ছবি-সংগৃহীত
পৌষের কনকনে শীত আর ঘন কুয়াশায় ঢাকা মাঠের প্রান্তে হলুদের সমারোহে সরিষা বাগানে শতাধিক মৌ বাক্স বসিয়েছেন মধু আহরণকারী রেজাউল হায়দার। বিশুদ্ধ মধু সাধারণ মানুষের হাতে তুলে দেওয়ার প্রত্যয়ে পেশাদারিত্ব নিয়ে দীর্ঘ ১৫ বছর যাবৎ পথে-প্রান্তরে বিভিন্ন জায়গায় মৌ বাক্স নিয়ে মধু আহরণের জন্য এভাবেই বিচরণ করেন ফুলের রাজ্যে।
এখন সরিষা ফুলের মৌসুম। কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার মোড়াগাছা ক্লাব মোড়ে এভাবেই একশ মৌ বাক্স স্থাপন করেছেন সরিষা ফুলের বাগানের পাশে। একদিকে মধু আহরণকারী রেজাউল হায়দারের বিশুদ্ধ মধুর সমারোহ হচ্ছে। অপরদিকে কৃষকের অতিরিক্ত পরাগায়নে সরিষার ফলন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
কৃষি বিজ্ঞানীদের ভাষায় এক ঢিলে দুই পাখি মারার সমতুল্য। বিশুদ্ধ মধু মানবদেহের জন্য যেমন উপকারী, তেমনি সরিষার ফলন ভালো হলে নিজেদের চাহিদা সরিষার তেলে পূরণ হবে।
মোড়াগাছা ক্লাবের কৃষক মনজুর হায়দার বলেন- এবছর প্রায় সাড়ে তিন বিঘা জমিতে সরিষার আবাদ করেছেন। এখন সরিষার বেশ ভালো ফুল ফুটেছে এবং ফুলের জন্য মৌমাছির চাক বসানো হয়েছে পাশেই। এতে করে সরিষার ফলন বেশি পাওয়া যাবে।
আরো পড়ুন: পুঁইশাক যেভাবে চাষ করলে লাভবান হবেন
আরেকজন কৃষক রঞ্জন বিশ্বাস বলেন, আমি সাড়ে চার বিঘা জমিতে সরিষার আবাদ করেছি। হলুদ ফুলে ফুলে সমস্ত মাঠ যেন মনে হচ্ছে হলুদের সমারোহ তার পাশেই মধু আহরণের জন্য বসিয়েছে মধুর বাক্স। বাক্স থেকে যে মধু আহরণ করা হয়েছে তা একান্তই অবিশ্বাস্য।
মধু আহরণকারী রেজাউল হায়দার বলেন প্রায় দেড় মণ মধু ইতিমধ্যে বিক্রি করেছেন। আগামীতে আবহাওয়া ভালো থাকলে এই মাঠ থেকে আমি আরও প্রায় দুই মন মধু আহরণ করবো।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ সবুজ কুমার সাহা বলেন- গড়াই নদীর পাশে বিভিন্ন ইউনিয়নে সরিষা ফুলের মাঠে প্রায় পঞ্চাশটি স্থানে মধু আহরণের বাক্স স্থাপন করা হয়েছে। একদিকে যেমন সরিষার ফলন বৃদ্ধি হবে অপরদিকে বিশুদ্ধ মধু আহরণ করে অতিরিক্ত টাকা আয় করতে পারবে।
তিনি আরো জানান- সরকারিভাবে কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে সরিষার বীজ ও সার বিতরণ করায় উপজেলায় সরিষার আবাদ হয়েছে ১১২০ হেক্টর জমিতে। এবছর আবহাওয়া ভালো থাকায় অতিরিক্ত ফলনের আশা করছে স্থানীয় কৃষকরা।
এসি/ আই. কে. জে/