রাঙা বউ আমার
কথা নয়- এক টুকরো হাসি দাও
এক পলক চেয়ে- তৃষিত তোমার চোখে
দেখছ না তুমি?
এইতো আমি
তোমার আকাশের জানালায়।
লুইজা,
কেমন আছো তুমি ?
আমার আদর ও ভালোবাসা জেনো। আজ এইতো বিকেলের সৈকতে শুয়েছিলাম আমি। সূর্যাস্তের রঙ লাগা বালিতে কিছু ছবি, কিছু নাম লিখছিলাম। যেগুলো নিমিষে মিশিয়ে যাবে না, ঢেউয়ের আঘাতে। জেগে থাকবে আজ, আগামীকাল, হাজার বছর ধরে।
জীবনানন্দ দাশ একটি কবিতায় বলেছিলেন "কে হায় হৃদয় খুঁড়ে বেদনা জাগাতে ভালবাসে" বেদনা জাগুক আর নাই জাগুক আমরা সবাই কমবেশি হৃদয় খুঁড়ি- কখনো জ্ঞাতসারে আবার কখনো বা নিজের অজান্তে। তবে হৃদয় খুড়লে সব সময় বেদনা জাগে না, কখনো স্তরে স্তরে আনন্দেরও সন্ধান মেলে। আনন্দ- হ্যাঁ এই আনন্দই আজ আমার হৃদয় মনকে আচ্ছন্ন করে রেখেছে। আমি বিভোর- তোমাকে পাবার আনন্দে।
বউ, কেন জানিনা- আজ বেশি করে মনে পড়ছে তোমাকে। হয়তো তোমার মধ্যে বাস্তবধর্মিতা আছে বলেই। আমার বিচরণ ছিল নীলিমায়, নক্ষত্রপুঞ্জে। আর আমাকে সেই কল্পনা থেকে টেনে এনে আদরে আর ভালোবাসায় প্রাণপ্রাচুর্যের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে তুমি। আমার প্রণয়ণী। কি, লজ্জায় মুখখানা লাল হয়ে উঠছে, তাই না! দেখতে না পেলেও অনুভব করছি। আসলে, রংধনু আর ভোরবেলার শিশিরবিন্দু দিয়ে গড়া হয়েছে তোমাকে- শুধু আমার জন্য।
কেন জানি না, তোমাকে একনজর দেখার, তোমার কাছে নিজের হৃদয়কে উন্মোচিত করার এক অপ্রতিরোধ্য বাসনা আমাকে মাতাল, প্রায় উন্মাদ করে তুলছে। লুইজা, তুমি আমাকে তোমার হৃদয়ের রংধনু উপহার দিয়েছো- একথা ভেবে শিহরিত হচ্ছি, এই পূর্ণিমা রাতে। বেশ লাগছে কিন্তু।
——ইতি
শুভ্র রেজা
অমৃত অক্ষর (চিঠি -১৯)
৩০/০৫/১৯৯১, ময়মনসিংহ
আই. কে. জে/