ছবি : সংগৃহীত
শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রকে সবাই এসি নামেই চেনেন। নামের সঙ্গের এই কার্যক্ষমতা লুকিয়ে আছে। শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা হচ্ছে একটি কক্ষের হচ্ছে অভ্যন্তরীণ বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে আরামদায়ক পরিবেশ তৈরি। অর্থাৎ শীতলীকরণ, তাপমাত্রা বৃদ্ধি, বাতাসের গতি নিয়ন্ত্রণ ও বিশুদ্ধতা নিশ্চিতকরণই শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের কাজ। যাদের বাসা-বাড়িতে এসি আছে, তাদের অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগে— এসি থেকেও কি গরম বাতাস পাওয়া সম্ভব?
দেশের শীতের তীব্রতা যতই বাড়ছে, সাধারণের মনে এই প্রশ্নটা ঘুরপাক খাচ্ছে। কেননা, এয়ার কন্ডিশনার (এসি), যা গ্রীষ্মে তাপমাত্রা
এসি কি ঘর গরম করতে পারে?
বাজারে বিক্রি হওয়া সাধারণ এসি ঘর ঠান্ডা করার জন্য তৈরি করা হয়, ঘর গরম করার জন্য নয়। এসি গরম বাতাস শোষণ করে এবং এর ভেতরে ইনস্টল করা রেফ্রিজারেন্ট এবং কয়েল দিয়ে প্রক্রিয়াকরণের পরে ঠান্ডা বাতাস নিক্ষেপ করে, যা ঘরের পরিবেশকে শীতল করে।
সাধারণ এসি রুম গরম করতে পারে না, কারণ তারা শুধুমাত্র ঘরের তাপমাত্রা কমিয়ে আনতে পারে। তখনই ঘর গরম হতে পারে, যদি কেউ হট অ্যান্ড কোল্ড এসি চালান, যা উভয় ঋতুতে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।
এটি আরও সহজ উপায়ে বোঝানো যাক। ধরা যাক, কারও ঘরের তাপমাত্রা ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং তিনি তাঁর ঘরের এসি ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সেট করেছেন। এক্ষেত্রে সেই এসির কম্প্রেসার কাজ শুরু করবে এবং ঘর থেকে গরম বাতাস বের করে দেবে। এই কারণে, ঘরের তাপমাত্রা ধীরে ধীরে কমতে শুরু করবে এবং একবার এটি ২৫ ডিগ্রিতে পৌঁছালে, থার্মোস্ট্যাটের সাহায্যে কম্প্রেসার স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যাবে। এক্ষেত্রে শুধু এসি ফ্যানই কাজ করবে। তারপর তাপমাত্রা ২৫ ডিগ্রির উপরে উঠলে কম্প্রেসার এটিকে ২৫ ডিগ্রিতে নামিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু করবে।
আরো পড়ুন : পাঠাও চালু করল ‘সেফটি কভারেজ’ ইন্সুরেন্স
এসি হয়ে যাবে টেবিল ফ্যান
এবার আমরা যদি শীতের কথা বলি, তাহলে ধরা যাক ঘরের তাপমাত্রা ১২ ডিগ্রি এবং ঘরের এসি ৩০ ডিগ্রিতে সেট করা হয়েছে। তাহলে এমন পরিস্থিতিতে এসি কম্প্রেসার চালু হবে না এবং কেবল এসি ফ্যানটি কাজ করবে। এর কারণ হল ঘরের তাপমাত্রা ইতিমধ্যে ৩০ ডিগ্রির নিচে। এখন এটি ঠিক টেবিল ফ্যানের মতো কাজ করবে। এমন পরিস্থিতিতে, সেই ঘর গরম হওয়ার পরিবর্তে ঠান্ডা অনুভব করতে শুরু করবে। অর্থাৎ হিটিং পাম্প ছাড়া এসি ঘরকে গরম করতে পারে না।
হট অ্যান্ড কোল্ড এসি
যদি শীতকালে এসির উষ্ণ বাতাস উপভোগ করতে চান কেউ, তবে এর জন্য তাকে হট অ্যান্ড কোল্ড এসি কিনতে হবে। এই এসি শীত ও গ্রীষ্ম উভয় ঋতুতেই কাজ করে। এটি উভয় ঋতুতে ব্যবহার করার উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছে। হট অ্যান্ড কোল্ড এসি এসির ক্ষমতা ১.৫ টন। এই সময়ে বাজারে অনেক ভালো হট অ্যান্ড কোল্ড এসি এসি পাওয়া যায়। এগুলোর দাম ৩৫ থেকে ৪৫ হাজারের মধ্যে।
এমনই একটি এসি বিক্রি করে এলজি। এলজির এই হট অ্যান্ড কোল্ড ইনভার্টার স্প্লিট এসি অনেক স্মার্ট ফিচার দিয়ে সজ্জিত। এটি গ্রীষ্ম ও শীত উভয় মরশুমেই ব্যবহার করা যায়। এটির ক্ষমতা ১.৫ টন। এটি হট এবং কোল্ড এসি ডুয়াল রোটারি মোটরসহ পাওয়া যায়।
এছাড়াও লয়েডের হট অ্যান্ড কোল্ড ইনভার্টার স্প্লিট এসিও একটি ভালো বিকল্প। এই এসি ১০ ধাপের ইনভার্টার প্রযুক্তিতে সজ্জিত। এর এসি ইউনিটে কপার কয়েল কনডেন্সার ব্যবহার করা হয়েছে।
হট এন্ড কুলিং টেকনোলজি ফিচার রয়েছে এমন এসি তৈরি করছে স্যামসাং, প্যানাসনিক, ট্রান্সটেক, ওয়ার্লপুল এবং হিটাচির মতো বড় কোম্পানিগুলো।
তাই আপনি যদি সাধারণ এসিতে গরম বাতাস চান তবে পাবেন না। এক্ষেত্রে আপনাকে উন্নত প্রযুক্তির হট অ্যান্ড কুলড ফিচারের এসি কিনতে হবে।
এস/ এসি
খবরটি শেয়ার করুন