শুক্রবার, ৫ই জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২১শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

১০ শতাংশ ওজন কমাতে পারলেই দূর হবে বন্ধ্যাত্ব

স্বাস্থ্য ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০১:৪২ অপরাহ্ন, ৩০শে সেপ্টেম্বর ২০২৩

#

ছবি-সংগৃহীত

পলিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোমে (পিসিওএস) আক্রান্তদের নিয়মিত শরীর চর্চার মাধ্যমে ওজন কমাতে পারলে বন্ধ্যাত্বের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

তারা বলছেন, এই রোগে আক্রান্তরা যদি তাদের ওজন পাঁচ শতাংশ কমাতে পারে, তাহলে নিয়মিত পিরিয়ড শুরু হতে পারে। আর ওজন ১০ শতাংশ কমাতে পারলে ডিম্বাশয়ের কার্যক্রম স্বাভাবিক হবে এবং বন্ধ্যাত্বের সমস্যা দূর হবে। সম্প্রতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) গর্ভধারণে জটিলতা বিষয়ক পলিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম সচেতনতা মাস উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব তথ্য জানান।

বক্তারা বলেন, যেসব নারী সন্তান ধারণের ক্ষেত্রে জটিলতা, দীর্ঘ সূত্রিতায় ভুগছেন তাদের মধ্যে একটি রোগ হলো পলিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম। এই রোগ প্রতিরোধে সুষম খাবারসহ প্রচুর পানি বা মিষ্টিহীন জলীয় খাদ্য গ্রহণ করতে হবে।

নির্ধারিত সময়ই প্রতিদিনের খাবার গ্রহণ করা জরুরি। একইসঙ্গে ডায়াবেটিস প্রতিরোধ বা নিয়ন্ত্রণ, উচ্চ রক্তচাপ কমানো, চর্বিতে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমানোর মাধ্যমে পিসিওএস প্রতিরোধ করা সম্ভব।

তারা বলেন, পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম প্রজননক্ষম মহিলাদের একটি অন্যতম প্রধান হরমোন ও বিপাকজনিত সমস্যা। প্রতি ১০ জন নারীর একজন এ সমস্যায় আক্রান্ত হচ্ছেন। মাসিক শুরু হওয়ার পর কিশোর বয়স থেকেই এর লক্ষণগুলো প্রকাশ পেতে শুরু করে।

গবেষণা প্রবন্ধে বলা হয়, হরমোনজনিত এ রোগে আক্রান্ত নারীদের ওজন বৃদ্ধি পাওয়াসহ বিভিন্ন অংশে অপ্রয়োজনীয় চুল গজানো, প্রতিনিয়ত চুল পড়া বা চুলের ঘনত্ব হালকা হতে থাকা, ত্বক অতিরিক্ত তেলতেলে হওয়া বা ব্রণ হওয়া, শরীরের বিভিন্ন অংশের ত্বক কালো হয়ে যেতে থাকে।

যেমন হাত কিংবা স্তনের নিচের ত্বকে, গলার পেছনের অংশে, কুঁচকিতে কালো দাগ, ঘুমে সমস্যা হওয়া, সারাক্ষণ দুর্বলতা অনুভব করা, মাথাব্যথা, অনিয়মিত পিরিয়ড (মাসিক) হওয়া, পিরিয়ডকালীন অতিরিক্ত রক্ত যাওয়ার ফলে গর্ভধারণে সমস্যার সৃষ্টি হওয়া ইত্যাদি।

প্রবন্ধে আরও বলা হয়, এই রোগে নারীদের গর্ভধারণে জটিলতা, ডায়াবেটিস, মেটাবোলিক সিনড্রোম যেমন হৃদনালি সংক্রান্ত রোগে আক্রান্ত হওয়া, রক্তে ট্রাইগ্লিসারাইড, কোলেস্টেরল বেড়ে যাওয়া, রক্তচাপ বাড়া, বিষণ্ণতা অনুভব করা, জরায়ু থেকে রক্তপাত হওয়া, তল পেটে তীব্র ব্যথা হওয়া ও যকৃতে প্রদাহ হতে পারে।

“ক্ষমতাপ্রাপ্ত রোগী, ভালো ফলাফল” স্লোগানকে সামনে রেখে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের রিপ্রোডাক্টিভ অ্যান্ডোক্রাইনোলজি অ্যান্ড ইনফাটিলিটি বিভাগের আয়োজনে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ।

এসময় শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, দেশের রোগীরা যেসব ব্যয়বহুল রোগের চিকিৎসার জন্য বিদেশে যায় তার মধ্যে নারীদের বন্ধ্যাত্ব অন্যতম। এর ফলে দেশের মুদ্রা বিদেশে চলে যায়। ইতোমধ্যেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের রিপ্রোডাক্টিভ অ্যান্ডোক্রাইনোলজি অ্যান্ড ইনফাটিলিটি বিভাগে পুরুষ ও নারীদের বন্ধ্যাত্ব রোগের উন্নত চিকিৎসা সেবা শুরু হয়েছে।

আরো পড়ুন: শিশুদের ডেঙ্গু নিয়ে ভয় না পাওয়ার পরামর্শ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের

অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রিপ্রোডাক্টিভ অ্যান্ডোক্রাইনোলজি অ্যান্ড ইনফাটিলিটি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. জেসমিন বানু, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. শাকিলা ইসরাত, ডা. ফারজানা দীবা, ডা. নূরজাহান বেগম, ডা. শাহীন আরা আনওয়ারী প্রমুখ। এছাড়াও বিভিন্ন স্তরের শিক্ষক, চিকিৎসক, রেসিডেন্ট, কর্মকর্তা নার্স ও কর্মচারীরা অংশ নেন।

এসি/ আই. কে. জে/ 

ওজন বন্ধ্যাত্ব

খবরটি শেয়ার করুন