সোমবার, ৮ই জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২৩শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইমরান খান গ্রেফতার

আল কাদির ট্রাস্ট মামলা কী?

ডেস্ক নিউজ

🕒 প্রকাশ: ০৩:৪৮ অপরাহ্ন, ১০ই মে ২০২৩

#

ছবি: সংগৃহীত

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান ইমরান খানকে গ্রেফতার করেছে দেশটির আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। মঙ্গলবার (৯ মে) বিকেলে ইসলামাবাদ হাইকোর্টে আল-কাদির ট্রাস্ট মামলাসহ বেশ কয়েকটি মামলায় জামিন চাইতে যাওয়ার সময় আদালত প্রাঙ্গণ থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। খবর আল-জাজিরার।

দেশটির ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টেবিলিটি ব্যুরো (এনএবি) মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে 'আল-কাদির ট্রাস্ট দুর্নীতির' অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে। পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ খান জানিয়েছেন, পিটিআই নেতা ইমরান খানকে দুর্নীতি দমন সংস্থার মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে।

এক টুইট বার্তায় পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'অসংখ্য নোটিশ দেওয়া সত্ত্বেও তিনি (ইমরান খান) মামলার শুনানিতে উপস্থিত হননি। সরকারি কোষাগারের হিসাব ভুল ভাবে হিসাব করার অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করে এনএবি। কিন্তু তার প্রতি কোনো অবিচার করা হয়নি।'

আল-কাদির ইউনিভার্সিটি ট্রাস্ট মামলায় গত বছরের জুনে গ্রেফতার হন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। সে সময় এক পাকিস্তানি টাইকুন মালিক রিয়াজ একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্মাণের জন্য ইমরান খান ও তার স্ত্রীর ট্রাস্টে কয়েক কোটি টাকার জমি দান করেন।

এনএবি জানিয়েছে, ট্রাস্টের মাধ্যমে অর্থ লেনদেন করে রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী ২৩৯ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছেন। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে রিয়াজ 'কালো টাকার' তদন্তের সময় যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সির কাছে ২৩৯ মিলিয়ন ডলার মূল্যের সম্পদ হস্তান্তর করতে সম্মত হন।

তবে ওই সময় ইমরান খান ও পিটিআই সরকার সরাসরি ওই মামলায় জড়িত ছিল না। ইমরান খানের আইনজীবী আবুজা সালমান নিয়াজি মন্তব্য করেছেন, তাকে গ্রেফতার করতে অবৈধ পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছিল। সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে গ্রেফতারের জন্য গত বছর আইনটি সংশোধন করা হয়।

তিনি আরও জানান, নতুন সংশোধনী অনুযায়ী অভিযুক্তকে একাধিকবার নোটিশ দিতে হবে। তবে তিনি যদি আইনি প্রক্রিয়ায় সহযোগিতা করতে ব্যর্থ হন বা ইচ্ছাকৃতভাবে গ্রেফতার এড়াতে চেষ্টা করেন তবে কেবল তার নামে সমন জারি করা হবে।

নিয়াজি বলেন, 'এনএবি চেয়ারম্যান যে কোনো অভিযুক্তকে গ্রেফতার করার জন্য বিচক্ষণ ক্ষমতা প্রয়োগ করতেন, তবে আইনের নতুন সংশোধনীর পরে তার আর তা করার ক্ষমতা নেই।' এনএবির সাবেক প্রসিকিউটর ইমরান শফিকও নিয়াজির সুরে কথা বলেছেন।

তিনি বলেন, 'বারবার নোটিশ দেওয়া সত্ত্বেও অনুপস্থিত থাকলে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা যেতে পারে। তবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী (ইমরান খান) এর ক্ষেত্রে তার 'স্পষ্ট ঘাটতি রয়েছে।'

প্রসিকিউটর শফিক জানান, ইমরান খান বারবার এনএবির নোটিশ প্রত্যাখ্যান করেছেন তবে আইনের নতুন সংশোধনী অনুসারে তাকে গ্রেফতার করা যাবে না। গ্রেফতারের আগে সমন জারির বিষয়ে এনএবিকে অবশ্যই অভিযুক্তকে অবহিত করতে হবে। তাছাড়া, নতুন সংশোধনীর ফলে অভিযুক্তদের জামিন পাওয়াও সহজ হয়েছে।

আরো পড়ুন: ইমরানের উপস্থিতিতে শত্রুর প্রয়োজন নেই: শেহবাজ শরিফ

লাহোর ভিত্তিক আইনজীবী আসাদ রহিম খান বলেন, 'ইমরান খানের গ্রেফতারের সঙ্গে আইনের কোনো সম্পর্ক নেই। বরং ভয় ও নিপীড়নের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক রয়েছে।' ২০২৩ সালের এপ্রিলে পাকিস্তানের পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর ইমরান খানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, সন্ত্রাসবাদ ও ধর্মবিরোধী মন্তব্যের জন্য শত শত মামলা হয়েছে।

তবে ইমরান খান তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগকে 'রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত' বলে অস্বীকার করে আসছেন। তিনি অভিযোগ করেন, পাকিস্তানের অন্য সব রাজনৈতিক দল সেনাপ্রধানকে ক্ষমতা থেকে অপসারণের ষড়যন্ত্র করেছে। তাকে ক্ষমতা থেকে অপসারণের পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের হাত রয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।

এম এইচ ডি/

পাকিস্তান মামলা গ্রেফতার ইমরান খান

খবরটি শেয়ার করুন