ছবি: সংগৃহীত
কথায় বলে, দাঁত থাকতে দাঁতের মর্ম মানুষ বোঝে না। কথাটি কিন্তু খুব একটা ভুল নয়। শরীরের অন্যান্য অঙ্গ নিয়ে মানুষ কম-বেশি সচেতন থাকলেও দাঁতের ব্যাপারে যেন উদাসীন থাকেন। একমাত্র দাঁতে কোনো ব্যথা হলে বা সমস্যা দেখা দিলে বেশিরভাগ মানুষই চিকিৎসকের কাছে যান না।
দন্ত চিকিৎসকদের মতে, প্রতি ছয় মাস অন্তর একবার করে দাঁত চেকআপ করানো উচিত। এতে কোনো সমস্যা থাকলে তা প্রাথমিক অবস্থায় ধরা পড়ে। দাঁতের যে সমস্যাগুলো সবচেয়ে বেশি দেখা যায় তার মধ্যে অন্যতম হলো শিরশিরানি বা সংবেদনশীলতা। গরম, ঠান্ডা পানীয় থেকে শুরু করে অ্যাসিড জাতীয় খাবার থেকেও এই অস্বস্তি হতে পারে।
দাঁতের শিরশিরানি কেন হয়?
দন্ত চিকিৎসকদের মতে, শিরশিরানি আসলে একরকম ব্যথা। কারো ক্ষেত্রে সংবেদনশীলতা বেশি, কারও ক্ষেত্রে কম হয়। দাঁতের একেবারে বাইরের আস্তরণকে বলা হয় এনামেল। এটি দাঁতের ক্রাউনকে ঢেকে রাখে। এনামেলে ক্ষতি হলে স্নায়ু উন্মুক্ত হয়ে যায়। ফলে দাঁত সংবেদনশীল হয়।
এনামেল ক্ষয় হয় কেন?
ক্যাভিটির কারণে এনামেল ক্ষয়ে গেলে শিরশিরানি সৃষ্টি হতে পারে। তীব্র শিরশিরানি দেখা দেয় ব্যথা। ৬০ শতাংশ লোকের ক্ষেত্রে দাঁতের গর্ত বড় হলে এনামেল ক্ষয়ে নার্ভ পর্যন্ত চলে যেতে পারে। এমনটা হলে ঠান্ডা বা গরম খাবার খেলে উত্তেজনা তৈরি হয়। তখন শিরশিরানি হতে পারে। আবার বয়সের কারণে এনামেল ক্ষয়ে যেতে পারে।
তামাক জাতীয় দ্রব্য দীর্ঘ দিন ধরে মাত্রাতিরিক্ত খেলেও এনামেল ক্ষয়ে যেতে পারে। কোল্ডড্রিংকসের কারণেও এ সমস্যা হতে পারে। দাঁতে অ্যাসিড বেশি তৈরি হলে দাঁতের ক্ষয় হতে পারে। অনেকাংশে এর জন্য দায়ী ভুল পদ্ধতিতে ব্রাশ করা। জোরে, অতিরিক্ত ঘষা হলে এনামেল ক্ষয়ে যেতে পারে।
দাঁতের শিরশিরানি দূর করার উপায়-
দাঁতে কোনো অস্বস্তি দেখা দিলেই চিকিৎসকের কাছে যান। দাঁতের ভেতর কী হয়েছে, কেন হয়েছে, কী করলে ভালো হবে সেটি একজন চিকিৎসকই ভালো বুঝবেন। দাঁতের শিকড় বা গোড়ার অংশে এনামেল থাকে না।
নোংরা জমে মাড়ি নীচে নেমে গিয়ে দাঁতের শিকড় বেরিয়ে এলে শিরশিরানি হতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে এই সমস্যা নিজে থেকেই ঠিক হয়ে যায়। এই সমস্যা হলে বিশেষ টুথপেস্ট ব্যবহার করা যেতে পারে। সমস্যা বেশি হলে দাঁত ফিলিং করতে হতে পারে।
দাঁত ভালো রাখতে রাতে ব্রাশ করা জরুরি। দাঁতে আটকে যায় এমন খাবার এড়িয়ে চলা ভালো।
আরো পড়ুন: সুন্দর দাঁতেই সুন্দর ভাগ্য!
ছোটদের ক্ষেত্রে বিভিন্ন জিনিস মুখে দেওয়ার প্রবণতা থাকে। তাদের দুধের দাঁত উঠলেই যত্ন নেওয়া শুরু করতে হবে। বারবার কুলকুচি করাতে হবে।
দাঁত ভাল রাখতে অপ্রয়োজনে মেডিকেটেড টুথপেস্ট ব্যবহার না করাই শ্রেয়। এসব টুথপেস্ট অনেক সময় সমস্যা আড়াল করে। ফলে ভেতরে রোগ বাড়তে থাকে। সবচেয়ে ভালো হয় একজন দন্ত চিকিৎসকের পরামর্শ নিলে। তিনিই সব ভালো বুঝবেন।
এম এইচ ডি/ আই. কে. জে/
খবরটি শেয়ার করুন