সোমবার, ৮ই জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২৩শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সবার ঈদযাত্রা শুভ হোক

সম্পাদকীয়

🕒 প্রকাশ: ০৫:১৯ অপরাহ্ন, ২৭শে জুন ২০২৩

#

দুদিন বাদেই ঈদুল আজহা। ঈদ সামনে রেখে ঘরে ফিরতে শুরু করেছে মানুষ। ট্রেন, বাস ও লঞ্চে ঘরমুখী যাত্রীর চাপ বেড়েছে। বরাবরের মতো এবারও যাত্রী পরিবহনকারী সংস্থাগুলো আগাম টিকিট বিক্রি করেছে। ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন রাখতে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছে কর্তৃপক্ষ। রাজধানীর গাবতলী, সায়েদাবাদ ও মহাখালী বাস টার্মিনালে এতদিন যাত্রীদের চাপ না থাকলেও ঈদ যত ঘনিয়ে আসছে, পরিস্থিতির ততই পরিবর্তন হচ্ছে। অনেকে আবার মোটরবাইকসহ নিজস্ব বাহনেও বাড়ি যাচ্ছেন। তবে বাইকে চলাচলের ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতা নেওয়া জরুরি। সবার আগে যাওয়ার প্রতিযোগিতা আর সামান্য অসতর্কতার কারণে বাইকের আরোহী যেমন নিজেদের মৃত্যু ডেকে আনতে পারেন, তেমনি আশপাশে থাকা পরিবহনের যাত্রীদেরও জীবন বিপন্ন হয়ে উঠতে পারে। এছাড়া দূরপাল্লার সব পরিবহনই রাস্তায় চলাচলের উপযুক্ত কিনা, সে ব্যাপারে আগেই পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে নেওয়া উচিত।

গত শনিবার ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে এক মর্মান্তিক অ্যাম্বুলেন্স দুর্ঘটনায় সাতজনের প্রাণহানি ঘটেছে। পুলিশ জানিয়েছে, দুর্ঘটনার শিকার অ্যাম্বুলেন্সটি ঢাকা থেকে বরিশাল যাচ্ছিল। পথে এক্সপ্রেসওয়েতে চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রেলিংয়ে ধাক্কা দিলে সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়। এতে অ্যাম্বুলেন্সে থাকা রোগী ও স্বজনরা পুড়ে মারা যান। প্রত্যক্ষদর্শীদের কেউ কেউ বলছেন, অ্যাম্বুলেন্সের সামনের চাকা ফেটে যাওয়ায় চালক নিয়ন্ত্রণ হারান। আবার কারও দাবি, সামনে থাকা বেপরোয়া গতির মোটরবাইক-ই এ দুর্ঘটনার কারণ। তবে কারণ যা-ই হোক, এমন অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা এড়াতে ঈদযাত্রায় সবারই বাড়তি সতর্কতা প্রয়োজন।

এদিকে পশুবাহী ট্রাকের কারণে সড়কে কিছুটা যানজট সৃষ্টি হলেও ট্রেনযাত্রায় ভিন্ন ভোগান্তিতে পড়ছেন যাত্রীরা। ঈদযাত্রার প্রথম দিনেই লোকাল-মেইল ট্রেনে অতিরিক্ত যাত্রীর চাপ ছিল, যার অন্যতম কারণ বিনা টিকিটের যাত্রী। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেওয়ার পরও রোধ করা যায়নি বিনা টিকিটে ভ্রমণ। কর্তৃপক্ষ বলছে, কমলাপুর, চট্টগ্রাম, সিলেট ও রাজশাহী স্টেশনে নিরাপত্তা ও বিনা টিকিটে ভ্রমণ রোধে কমবেশি ব্যবস্থা থাকলেও বাকি ৯০ শতাংশ স্টেশনই প্রায় উন্মুক্ত। ঈদযাত্রায় প্রচণ্ড ভিড় থাকায় এ সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে বিনা টিকিটের যাত্রীরা। ট্রেনের ছাদ, দরজা, ইঞ্জিন, দুই বগির সংযোগস্থল ও ভেতরে ঝুলে-দাঁড়িয়ে যাচ্ছে এসব যাত্রী। এতে সাধারণ বৈধ যাত্রীরা শুধু ভোগান্তিতেই পড়ছেন না, নিরাপত্তা ঝুঁকিতেও পড়ছেন। প্রতি বছর লঞ্চেও এমন বিনা টিকিটের যাত্রীদের দৌরাত্ম্য দেখা যায়। সেই সঙ্গে লঞ্চে ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী বহন তো আছেই।

ঘরমুখী মানুষ চান বাড়িতে গিয়ে ঈদ উৎসবকে আপনজনদের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিতে। তবে তা করতে গিয়ে অসচেতনতা আর মাত্রাতিরিক্ত ঝুঁকি নিয়ে নিজেদের জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলা সুবিবেচনার কাজ নয়। যারা পরিবহন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত, তাদেরও বুঝতে হবে এটি সেবামূলক কাজ। অতি মুনাফার লোভে অন্যের জীবনকে ঝুঁকিতে ফেলা রীতিমতো অপরাধ। কর্তৃপক্ষের কাছে প্রত্যাশা, অনিয়মগুলোকে চিহ্নিত করে তা নিরসনের মাধ্যমে যাত্রীদের ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে কার্যকর ভূমিকা পালন করবেন তারা। সুখবর ডটকম-এর পক্ষ থেকে সবার জন্য শুভকামনা। । ঈদ মোবারক।



সবার ঈদযাত্রা শুভ হোক

খবরটি শেয়ার করুন