শান্ত। ছবি: সংগৃহীত
চলতি বছরে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ওয়ানডে বিশ্বকাপের জন্য আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষের সিরিজকে গুরুত্বের সঙ্গেই দেখছে বাংলাদেশ। কেননা ক্রিকেটের মেগা টুর্নামেন্টে সফল হওয়ার লক্ষ্যে এই সিরিজে দল বাছাইয়ের জন্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। যদিও এরপর ঘরের মাঠে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ খেলবে টাইগাররা। আইরিশদের বিপক্ষে চলমান সিরিজের প্রথম ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেসে গেছে। উত্তেজনাপূর্ণ দ্বিতীয় ওয়ানডেতে জয় ছিনিয়ে আনে তামিম ইকবালের দল।
জয়ের ধারা অব্যাহত রেখে নিজেদের আত্মবিশ্বাসকে আরও বেশি শক্তিশালী করার লক্ষ্য নিয়েই আজ আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে খেলতে নামছে বাংলাদেশ। এই ম্যাচে জয় তুলে নিয়ে সিরিজও নিজেদের করে নিতে চায় টাইগাররা।
ইংল্যান্ডের চেমসফোর্ডের কাউন্টি গ্রাউন্ডে আজ বাংলাদেশ সময় বিকেল ৩টা ৪৫ মিনিটে আইরিশদের বিপক্ষে মাঠে নামবে বাংলাদেশ।
প্রথম ওয়ানডে বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হওয়ার পর দ্বিতীয় ম্যাচে ৩২০ রানের লক্ষ্য পেরিয়ে ৩ উইকেটে জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ। এই জয়ে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে আছে টাইগাররা। আজ সিরিজের শেষ ম্যাচে জিতলেই ট্রফি নিয়ে দেশে ফিরবে তামিম ইকবালের দল।
দ্বিতীয় ওয়ানডেতে যেভাবে জয় পেয়েছে সেটা আধুনিক ক্রিকেটের সঙ্গে মানিয়ে নিতে আত্মবিশ্বাস জোগাবে দলকে। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের আগমনে পুরোপুরি বদলে যাওয়া ক্রিকেটে মানিয়ে নিতে কিছু দিন ধরেই এক দিনের ক্রিকেটে কম বেশি ৩৫০ রানের কাছাকাছি স্কোর নিয়ে আলোচনা চলছিল বাংলাদেশ দলে।
এই ম্যাচে শুরুতেই দুই ওপেনারকে হারিয়ে চাপে পড়েছিলো বাংলাদেশ। কিন্তু টার্গেট স্পর্শে আত্মবিশ্বাসী ছিলো দল। চতুর্থ উইকেটে নাজমুল হোসেন শান্ত এবং তৌহিদ হৃদয়ের ১৩১ রানের জুটিতে জয়ের মঞ্চ পায় টাইগাররা।
দুই তরুণের ব্যাটে চড়ে জয় পাওয়াটা বাংলাদেশের জন্য ছিল বিশেষ কিছু। কারণ সিনিয়র ক্রিকেটারদের উপর দল বেশি নির্ভরশীল বলে মনে করা হয়। যদিও সিনিয়র ক্রিকেটারদের অভিজ্ঞতাও কাজে আসে। এই ম্যাচে সাকিব আল হাসান ৩১ রান করেন এবং দলকে লড়াইয়ে রাখতে মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে ৬১ রানের জুটি গড়েন শান্ত। শেষ দিকে ২৮ বলে অপরাজিত ৩৬ রান করে বাংলাদেশকে অবিস্মরনীয় জয় এনে দেন মুশফিক।
তবে সবচেয়ে বড় বিষয় হলো, শান্তকে পরিণত দেখতে পাওয়া। দেশের সেরা তরুণ খেলোয়াড় হওয়া সত্ত্বেও বেশিরভাগ ম্যাচেই দলের প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু যখন খুব বেশি প্রয়োজন, ঠিক তখনই জ্বলে উঠে বাংলাদেশকে দুর্দান্ত জয় এনে দিলেন শান্ত।
ম্যাচ শেষে শান্ত বলেন, ‘আমি সেঞ্চুরি করার কথা ভাবছিলাম না। আমি শুধু বল দেখে খেলেছি এবং আমি জানি যদি ঠিকঠাক ব্যাট করতে পারি তাহলে সেঞ্চুরি করতে পারবো। আমি খুবই খুশি, কারণ এটি আমার প্রথম ওয়ানডে সেঞ্চুরি এবং আমি যেভাবে ব্যাট করতে চেয়েছিলাম, সেভাবে করেছি। কিন্তু খেলা শেষ করে আসতে পারলে আমি আরও বেশি খুশি হতাম।’
তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচক এবং কোচিং স্টাফদের মধ্যে আগে যারা রাসেলের (ডোমিঙ্গো) মত ছিলেন তারা আমাকে অনেক ম্যাচ খেলার সুযোগ দিয়েছিলেন এবং এটি সহায়ক হয়েছে। আমি তাদের কাছে কৃতজ্ঞ, তারা আমার উপর আস্থা রেখেছিলেন। কিন্তু এখনও দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হবে বলে আমি মনে করি। কারণ আমি মাত্র দু’টি ইনিংসে ভালো খেলেছি এবং যদি আমি এভাবে চালিয়ে যেতে পারি তা আমার এবং আমার দলের জন্য ভালো হবে।’
২৩ ম্যাচের ওয়ানডেতে প্রথম সেঞ্চুরির দেখা পান শান্ত। সতীর্থ হৃদয়কে কৃতিত্ব দিতে ভুলে যাননি তিনি। সর্বশেষ ঘরের মাঠে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজেই অভিষেক হয়েছিলো হৃদয়ের।
আরো পড়ুন: টিভিতে দেখুন আজকের খেলা (১৪ মে ২০২৩)
শান্ত বলেন, ‘উইকেটে আসার পর হৃদয় যেভাবে ব্যাটিং করেছে এবং যে মনোভাব দেখিয়েছে সেটা আমাকেও সাহায্য করেছে এবং তাকে কখনও নার্ভাস দেখায়নি। আমরা যেই জুটি গড়েছি ও দলের প্রয়োজন মত আমরা খেলতে চেয়েছিলাম এবং গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল আমরা ফলাফল নিয়ে ভাবছি না এবং আমাদের স্বাভাবিক খেলাটি খেলার চেষ্টা করেছি।’
শান্ত জানান, আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে জয়ের ধারা অব্যাহত রেখে ২-+০ ব্যবধানে সিরিজ জয়ের লক্ষ্য বাংলাদেশের।
২০১০ সাল থেকে ওয়ানডেতে কখনও বাংলাদেশকে হারাতে পারেনি আয়ারল্যান্ড। এখন পর্যন্ত ওয়ানডেতে ১৫বার মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ ও আয়ারল্যান্ড। এরমধ্যে ১০টিতে জিতেছে এবং দুটিতে হেরেছে বাংলাদেশ। তিনটি ম্যাচ বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হয়।
এম/
খবরটি শেয়ার করুন