শুক্রবার, ৫ই জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২১শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

৬ কোটি টাকার ফুল বেচাকেনার আশায় যশোরের চাষিরা

নিউজ ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০৯:৫৯ অপরাহ্ন, ১৩ই ডিসেম্বর ২০২৩

#

ছবি-সংগৃহীত

চলতি মৌসুমে চাষিরা প্রায় ৬ কোটি টাকার ফুল বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছে কৃষি বিভাগ। ফুলের রাজধানী খ্যাত যশোরের গদখালিতে গাছ ও ফুলের নিবিড় পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। মৌসুমের শুরুতেই চাষিরা ফুলের বাজার ধরতে উঠেপড়ে লেগেছেন। গত বছর মৌসুমে প্রায় ৫ কোটি টাকার ফুল বিক্রি হয় বলে জানিয়েছেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মাসুদ হোসেন পলাশ। 

ফুলক্ষেতের পাশাপাশি গদখালিতে গড়ে ওঠা বিনোদনকেন্দ্র ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের প্রস্তুতিও চোখে পড়ার মতো। চলতি মৌসুমে ব্যবসায় সফল হবেন এমন স্বপ্ন দেখছেন যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালির চাষিরা। কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না থাকায় লাভ বেশি হবে এই আশায় বুক বাঁধছেন তারা। তবে একই সময় নির্বাচনের মৌসুম হওয়ায় রাজনৈতিক অস্থিরতার আশঙ্কাও রয়েছে তাদের। 

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্যমতে, জেলায় প্রায় দেড় হাজার হেক্টর কৃষি জমিতে সাত হাজার কৃষক ফুল চাষের সাথে জড়িত। দেশের মোট ফুলের চাহিদার ৭৪ শতাংশ এই জেলা থেকে সরবরাহ করা হয়। প্রতিবছর ডিসেম্বর মাস থেকে ফুলের চাহিদা ও বিক্রি ক্রমাগত বাড়তে থাকে। একইসাথে বাড়তে থাকে ফুলের দামও।

প্রতিবছর ১৪ই ডিসেম্বর শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস, ১৬ই ডিসেম্বর বিজয় দিবস, ২৫শে ডিসেম্বর বড়দিন, থার্টিফাস্ট নাইট, ইংরেজি নববর্ষ, ১৪ই ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ভালোবাসা দিবস ও বসন্ত উৎসব, ২১শে ফেব্রুয়ারি শহিদ দিবস ও ২৬শে মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবসসহ বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি অনুষ্ঠানকে টার্গেট করে মোটা অংকের ফুল বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা থাকে গদখালির ফুলচাষিদের। চলতি বছরে ১৪ই ডিসেম্বর শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস ও ১৬ই ডিসেম্বর বিজয় দিবসকে ঘিরে ফুল বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় দেড় কোটি টাকা। 

যশোরের গদখালি ফুলের পাইকারি বাজার ঘুরে দেখা যায়, এই বাজারে গোলাপ বিক্রি হচ্ছে প্রতি পিস ৪-৫ টাকা, চন্দ্রমল্লিকা প্রতিপিস ৩-৪ টাকা, গাদাফুল প্রতি হাজার ৪০০-৫০০ টাকা, রজনীগন্ধা প্রতিপিস ৩-৪ টাকা, ঝাউ প্রতিপিস মানভেদে ৫০-১০০ টাকা, জারবেরা প্রতিপিস ১০-১২ টাকা। ভালো দামে ফুল বিক্রি করে সন্তুষ্ট চাষি ও ব্যবসায়ীরা।

গদখালি থেকে পানিসারা ফুল মোড় পর্যন্ত বিভিন্ন বাগান, ফুলের সেড ঘুরে দেখা যায়, আসন্ন দিবসগুলোকে উদ্দেশ্য করে ফুলের বাজার ধরতে বাগান পরিচর্যার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষি এবং কর্মচারীরা।

পানিসারা এলাকার ফুলচাষি ইসমাইল হোসেন বলেন, এ বছর চন্দ্রমল্লিকা, গোলাপ আর গাদা ফুলের চাষ করেছি। চাষের পরিমাণ কম হলেও এ বছর মোটামুটি ভালো দাম পেয়েছি। তবে হরতাল-অবরোধে দ্বিগুণ গাড়িভাড়া দিয়ে রাজধানীসহ বিভিন্ন জেলায় ফুল সরবরাহ করতে হচ্ছে। তিনি দশ বিঘা জমিতে বিভিন্ন জাতের ফুল ও চারা চাষ করেছেন। 

ফুলচাষি সাইফুল ইসলাম এ বছর ১ বিঘা জমিতে জারবেরা, রজনীগন্ধার চাষ করেছেন। তিনি বলেন, এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আমরা ভালো দাম পাচ্ছি। সেটা বজায় থাকলে ও দেশের পরিস্থিতি অস্বাভাবিক না হলে অনুষ্ঠান বা দিবসগুলোতে ভালো লাভ হবে। 

আরো পড়ুন: শীতের সবজি যেভাবে সংগ্রহ করবেন

ঝিকরগাছা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মাসুদ হোসেন পলাশ জানান, যশোরের গদখালি এলাকায় প্রায় সাড়ে ৬শ হেক্টর জমিতে ফুলের চাষ হয়। সাত হাজার কৃষক এই ফুলচাষের সাথে জড়িত। গত মৌসুমে এই এলাকা থেকে প্রায় ৫ কোটি টাকার ফুল বেচাকেনা হয়েছে। এ বছর প্রায় ৬ কোটি টাকার ফুল বেচাকেনা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এসি/ আই.কে.জে/


যশোরের চাষিরা

খবরটি শেয়ার করুন