সোমবার, ৮ই জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২৪শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পুরীর জগন্নাথ দেবের মন্দিরের নানা অজানা কথা ও তথ্য

ধর্ম ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০১:৪৫ অপরাহ্ন, ২০শে জুলাই ২০২৩

#

ছবি: সংগৃহীত

পুরীর কথা বলতেই সকলের মনে আসে প্রভু জগন্নাথ দেবের মন্দির ও পুরীর বিশাল রথযাত্রা উৎসব। চার ধামের মধ্যে পুরীর এই জগন্নাথ মন্দির অবশ্যই অন্যতম। লক্ষ লক্ষ মানুষ ভিড় করেন জগন্নাথ দেবের মন্দিরে।

প্রভুর দর্শনের জন্য দেশ-বিদেশ থেকে ছুটে আসেন লক্ষ লক্ষ ভক্ত। পুরীর জগন্নাথ দেবের মন্দিরটি ওড়িশার পুরী পূর্ব সমুদ্র সৈকতে অবস্থিত। ১০৭৮ সালে তৈরি হয় এই মন্দির। প্রতি বছর পুরীতে উদযাপন করা হয় বিশাল রথযাত্রা। এবার চলুন জেনে নেওয়া যাক কিছু অজানা কথা।  

প্রতি ১২ বছর অন্তর জগন্নাথদেব, বলরাম ও সুভদ্রা দেবীর নতুন মূর্তি তৈরি করা হয় পুরী জগন্নাথ দেবের মন্দিরে। যাকে বলা হয় ‘নব কলেবর’। নিম কাঠ ব্যবহার করে গড়া হয় জগন্নাথ দেব, বলরাম ও সুভদ্রা দেবীর মূর্তি।

কিন্তু, বিস্ময়ের ব্যাপার হল, পুরনো মূর্তি ভাসান দেওয়া হয় না। নতুন মূর্তির নীচেই মাটি চাপা দিয়ে রাখা হয়। যা পরে মিশে যায় মাটির সঙ্গেই। 

পুরীর জগন্নাথ দেবের মন্দিরের চূড়ায় যে পতাকাটি লাগানো থাকে তা সবসময় হাওয়ার বিপরীত দিকে ওড়ে। মূল মন্দিরের চূড়ায় যে সুদর্শন চক্র রয়েছে, তা যে দিক থেকেই দেখা হোক না কেন মনে হবে তা দর্শকের দিকেই। কথিত আছে প্রায় ২০০০ বছর আগে এই সুদর্শন চক্র মন্দিরের চূড়ায় লাগানো হয়েছিল। কিন্তু, কী ভাবে তা মন্দির চূড়ায় লাগানো হয় তা এখনো অজানা। 

প্রভুর মন্দিরের উপর দিয়ে কোনও পাখি বা বিমান উড়তে পারে না | মন্দিরের ছায়া মন্দিরের সবচেয়ে বড় প্রাসাদটির ছায়া দিনের যে কোনও সময় অদৃশ্য থাকে | মন্দির চূড়ায় যে ধ্বজা রয়েছে তা প্রতিদিন ভোরে লাগানো হয় | এবং সন্ধাবেলা খুলে ফেলা হয়। কথিত, গত ১৮০০ বছর ধরে এই নিয়ম চলে আসছে |

পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের ভিতরে সিংহদ্বারের মন্দিরে প্রবেশ করার পরেই প্রথম সিঁড়িতে পা রাখার সঙ্গে সঙ্গে সমুদ্রের আওয়াজ আর শুনতে পাওয়া যায়না | কিন্তু ওই সিঁড়িটি টপকে গেলে আবার সমুদ্রের শব্দ শুনতে পাওয়া যায় | সন্ধেবেলায় এই বিষয়টি সবচেয়ে বেশি পরিলক্ষিত হয় | 

পুরীর মন্দিরের সিংহ দরজাতে সাইন বোর্ডে লেখা আছে, সনাতন হিন্দু ব্যতীত কারও প্রবেশ নিষেধ | সেই কারণে ১৯৮৪ দেশের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীকেও পুরীর মন্দিরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি| কারণ তাঁর স্বামী ফিরোজ গান্ধী ছিলেন পার্শী | পাশাপাশি প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি এপিজে আব্দুল কালামও পুরীর মন্দিরে প্রবেশাধিকার পাননি | 


এক সমীক্ষায় বলা হয়েছিল, দিনে ৩০ হাজারেরও বেশি ভক্ত সমাগম হয় এই মন্দিরে | জানা যায়, জগন্নাথ দেবের মন্দিরে দুটি ‘রত্ন ভাণ্ডার’ রয়েছে— ভিতর ভাণ্ডার ও বাহার ভাণ্ডার | যে কোনও উৎসব-অনুষ্ঠানে জগন্নাথদেব, বলরাম ও সুভদ্রাকে সাজানোর জন্য বাহার ভাণ্ডারের অলংকারই ব্যবহৃত হয় বলে |

মন্দিরের রত্ন ভাণ্ডারের মোট সাতটি কক্ষ রয়েছে | কিন্তু তার বেশির ভাগই বন্ধ থাকে | ১৯৮৪ সালে, মাত্র তিনটি কক্ষ খোলা হয়েছিল পরিদর্শনের জন্য  | ২০১৬ সালে ফের খোলা হয়েছিল | মাত্র ১০ জন ব্যক্তি ঢুকেছিলেন | সেই সময়ে মন্দিরে কোনও ভক্তকেই প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি | 

অন্যদিকে রথযাত্রার কথা শুনলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে পুরীর বিখ্যাত রথযাত্রা-র কথা| জগন্নাথের প্রধান উত্‍সব | আষাঢ় মাসের শুক্লা দ্বিতীয়া তিথিতে রথযাত্রা অনুষ্ঠান শুরু করে শুক্লা একাদশীর দিন পূর্ণযাত্রা বা উল্টোরথ অনুষ্ঠিত হয় |পুরীতে রথযাত্রা সময় সবার প্রথম বলভদ্রের তালধ্বজ চলতে শুরু করে | এর পরে সুভদ্রার পদ্মধ্বজ এবং সব শেষে জগন্নাথের নন্দীঘোষের পথ চলা শুরু হয় | 

সূত্র: আজবাংলা

এসি/ আই. কে. জে/


পুরীর জগন্নাথ দেবের মন্দিরের নানা অজানা কথা ও তথ্য

খবরটি শেয়ার করুন