বুধবার, ৩রা জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
১৮ই আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

টবেই জন্মাবে পছন্দের আম, জেনে নিন পদ্ধতি

লাইফস্টাইল ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০১:২১ অপরাহ্ন, ৯ই মে ২০২৩

#

ছবি: সংগৃহীত

গ্রীষ্মকাল চলে এসেছে। এই সময়ে বিভিন্ন গ্রীষ্মকালীন ফল পাওয়া যায়। যার মধ্যে অন্যতম হলো আম। যাকে আমরা ফলের রাজা বলে থাকি। প্রচণ্ড গরম থাকায় মানুষ এ সময় রসিয়ে খান আম। বানান আমের জুস। তবে একবার ভেবে দেখুন তো বাজারের বদলে যদি নিজের বাড়ির টবেই আম গাছে ফলন ফলিয়ে নিতে পারেন তাহলে চমৎকার হতো।

এই সময়ে আকাশে বাতাসে কাঁচা আমের গন্ধ, আমের মুকুল আর আমের সুবাস পাওয়া যায়। কাঁচা আম, পাকা আম, আমের কাস্টার্ড থেকে শুরু করে আমের কেক, আমের ডাল, আমের টক, আমের শরবত, আমের জুস কোথায় নাই আম!

আম পছন্দের একটি ফল। ছোট-বড় সব বয়সের মানুষই আম পছন্দ করেন। পুষ্টিমানের দিক থেকেও আম অন্য কোন ফলের চেয়ে কোন অংশে কম নয়। অনেকে জায়গার অভাবে ইচ্ছা থাকা স্বত্তেও আম চাষ করতে পারেন না। বেছে নেন টবে আম চাষ পদ্ধতি।

কিন্তু আপনার বাগানে কি আম গাছ আছে? এই কথা শুনলে অনেকেই আঁতকে উঠবেন। আম গাছ থাকতে হলে নাকি নিজের বাগান, বড় জায়গা জরুরি। সেক্ষেত্রে নিজের বাসায় বা বাড়ির ছাদে আম গাছ কীভাবে সম্ভব?

এ কথা যারা ভাবছেন, তাদের বরং সময় এসেছে বট গাছের কথা মনে করার। বনসাই হিসেবে বাড়ির ড্রয়িং রুমেও দিব্যি ভালো থাকছে বট গাছ। তা হলে আম গাছই বা নয় কেনো?

এবার বাড়ির টবেই জন্মাবে পছন্দের আম গাছ, আসুন সেই কৌশলটি আজকে জেনে নেই--

>> ​কেমন আম গাছ লাগাবেন বাড়িতে?

বাড়ির ভেতরে কিন্তু সব ধরনের আম গাছ লাগানো যায় না। কোন কোন ধরন এ ক্ষেত্রে ভালো তা জানা প্রয়োজন। ফিলিপাইনের একটি আমের প্রজাতি কারাবাও আম। যা ম্যানিলা আম নামেও পরিচিত। এটি ফিলিপাইনের জাতীয় ফল। এটি অন্যান্য আমের তুলনায় মিষ্টি, রসালো এবং কম কড়া।

খুব কম ফাইবারযুক্ত একটি মিষ্টি এবং সুগন্ধযুক্ত আম হলো দশেরি। কেন্ট প্রজাতি হলো আরও একটি মিষ্টি, রসালো আম যাতে অল্প টকও হয়। কেন্ট আম মূলত ইকুয়েডর, মেক্সিকো এবং পেরু থেকে উদ্ভূত। তবে আমের নানা প্রজাতির মধ্যে ল্যাংড়া আম সবচেয়ে জনপ্রিয়। রসালো, মিষ্টি এই ল্যাংড়ার তুলনা এটি নিজেই।

>> বাড়িতেও আম গাছ--

বসন্তের সময় হলো আম গাছ লাগানোর আদর্শ সময়। এমন মাটির মিশ্রণ তৈরি করুন, যা দ্রুত পানি নিষ্কাশন করতে সক্ষম হয়। এর জন্য কাদামাটি, দোআঁশ এবং বালি মাটি মিশিয়ে আম গাছের মাটি বানান। আপনি যদি চারা থেকে শুরু করেন, তা হলে আমের চারা একটি ছোট পাত্রে লাগান। তা না হলে রুট বল পরিমাপ করে পাত্রের আকার নির্ধারণ করুন।

রুট বল ধরে রাখার জন্য পাত্রটি যথেষ্ট বড় হওয়া উচিত এবং আগামী বছর বা তারও বেশি সময় ধরে শিকড় বাড়ার জন্য জায়গা করে রাখা উচিত। পাত্রে বা টবে মাটির প্রথম স্তর বসানোর আগে এক ইঞ্চি বা তার বেশি মাপের জায়গা জুড়ে নুড়ি বসানোর কথা ভাবতে পারেন। এতে পানি নিষ্কাশন ভালো হয়। পাত্রটি এক তৃতীয়াংশ পূর্ণ হয়ে গেলে এ বার আম গাছে চারা বসিয়ে দিন। প্রত্যেক ১২ থেকে ২৪ মাস অন্তর আম গাছের টব বদলানো উচিত। তা হলে আম গাছ আর বাড়তে পারে না অর্থাৎ রুট বাউন্ড হয়ে যেতে পারে।

>> আম গাছের দরকার প্রচুর পরিমাণে সূর্যের আলো--

ইনডোর ম্যাঙ্গো ট্রির জন্যও আলোর প্রয়োজন। প্রত্যেক দিন প্রায় আট থেকে দশ ঘণ্টা সূর্যালোকের প্রয়োজন হয়। তাই ঘরে আম গাছ রাখলে পশ্চিমমুখী এবং দক্ষিণমুখী জানালার ধারেই রাখুন আম গাছের টব। টব বেশি ভারী না হলে প্রয়োজনে বারান্দাতে নিয়ে গিয়েও গাছে রোদ লাগিয়ে আনতে পারেন। আম গাছের সারের ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন হওয়া জরুরি। আম গাছের বেশি বেশি পানি প্রয়োজন। তাই প্রতিদিন পানি দেবেন।

আরো পড়ুন: এই গরমে বেশি বেশি পান করুন কাঁচা আমের শরবত

>> বাড়ির অভ্যন্তরে আম গাছের নিয়মিত ছাঁটাই জরুরি--

ইনডোর আম গাছ ছাঁটাই করা খুবই জরুরি। ইনডোর আম গাছ ছাঁটাই করার দু’টি প্রধান কারণ রয়েছে। প্রথমটি হলো গাছকে সাধারণভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা, আম গাছ ভালো আকারে রাখা। আম গাছ ছাঁটাই করার দ্বিতীয় কারণ হলো প্রাকৃতিকভাবে গাছের চেয়ে তার গড়ন বা বৃদ্ধি ছোট রাখা। এর ছাঁটাইয়ের প্রক্রিয়ার জন্য ভাঙা বা মরে যাওয়া শাখাগুলি ধারালো, পরিষ্কার হ্যান্ড প্রুনার দিয়ে ছেঁটে ফেলুন।

>> গাছ ছোট রাখতে--

আপনি যদি আপনার আম গাছকে ছোট রাখতে চান, তা হলে গাছের ওপরের অংশগুলিকে ছিঁড়ে ফেলুন। এটা খেয়াল রাখবেন, আম গাছে ওপরের অংশ ক্রমাগত ছেঁটে দিলে সেই গাছ আর ওপরের দিকে বাড়বে না, বরং তার পরিবর্তে পাশের দিকে বাড়বে। যদি গাছটি ওপরের দিকে শাখা হতে শুরু করে, তা হলে ওপরের অংশটি আবার ছাঁটাই করুন।

তাহলে আর দেরি কীসের? অপেক্ষা না করে এবারই লাগিয়ে ফেলুন টবে আম গাছ। আমের মুকুলের সুবাসে তারপর ভরে উঠুক আপনার বসতঘর।

এম এইচ ডি/

টব আম গাছ

খবরটি শেয়ার করুন