আফগানিস্তানকে তারা হারালো ৯৯ বল আর ৬ উইকেট হাতে রেখে।

ধর্মশালার হিমাচল প্রদেশ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বোলাররাই অর্ধেক কাজ সেরে রেখেছিলেন। সাকিব-মিরাজদের দুর্দান্ত বোলিংয়ে ১৫৬ রানে গুটিয়ে যায় আফগানিস্তান।

যদিও ১৫৭ তাড়া করতে নেমে শুরুতে ধাক্কা খেয়েছিল বাংলাদেশও। ২৭ রানের মধ্যে হারিয়ে বসেছিল ২ উইকেট। তবে মেহেদি হাসান মিরাজ আর নাজমুল হোসেন শান্ত মিলে সহজ জয়ের পথ গড়ে দিয়েছেন টাইগারদের।

মিরাজকে এখন টপঅর্ডার ব্যাটার বলাই যায়। একবার-দুইবার নয়, যতবারই ওপরের দিকে ব্যাটিং করার সুযোগ পাচ্ছেন ততবারই নিজেকে জেনুইন ব্যাটার হিসেবে প্রমাণ করছেন এই অলরাউন্ডার।

আজ তিন নম্বরে নেমেও সফল মিরাজ। ১৯ রানে দলের প্রথম উইকেট পড়ার পর ক্রিজে এসেছিলেন। ২৭ রানে দ্বিতীয় উইকেটের পতনও দেখেছেন।

আরো পড়ুন: ১৫৬ রানেই আফগানিস্তানকে অলআউট করলো সাকিব-মিরাজরা

তবে দলকে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়তে দেননি মিরাজ। নাজমুল হোসেন শান্তকে সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশকে সহজ জয়ের পথ গড়ে দেন এই অলরাউন্ডার। তৃতীয় উইকেটে ১২৯ বলে তারা গড়েন ৯৭ রানের জুটি।

মিরাজ তুলে নেন ক্যারিয়ারের তৃতীয় ওয়ানডে হাফসেঞ্চুরি। শেষ পর্যন্ত তার ইনিংসটি থামে নাভিন উল হকের বলে রহমত শাহর দুর্দান্ত এক হাতের ক্যাচ হয়ে। ৭৩ বলে ৫ বাউন্ডারিতে ৫৭ করেন মিরাজ।

জয় থেকে ১১ রান দূরে থাকতে সাকিব আল হাসান উইকেট বিলিয়ে দিয়ে আসেন। আজমতউল্লাহ ওমরজাইকে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে বাউন্ডারিতে ক্যাচ হন টাইগার অধিনায়ক (১৯ বলে ১৪)।

তবে শান্ত ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ হাফসেঞ্চুরি তুলে নিতে ভুল করেননি। দেখেশুনে খেলে ৮০ বলে ফিফটি পূরণ করেন বাঁহাতি এই ব্যাটার। শেষ পর্যন্ত তিনি অপরাজিত থাকেন ৮৩ বলে ৩ চার আর ১ ছক্কায় ৫৯ রানে। 

নাভিন উল হককে টানা দুই বাউন্ডারি হাঁকিয়ে জয়ও আসে শান্তর ব্যাট থেকে। ২ রানে অপরাজিত থাকেন মুশফিকুর রহিম।

১৫৭ রানের মামুলি লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই বিপদে পড়েছিল বাংলাদেশ। ২৭ রানেই দুই উইকেট হারিয়ে বসেছিল টাইগাররা। 

তবে এর মধ্যে দুর্ভাগ্যের শিকার হলেন ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম। একটি রান নেয়ার চেষ্টা করতে গিয়ে নজিবুল্লাহ জাদরানের সরাসরি থ্রোয়ে রানআউট হয়ে যান তানজিদ তামিম। ১৩ বলে ৫ রান নিয়ে ব্যাট করছিলেন তিনি তখন। দলীয় রান ছিল ১৯। 

লিটন দাসের ওপর প্রত্যাশা ছিল অনেক। কিন্তু তিনিও ব্যর্থ হলেন। ইনিংসের সপ্তম ওভারের ৪র্থ বলে ফজল হক ফারুকির বলে বোল্ড হয়ে গেলেন। কভার অঞ্চল দিয়ে মারার জন্য শট খেললেন। কিন্তু বল ভেতরের কানায় লেগে গিয়ে হিট করলো স্ট্যাম্পে। বোল্ড হয়ে গেলেন তিনি। দলীয় রান এ সময় ২৭।

এরপর জুটি বেঁধেছেন নাজমুল হোসেন শান্ত এবং মেহেদি হাসান মিরাজ। মিরাজ অবশ্য ফিফটি করার পথে ১৬ রানে একবার জীবন পেয়েছিলেন। পয়েন্টে তার ক্যাচ ছেড়েছিলেন মোহাম্মদ নবি। এজন্যই বোধ হয় বলে, সৌভাগ্য সবসময় সাহসীদের পক্ষেই থাকে।

এসকে/ 

আফগানিস্তান ক্রিকেট বিশ্বকাপ জয়

খবরটি শেয়ার করুন