বুধবার, ৩রা জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
১৮ই আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দুর্গা প্রতিমায় কেন পতিতালয়ের মাটি লাগে

ধর্ম ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০৪:৩৩ অপরাহ্ন, ৭ই মে ২০২৩

#

ছবি: সংগৃহীত

দুর্গা পূজায় প্রতিমায় ‘বেশ্যাদ্বারের মাটি’ লাগে ৷ সংস্কৃত শব্দের অর্থ না জানার ফলে বিভ্রান্তিতে পড়ছেন অনেকে৷

“অভিষিক্তা ভবেৎ বেশ্যা ন বেশ্যা

কুলটা প্রিয়ে মহানির্বাণ তন্ত্র ৷

“পূর্ণাভিষেকো দেবেশি দশ বিদ্যাবিধোস্মৃত”

দীক্ষা পুরশ্চরণঃ--- পূর্ণাভিষেক মন্ত্রচৈতন্য হওয়ার ফলে যিনি দেবত্বে উন্নীত হয়েছেন, এরকম অভিষিক্তাকে বেশ্যা বলা হয়েছে৷ আর উনারা যেখানে বাস করেন সেই দ্বারের মাটিকে বলা হয়েছে৷ বর্তমান সমাজের পতিতালয়ের মাটি বলা হয়নি ৷ এই ঘৃণিত মহা পাপকে শাস্ত্র কখনও প্রশ্রয় দেয়নি বরং প্রায়শ্চিত্ত করতে বলেছে।

তাৎপর্য
প্রথমে বলি প্রতিটি ধর্ম তাদের নিজ নিজ মেয়েদের সমান অধিকার দিয়েছে। কিন্তু হিন্দু ধর্ম শুধু সমান না, সর্ব উচ্চ সম্মান দিয়েছে। একমাত্র হিন্দুধর্মে মেয়েদের মাতৃরুপে, দেবী রুপে, সতী রুপে, শক্তি রুপে পূজা করা হয়।

পতিতালয় বলতে বোঝানো হয়েছে দেহ ব্যবসা যারা করে, যে স্থানে থাকে সে স্থানকে পতিতালয় বলা হয়। কিন্তু একটা জিনিস পরিষ্কারভাবে বুঝে নেবেন- ওখানে যে পুরুষগুলো যাচ্ছে তারাও কি খারাপ কাজ করছে না? যদি খারাপ কাজ তারা করে, তারা যদি স্নান করার পর মন্দিরে এসে পূজা দিতে পারে; মায়ের মণ্ডপে এসে মাকে প্রণাম করতে পারে; তাহলে পতিতালয়ের মেয়েরা কেন এখানে ঘৃণিত হবে?

আর সে সমস্ত মেয়েরা যেন নির্দ্বিধায় মাকে প্রণাম বা পূজামণ্ডপে এসে পূজা উদযাপন করতে পারে; সে জন্যই মায়ের প্রতিমা তৈরি করতে পতিতালয়ের একটু মাটি প্রয়োজন হয়।

একটা পুরুষ যখন পতিতার বাড়ি গিয়ে অবৈধ যৌনাচার করে তখন ঐ পুরুষের জীবনের সমস্ত পূণ্য পতিতার বাড়ির মাটিতে পতিত হয় বা পূণ্য তাকে ত্যাগ করে। বিনিময়ে ঐ পুরুষ পতিতার ঘর থেকে নিয়ে আসে সমস্ত পাপ। এরূপ বহু পুরুষের অর্জিত সমস্ত পূণ্য ত্যাগে পতিতাদের ঘরের মাটি পূণ্যময় হয় বলে মনে করা হয়। তাই পতিতার ঘরের মাটি প্রয়োজন হয়।

এ থেকে শিক্ষা লাভ করা যায় যে, পতিতার ঘরে গিয়ে অবৈধ যৌনাচার করে নিজের জীবনের সমস্ত পূণ্য বিসর্জন দিও না। নারী কখনো অপবিত্র হয় না।

আরো পড়ুন: শ্রীকৃষ্ণ যে কারণে গোবর্ধন পর্বত ধারণ করেছিলেন

নারী মায়ের জাতি। নারীর গর্ভেই পুরুষের জন্ম। নারীকে পতিতা বানায় পুরুষরাই। তাই ঐ পুরুষরাই অপবিত্র। মায়ের প্রতিমা তৈরিতে পতিতালয়ের মাটি দিতে হয়, এর মাধ্যমে এটাই বুঝানো হয়েছে যে তাঁরা পরিস্থিতির শিকার। তাঁদের সন্মান করতে হবে। নারী কখনো অপবিত্র হতে পারে না (নিজের ইচ্ছেতে যে নারী নিজেকে বিকিয়ে দেন তিনি ছাড়া)। যে সব পুরুষ ঐ নারীদের পতিতা হতে বাধ্য করেছে সেই সব পুরুষরাই অপবিত্র।

শরৎকালে হয় দেবীর অকাল বোধন৷ এই সময় মহামায়া ৯টি রূপে পূজিত হন৷ এই নবম রূপটিই আসলে পতিতালয়ের প্রতিনিধি৷ মনে করা হয়, সে কারণেও এই রীতির জন্ম হয়েছে ৷

সূত্র: হিন্দুডাটা

এসি/

দুর্গা প্রতিমা পতিতালয়

খবরটি শেয়ার করুন