ছবি: সংগৃহীত
চলতে চলতে জীবন কোথায় গিয়ে যেন থেমে যায়। শত চেষ্টা করেও কেটে যাওয়া সুর মেলানো যায় না। ঘুম-কাজ-খাওয়া-ঘুম একই চক্রে চলতে থাকে দৈনন্দিন জীবন। তখন মনে হয় সামনে এগিয়ে যেতে একটা পরিবর্তন জরুরি। নিজেকে নতুন করে সাজানো উচিত।
আপনি কি নিজের জীবন নতুন করে সাজাবেন ভাবছেন? এমন ভাবনা কিন্তু মন্দ কিছু নয়। বরং জীবনের ছোটখাটো কিছু পরিবর্তন বড় সুফল বয়ে আনে। কয়েকটি অভ্যাস বাদ দেওয়ার মাধ্যমে খুব সহজেই জীবন পরিবর্তন করা যায়। এই আচরণগুলোকে বিদায় জানিয়ে, আপনি ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটাতে পারেন। যা আপনার জীবনকে করে দেবে পরিপূর্ণ। সফলতা হবে সঙ্গী।
>> গড়িমসি করা-
এই কাজ আমরা সবাই করি। আরেকটু সহজ করে বলতে যাকে আলসেমি বলে। সাধারণত মানুষ দুই সময়ে গড়িমসি করে। যখন করার মতো কোনো কাজ হাতে থাকে না। আর যখন একসঙ্গে অনেকগুলো কাজ হাতে থাকে। কথা হলো, কোনো কাজ করার ক্ষেত্রে আলসেমি করলে তা একসময় স্ট্রেস বাড়িয়ে দেয়। অগ্রগতির পথে বাধা সৃষ্টি করে।
আজ থেকে গা ঝাড়া দিয়ে কাজ শুরু করুন। কোনো কাজ ফেলে রাখবেন না। অনেকগুলো কাজ হলে কখন কোনটি করবেন তা আগেই পরিকল্পনা অনুযায়ী গুছিয়ে নিন। জীবনের প্রয়োজনে হয়তো এমন কাজও আপনাকে করতে হবে যা আপনার পছন্দ নয়। তবুও থেমে গেলে চলবে না।
>> নিজেকে নিয়ে নেতিবাচক ভাবনা-
আরেকটি অভ্যাস যা আমরা বেশিরভাগ মানুষই এড়াতে পারি না। ‘এ কাজ আমাকে দিয়ে হবে না’, ‘ওরে বাবা, অনেক কঠিন কাজ’, ‘এটা তো অসম্ভব’, ‘কেউ আমার কথা শুনবে না’, ‘আমি পারবো না’— রোজই কি নিজে নিজে এই কথাগুলো বলেন? মনে রাখবেন, নিজেকে নিয়ে নেতিবাচক ভাবনা কেবল হতাশাই দিতে পারে।
এই অভ্যাস আজই ছাড়ুন। আত্মসমালোচনা বাদ দিন। আত্মসম্মানকে গুরুত্ব দিন। নিজের ওপর বিশ্বাস রেখে এগিয়ে যান, জয় হবেই।
>> হেরে যাওয়ার ভয়-
হ্যাঁ এটা সত্য যে হার জিত জীবনেরই অংশ। জীবনে মানুষ বহুবার হেরে যায়। আবার নতুন করে ঘুরে দাঁড়ায়। হেরে যাওয়ার ভয় জীবন থেকে বাদ দিন। ব্যর্থতার সম্ভাবনাকে শেখার সুযোগ হিসাবে দেখার চেষ্টা করুন। মানুষ ভুল করতে করতেই শেখে। এটি জীবনের স্বাভাবিক অংশ হিসেবে গ্রহণ করুন।
>> অন্যের সঙ্গে তুলনা-
ক্রমাগত অন্যের সঙ্গে তুলনা আপনার আত্মসম্মান আর আত্মবিশ্বাস কমানোর জন্য যথেষ্ট। মনে রাখবেন, প্রত্যেকেরই আলাদা শক্তি ও দুর্বলতা রয়েছে। নিজের ওপর বিশ্বাস রাখুন। কখনোই অন্যের সঙ্গে নিজের তুলনা করতে যাবেন না। তার পরিবর্তে নিজের জীবনে ফোকাস করার চেষ্টা করুন।
>> অতীতে পড়ে থাকা-
অতীত মানে গত হয়ে যাওয়া। তা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে সেটি ভুলে যাওয়াই ভালো। কিন্তু অনেকে অতীত আঁকড়ে ধরেই বেঁচে থাকতে চান। অতীতের কথা চিন্তা করা; অতীতের ভুল, অনুশোচনা ও ক্ষোভ ধরে রাখা জীবনে চলার পথে বাধা সৃষ্টি করে।
আপনি যদি অগ্রগতি করতে চান, যদি জীবন পরিবর্তন করতে চান, তবে অতীত ভুলে যান যা পরিবর্তন করা যাবে না তা নিয়ে সময় পার করা বোকামি। এর পরিবর্তে, বর্তমানের ওপর ফোকাস করুন এবং এখন যা করছেন তা ভবিষ্যতে কী প্রভাব ফেলবে তা নিয়ে ভাবুন।
>> নেতিবাচক সম্পর্ক-
যদি সত্যিই সিদ্ধান্ত নেন যে জীবনে পরিবর্তন আনবেন তবে নেতিবাচক সব সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসুন। সম্পর্ক পুরোপুরি ছিন্ন করা সম্ভব না হলে অন্তত তাদের সঙ্গে সময় কাটানো কমান। টক্সিক মানুষ থেকে যত দূরে থাকবেন, ততই মঙ্গল। তার চেয়ে বরং যাদের কাজ থেকে উৎসাহ পান, যারা আপনাকে অনুপ্রাণিত করে তাদের সঙ্গে বেশি সময় কাটান।
>> নিজের যত্ন না নেওয়া-
সবার ভালো-মন্দের খোঁজ নিলেও নিজের ব্যাপারে আপনি উদাসীন? শেষ কবে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে মন দিয়ে নিজেকে দেখেছেন মনে করতে পারছেন না? প্রিয় খাবার খাওয়া, পছন্দের সিনেমা দেখা কিছুই করা হয় না? যদি প্রশ্নগুলোর উত্তর হ্যাঁ হয়, তবে নতুন করে ভাবুন। নিজের ভালো চাইতে শিখুন। নিজের শারীরিক, মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নিন।
আরো পড়ুন: সুন্দর দাঁতেই সুন্দর ভাগ্য!
>> অজুহাত দেখানো-
এই কাজটি আমরা প্রায় সবাই করে থাকি। জীবনে পরিবর্তন আনতে চাইলে এই বদ অভ্যাসটিকে বিদায় জানান। অজুহাত দেখানো আপনাকে দায়িত্ব থেকে দূরে রাখবে। যা আপনার জীবনে উন্নতির পথে বাধা হয়ে দাঁড়াবে। তাই অজুহাত না দেখিয়ে কাজের দায়িত্ব নিতে শিখুন।
জীবনে উন্নতি করতে চাইলে কিছুটা চ্যালেঞ্জ নিয়েই এগিয়ে চলতে হবে। আর এই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে প্রয়োজন আত্মবিশ্বাস। নিজেকে ভালোবেসে এগিয়ে চলুন, সফলতা আসবে খুব দ্রুত।
তথ্যসূত্র: হ্যাক স্পিরিট ডট কমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অবলম্বনে
এম এইচ ডি/ আই. কে. জে/
খবরটি শেয়ার করুন