রবিবার, ২২শে ডিসেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
৮ই পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রংপুরের অর্থনীতিতে আশীর্বাদ হাঁড়িভাঙা আম 

নিজস্ব প্রতিবেদক

🕒 প্রকাশ: ০৭:৪১ অপরাহ্ন, ২৬শে মে ২০২৩

#

ছবি: সংগৃহীত

রংপুরে হাঁড়িভাঙা আম অর্থনীতির জন্য আশীর্বাদ হয়ে এসেছে। মিষ্টি ও আঁশহীন হাঁড়িভাঙা আমের চাহিদা বাড়ছে দিন দিন। কয়েক বছর ধরে ফলন ভালো হওয়ায় বেড়ে চলেছে আম উৎপাদনের পরিধিও। রংপুর সদর, মিঠাপুকুর ও বদরগঞ্জ উপজেলার বিস্তৃত এলাকার ফসলি জমি, বাগানসহ উঁচু-নিচু ও পরিত্যক্ত জমিতে হচ্ছে এ হাঁড়িভাঙা আমের চাষ। টেকসই অর্থনীতির জন্য হিমাগার স্থাপন, আধুনিক আমচাষ পদ্ধতি বাস্তবায়ন, গবেষণা কেন্দ্র স্থাপনসহ হাঁড়িভাঙাকে জিআই পণ্য হিসাবে ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন আম চাষি ও ব্যবসায়ী।

জানা যায়, আগামী ২০ জুন হাঁড়িভাঙা আম আনুষ্ঠানিকভাবে বাজারে আসবে। চলতি বছর আগেভাগেই মধ্যপ্রাচ্যসহ বেশ কয়েকটি দেশে ৫০ কোটি টাকার আম রপ্তানির অর্ডার পেয়েছেন। আমের দাম ও ফলন ভালো হওয়ায় বেড়েছে উৎপাদন। ফসলি জমি, বাগানসহ উঁচু-নিচু ও পরিত্যক্ত জমিতে চাষ হচ্ছে হাঁড়িভাঙা আম। চলতি বছর ১ হাজার ৯০৫ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে হাঁড়িভাঙা আম। দেশের বিভিন্ন স্থানে আম শেষ হয়ে যাওয়ার পর হাঁড়িভাঙা আম বাণিজ্যিকভাবে বাজারে আসে। 

কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, জুনের শেষ সপ্তাহে বাজারে মিলবে হাঁড়িভাঙা আম। নির্ধারিত সময়ে বাগান মালিক ও চাষিরা গাছ থেকে হাঁড়িভাঙা আম তুলে শুরু হবে বাজারজাত। আবহাওয়া প্রতিকূল ও তীব্র গরম থাকলে জুনের শুরুতেই বাণিজ্যিকভাবে হাঁড়িভাঙা আম বিক্রি শুরু হবে।

ব্যবসায়ীরা জানান, আবহাওয়া ভালো থাকলে হাঁড়িভাঙা আম দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করা যাবে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এবং মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশ থেকে প্রায় ৫০ কোটি টাকার আম রপ্তানির চুক্তি হয়েছে। ইতিমধ্যে তারা অগ্রিম অর্ডার দিয়েছেন। ৫৫টি বাগান মালিকের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। আগাম অর্ডার একশো কোটি ছাড়িয়ে গেছে। 

জানা গেছে, লালমাটি ও কাদাযুক্ত এলাকায় হাঁড়িভাঙার উৎপাদন ভালো হয়। জেলার রংপুর সদর, মিঠাপুকুর, পীরগঞ্জ উপজেলার লাল মাটিতে বাণিজ্যিকভাবে চাষ শুরু হয়েছে। বদরগঞ্জ উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের গোপালপুর,পদাগঞ্জের কুতুবপুর ইউনিয়নের নাগেরহাট, সর্দারপাড়া, সদর উপজেলার সদ্যপুস্করনী ইউনিয়নের কাঁটাবাড়ি, মিঠাপুকুর উপজেলার খোড়াগাছ, রানীপুকুর ও বলদিপুকুর এলাকার প্রায় সব গ্রামে হাঁড়িভাঙা আমের বাগান রয়েছে। বাণিজ্যিকভাবে গড়ে উঠেছে এই আম বাগানগুলো। 

মিঠাপুকুর উপজেলার তেকানি গ্রামের চাষি শাহজাহান মিয়া বলেন, বিগত বছরের মতো এবার হাঁড়িভাঙা আমের বাম্পার ফলন হয়েছে। প্রতি বছর কম বেশি শত কোটি টাকার ওপরে আম বিক্রি হয়। তবে হাটে যাওয়ার জন্য যোগাযোগ ব্যবস্থা তেমন উন্নত না হওয়ায় দুশ্চিন্তায় রয়েছি। 

আরো পড়ুন:নৌকার পরাজয় মেনে বিজয়ী জায়েদা খাতুনকে অভিনন্দন জানালেন ওবায়দুল কাদের
 

রংপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ওবায়দুর রহমান মণ্ডল বলেন, জেলায় ১ হাজার ৯০৫ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় বেশি। তবে এ বছর ১ মাসের অধিক দাবদাহ থাকায় কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। একটি হাঁড়িভাঙা আমের ওজন ২০০ থেকে সাড়ে ৪০০ গ্রাম পর্যন্ত হয়ে থাকে। ঝড় কিংবা বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হওয়ায় আমের তেমন ক্ষতি হয়নি। 

রংপুরের জেলা প্রশাসক ড. চিত্রলেখা নাজনীন বলেন, হাঁড়িভাঙা আমের বাজারজাতে কোনো ধরনের অসুবিধা না হয় তা মনিটরিং করা হবে। পরিবহন ব্যবসায়ীরা যেন কোনো হয়রানি না করে সেজন্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হবে

এম/
 

Important Urgent

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন