বুধবার, ৩রা জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
১৮ই আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

উপকূলীয় এলাকার আশ্রয়কেন্দ্রগুলো কতটা আশ্রয়ের উপযুক্ত?

নিউজ ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০১:৩০ অপরাহ্ন, ১৫ই মে ২০২৩

#

ছবি: সংগৃহীত

ঘূর্ণিঝড় মোখা উপকূলীয় এলাকায় তাণ্ডব চালানোর পর একটি প্রশ্ন নতুন করে সামনে এসেছে। উপকূলীয় এলাকার আশ্রয়কেন্দ্রগুলো আসলেই কি আশ্রয়ের উপযুক্ত? অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল হলেও দুর্যোগকালে কক্সবাজার উপকূলের প্রায় সাড়ে ১০ লাখ মানুষের ভরসাস্থল হিসেবে আছে ৫৭৬টি আশ্রয়কেন্দ্র। কিন্তু সেসব আশ্রয়কেন্দ্রের কোনোটির দরজা-জানালা নেই, শৌচাগারের অবস্থা নাজুক, সিঁড়িগুলো ভাঙা, পলেস্তারা খসে পড়ছে। আবার সন্ধ্যা নামলেই আশ্রয়কেন্দ্রগুলো মাদকসেবী ও অপরাধীদের আস্তানায় পরিণত হয়। কোনো কোনো আশ্রয়কেন্দ্র স্থানীয় প্রভাবশালীরা দখল করে সেখানে ঘর-সংসার করছেন বলেও অভিযোগ আছে। কিন্তু সাগরে দুর্যোগ সৃষ্টি হলেই প্রশাসন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায় তোড়জোড় শুরু করে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি।

কক্সবাজার জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যালয়ের তথ্য বলছে, উপকূলীয় অঞ্চলে ৫৭৬টি আশ্রয়কেন্দ্রের প্রতিটিতে গড়ে ৯০০ মানুষ আশ্রয় নিতে পারে। তবে সরকারি হিসাবের সঙ্গে স্থানীয় তথ্যের রয়েছে ব্যাপক গরমিল। একাধিক জনপ্রতিনিধির মতে, জরাজীর্ণ এসব আশ্রয়কেন্দ্রের প্রতিটিতে দেড়-দুইশ’র বেশি মানুষ আশ্রয় নিতে পারেন না। এছাড়া কুতুবদিয়া, মহেশখালী, পেকুয়া, চকরিয়ায় শতাধিক আশ্রয়কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ। সংস্কার না করে উলটো বেশ কয়েকটি আশ্রয়কেন্দ্রকে পরিত্যক্তও ঘোষণা করা হয়েছে। যেসব আশ্রয়কেন্দ্র স্থানীয় প্রভাবশালীদের দখলে। মাঝেমধ্যে তাদের উচ্ছেদ করলেও পুনরায় তারা ফিরে আসে। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোর যেমন বেহাল দশা, তেমনই অনেক আশ্রয়কেন্দ্রের সংযোগ সড়কও নেই।

স্থানীয় কর্তৃপক্ষ অবশ্য বলছে, আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রভাবশালীদের দখলে থাকার বিষয়টি দুঃখজনক ও নিন্দনীয়। তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, তাদের চোখের সামনে বছরের পর বছর কীভাবে আশ্রয়কেন্দ্রগুলো দখলে থাকে কিংবা রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে? এসব আশ্রয়কেন্দ্র রক্ষণাবেক্ষণের জন্য যে বাজেট বরাদ্দ থাকে তা যায় কোথায়? এমনিতে দুর্যোগকালীন ছাড়া সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে নির্মিত এসব আশ্রয়কেন্দ্র স্কুল কিংবা হাসপাতাল হিসাবে ব্যবহার করলে স্থানীয়রা এসব অবকাঠামো থেকে সুবিধা পেতে পারে। এমন উদ্যোগ নেওয়াও হয়। কিন্তু কর্তৃপক্ষের সুষ্ঠু নজরদারির অভাবে উপকূলের মানুষকে নিরাপদে রাখার উদ্দেশ্যে নির্মিত এসব আশ্রয়কেন্দ্রই থাকে ঝুঁকির মধ্যে। 

কাজেই উপকূলে থাকা আশ্রয়কেন্দ্রগুলোর রক্ষণাবেক্ষণে নজরদারি বাড়াতে হবে। উপকূলীয় মানুষের সংখ্যা বিবেচনায় নতুন নতুন আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করতে হবে। উপকূলীয় মানুষের প্রাণের ঝুঁকি কমাতে কর্তৃপক্ষ আরও আন্তরিক হবে-এমনটাই প্রত্যাশা।

উপকূলীয় এলাকার আশ্রয়কেন্দ্রগুলো কতটা আশ্রয়ের উপযুক্ত?

খবরটি শেয়ার করুন