সোমবার, ৮ই জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২৩শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জনপ্রিয় নাট্যদল বাতিঘরের যুগপূর্তিতে নাট্যোৎসব ৮-৯ জুন

বিনোদন ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০৬:৪৯ অপরাহ্ন, ৬ই জুন ২০২৩

#

ছবি: সংগৃহীত

বর্তমান সময়ের অন্যতম আলোচিত নাট্যদল বাতিঘর। সময়ের সাথে তাদের পথচলায় যুক্ত হয়েছে নতুন নতুন মঞ্চ প্রযোজনা, যা ইতিমধ্যে দর্শকদের নজর কেড়েছে। ইতিমধ্যে বাতিঘর হয়ে উঠেছে দেশের অন্যতম সেরা নাট্যদল হিসেবে। জনপ্রিয় এই নাট্যদলটি তাদের একযুগ পুর্তি উপলক্ষে আগামী ৮ ও ৯ জুন দুই দিনব্যাপী এক নাট্যোৎসবের আয়োজন করেছে। এ উৎসবে প্রদর্শিত হবে বাতিঘরের নতুন নাটক 'ভগবান পালিয়ে গেছে'। নাটকটির রচনা ও নির্দেশনায়- মুক্তনীল।

উৎসবের প্রথম দিন ৮ জুন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টায়, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির পরীক্ষণ থিয়েটার হলে হবে নাটকটির উদ্বোধনী মঞ্চায়ন। নিয়মিত প্রদর্শনী ৯ জুন শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টায়, একই হলে। 

নাটকের কাহিনী সংক্ষেপ

মানুষের মনের ক্ষমতা অসীম। সেই অসীম ক্ষমতা দিয়ে মানুষ তার বিশ্বাসকে খোলামনে প্রশ্ন করতে পারে, তারচেয়েও সহজে নিজ বিশ্বাসকে চোখ বন্ধ করে সীমাহীন অন্ধকারে তলিয়ে দিতে সক্ষম সে। ঈশ্বর বিশ্বাস, ভূত-প্রেত বিশ্বাসসহ সকল বিশ্বাসই একই বৃন্তে হাজার কুসুমের ন্যায় একে অন্যকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরে যুগের পর যুগ বেঁচে থাকে। সময়ে সময়ে বিশ্বাসের পাত্র বদল হয় কিন্তু রূপ বদলায় না। অসহায়-দুর্বল মানুষের আশ্রয়স্থল বিশ্বাস নিয়ে চলে একশ্রেণীর মানুষের ব্যবসা। লোভী, স্বার্থপর, সুযোগসন্ধানী এই মানুষগুলো সাধারণ মানুষের বিশ্বাস নিয়ে খেলা করে। তারা চায় না অন্ধকারে জ্ঞান প্রদীপের প্রজ্বলন ঘটুক। ব্যবসায়ীরা তাদের ফাঁদ এতো শক্ত-পোক্ত-সুন্দর করে নির্মাণ করে যে, এর থেকে তাদের নিজেদেরও মুক্তি নেই। 

বিশ্বাস এক বিশাল বটবৃক্ষের মতো। মাটির উপরে যেমন তার বিশালতা; মাটির নিচেও সে সমান বিস্তৃত। বিশ্বাসের উপর ভর করে মানুষ আশ্রয় খোঁজে, ভরসা চায়। যেহেতু মানুষের আশ্রয় প্রয়োজন, ধর্ম তাকে খুজে নেয় অথবা মানুষ খুজে নেয় ধর্ম, আর খেলার শুরু সেখান থেকেই।

আত্মা মরে যাওয়া মানুষগুলো নিজ স্বার্থে তৈরি করে বিশ্বাসের এক একটি ভয়ঙ্কর খোড়ল। খোড়লবাসী প্রাণীগুলো লিকলিক করে শ্বাস নেয়। বাতাস ভারী হয়ে আসে সদ্য ভূমিষ্ট শিশুর কান্নায়। পালাবার পথ নেই। জন্মেই পরাভূত শিশু, প্রবঞ্চকের পরিকল্পনায় হয় কৃতদাস। 

নাটকটি সম্পর্কে রচয়িতা ও নির্দেশক মুক্তনীল বলেন, শাস্ত্র অনুযায়ী ঈশ্বরের কোনও রুপ নেই, কিন্তু তার ইচ্ছে আছে। অর্থাৎ ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে বিষয়টিকে এভাবেও ব্যাখ্যা করা যায়, আপনার ভেতরে একটা সত্ত্বা আছে, যাকে আপনি দেখতে পান না। কিন্তু সে প্রতিনিয়ত আপনাকে দেখছে- আপনি খাচ্ছেন, কথা বলছেন, হাঁটাচলা করছেন, ইত্যাদি। এই সবকিছু করতে গিয়ে আপনি নিশ্চই অনুভব করেন যে আপনার গভীরে একজন “আমি” বসবাস করে। আপনার বাহ্যিক আচরণের হয়তো অনেক কিছুর সাথেই রয়েছে সেই আমি'র দ্বন্দ। আপনি হয়তো রাগ করে কোনও অসংলগ্ন কথা বলে ফেলেছেন, অথচ আপনার ভেতরের সেই আমি চাইছে না আপনি এই কথা বলুন। এই আচরণের জন্য পরবর্তীতে হয়তো আপনি অনুশোচনায় ভুগছেন । ভেতরের সেই চরম অনুভূতিশীল মানবিক যে সত্ত্বা প্রতিমুহূর্তে আপনাকে দেখে যাচ্ছে তাঁকেই আমি বলছি ভগবান। যে চোখ দিয়ে দেখছে না, দেখছে বিবেক দিয়ে । বিবেকের কন্ঠস্বরই হচ্ছে ভগবানের কন্ঠস্বর। 'ভগবান পালিয়ে গেছে' আসলে আক্ষরিক অর্থে ভগবানের পলায়ন নয়। এটা আমার আমি'র পলায়ন। দিনে দিনে আমরা সবাই যাকে হারিয়ে ফেলছি। আমাদের সত্ত্বা, বিবেচনা, মানবিকতা সর্বোপরি আমাদের বিবেক।

করোনা মহামারির শুরুতে জীবনযাত্রা যখন হঠাৎ মুখ থুবড়ে পড়লো, মানুষ আরো বেশী করে উপলব্ধি করতে পারলো-ভাবার সময় পেলো যে; তারা কতোটা দুর্বল ও অসহায়। জীবন-মৃত্যুর মাঝের দূরত্ব কতটা সামান্য! বিশ্বাস-অবিশ্বাসের নানান পাত্র বদল দেখলাম আমরা তখন। গৃহবন্দি অবস্থায় মানুষের বিশ্বাসের রূপগুলো দেখে যে ভাবনার উদয়; তা থেকেই “ভগবান পালিয়ে গেছে” নাটকের সূচনা। 

মঞ্চে

পূজারী      -     সাদ্দাম রহমান / সুমন স্মরণ  

কালু     -           ফয়সাল মাহমুদ / নজ্রুল ইসলাম 

প্যাঁচা    -           সঞ্জয় গোস্বামী / সাদ্দাম রহমান

পেঁচী  -           নূছরাত ইমাম বুলটি / উম্মে হাবীবা 

মনোহর -          ইয়াসির আরাফাত / সঞ্জয় হালদার

মাদুলী -          সুইটি হোড় / জান্নাতুল হাসান ঐশী 

ইব্রাহীম গাজী -  সুমন স্মরণ / সাদাব হাশমী 

রমিজা -  মৃধা অয়োমী / সুইটি হোড় / উম্মে হাবীবা

সুবল -   আহসান উল্লাহ রিয়াজ / সঞ্জয় গোস্বামী

হাজরা    -           রাজু আহমেদ, সুদর্শন ধর, রুদ্র রোকন

ছোট রমিজা  - ফিওনা ফেরদৌসী (বিন্দি) 

হুজুরাইন - ফেরদৌসি আকতার / উম্মে হাবীবা

ধীরেন -      রুদ্র রোকন / শৈবাল সান্যাল 

দক্ষ - সঞ্জয় হালদার / ইয়াসির আরাফাত

ব্রহ্মা - ইয়াসিন হায়দার ফাহিম / সাদাব হাশমী 

সতী - উম্মে হাবীবা / জান্নাতুল হাসান ঐশী  

গায়েন - সাদাব হাশমী / রাজু আহমেদ

আছিয়া - রাজু আহমেদ / আহসান উল্লাহ রিয়াজ 

ব্যবসায়ী - সাদাব হাশমী / রাজু আহমেদ

বাদ্যদল - শিশির সরকার, সঞ্জয় হালদার, তাজিম আহমেদ শাওন 

অন্যান্য চরিত্রে - শৈবাল সান্যাল, সুদর্শন পার্থ, স্মরণ, সঞ্জয়, শাওন, অয়োমী, ফেরদৌসি, 

মায়া, বিন্দি, রোকন, ইয়াসিন, ঐশী

কন্ঠস্বর - আসাদুজ্জামান নূর

গান

রণে নেমেছে কার বামা - সংগৃহীত শ্যামা সঙ্গীত 

হুক্কাহুয়া ধোয়ার কুয়া - কথা- মুক্তনীল, সুর- সংগৃহীত

অমাবস্যার রাত - কথা- মুক্তনীল, সুর- সঞ্জয় গোস্বামী 

মানুষ হয়ে বাঁচতে গেলেই যত জ্বালা - কথা- মুক্তনীল, সুর- জনি সেন রুবেল 

ঢিক পড়েছে জলে - কথা- মুক্তনীল, সুর- জনি সেন রুবেল

কৃষ্ণ বলে আমার রাঁধা - দ্বিজেন্দ্রলাল রায় 

মনরে কৃষি কাজ জানো না - রামপ্রসাদ সেন 

ঝড় নেমে আয় - রবীন্দ্র সঙ্গীত 

নেপথ্যে

রচনা ও নির্দেশনা - মুক্তনীল

আলোক পরিকল্পনা - পলাশ হেনড্রি সেন 

মঞ্চ পরিকল্পনা - চারু পিন্টু 

সহযোগী মঞ্চ পরিকল্পনা - তাজিম আহমেদ শাওন, আল মামুন খোকন 

সঙ্গীত পরিকল্পনা - জনি সেন রুবেল, শিশির সরকার, তাজিম আহমেদ শাওন

কোরিওগ্রাফি - শিশির সরকার

পোশাক পরিকল্পনা - ফেরদৌসি আকতার

পোশাক নির্মাণ সহযোগীতায় - শিশির, রাজু, অয়োমী, সুইটি, রোকন, মায়া

প্রপ্স নির্মাণ - আল মামুন খোকন, মোঃ রিয়াজুল ইসলাম, রাজু আহমেদ 

রুপসজ্জা - রুম্মান শারু 

পোস্টার - আল মামুন খোকন

সঙ্গীত প্রয়োগ - জনি সেন, শিশির সরকার,তাজিম আহমেদ শাওন, 

   রুম্মান শারু, সঞ্জয় হালদার, বিজয় বণিক, অয়োমী, সুইটি

প্রচার- প্রকাশনা - আল মামুন খোকন, রাজা আকন, ফয়সাল মাহমুদ 

ফটোগ্রাফি ও ভিডিওগ্রাফি - কমল চন্দ্র দাস 

মঞ্চ ও মিলনায়তন ব্যবস্থাপনা - বাতিঘর কর্মীবৃন্দ 

প্রযোজনা অধিকর্তা - শাহানা জয় 

বিশেষ কৃতজ্ঞতা - শ্রদ্ধেয় আসাদুজ্জামান নূর, রহমান মুফিজ, শাহানা জয়, খালিদ হাসান রুমি, আল মামুন খোকন, আলফ্রেড খোকন, নজ্রুল কবির 


আরো পড়ুন: ঈদে অন্য তারকাদের ছবি দেখবেন সিয়াম!

এম এইচ ডি/ আইকেজে

নাটক বাতিঘর

খবরটি শেয়ার করুন