বঙ্গভবনের অধ্যায় শেষ করে বিদায় নিচ্ছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। আজ আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় নেবেন। গতকাল রোববার বঙ্গভবনে আবদুল হামিদের শেষ কার্যদিবস ছিল। পারিবারিক সূত্রে জানিয়েছে, বঙ্গভবন থেকে বেরিয়ে আবদুল হামিদ রাজধানীর নিকুঞ্জে নিজ বাসা ‘রাষ্ট্রপতি লজে’ উঠবেন। সেখানে পরিবারের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ও অন্যান্য সামগ্রী স্থানান্তর করা হয়েছে।
২০১৩ সালে প্রথমে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি ও পরে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব নেওয়ার পর বঙ্গভবনে দুই মেয়াদে কেটেছে ১০ বছরেরও বেশি সময়। সৌভাগ্যবান এ ব্যক্তিত্বের আজ বিদায়ের পালা। নতুন ইতিহাস গড়ে প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিক বিদায়ী সংবর্ধনা দেওয়া হচ্ছে আবদুল হামিদকে।
রাস্তায় ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে বিদায় জানাবেন বঙ্গভবনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। বাংলাদেশের ৫২ বছরের ইতিহাসে এ প্রথম কোনো রাষ্ট্রপতির বিদায়ের দিনে এমন সংবর্ধনাপূর্ণ বিদায় আয়োজন। এর আগে, কোনো রাষ্ট্রপতিকে নিজেদের আয়োজনে বিদায় জানানোর সুযোগ হয়নি বঙ্গভবনের। এবার সেই সুযোগ পেয়ে কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা বিশাল আয়োজনের প্রস্তুতি নিয়েছেন।
বঙ্গভবনের প্রতিটি বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হবে ফুলের শুভেচ্ছা। নতুন রাষ্ট্রপতির শপথ এবং বর্তমান রাষ্ট্রপতির বিদায় অনুষ্ঠানে থাকবেন এক হাজারের বেশি অতিথি।
রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব জয়নাল আবেদীন জানান, বর্তমান রাষ্ট্রপতি নতুন রাষ্ট্রপতিকে স্বাগত জানাবেন। নতুন রাষ্ট্রপতি শপথ নেওয়ার পর বর্তমান রাষ্ট্রপতির চেয়ারে বসবেন। আর শপথ নেওয়ার আগে নয়া রাষ্ট্রপতি যে চেয়ারে বসেছিলেন, সেখানে বসবেন বিদায়ী রাষ্ট্রপতি। এ সময় তিনি রাষ্ট্রপতি কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে নতুন রাষ্ট্রপতিকে পরিচয় করিয়ে দেবেন।
বিদায় অনুষ্ঠানের শুরুতেই আবদুল হামিদকে বঙ্গভবনের ক্রেডেনশিয়াল গ্রাউন্ডে দেওয়া হবে গার্ড অব অনার। পরে বঙ্গভবনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিতিতে ফুলে সজ্জিত একটি খোলা জিপে ফোয়ারা এলাকা থেকে প্রধান ফটকের দিকে যাত্রা করবেন রাষ্ট্রপতি। এ সময় তার গাড়ির সামনে থাকবে পুলিশের বিশেষ অশ্বারোহী দল।
বঙ্গভবনের কর্মকর্তারা গাড়ির সামনে রশি বেঁধে রাষ্ট্রপতির গাড়ি টেনে নিয়ে যাবেন মূল ফটক পর্যন্ত। দুই পাশে বঙ্গভবনের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা দাঁড়িয়ে এ সময় সড়কে ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে রাষ্ট্রপতিকে বিদায়ের আয়োজনে অংশ নেবেন।
মূল আনুষ্ঠানিকতা শেষ হওয়ার পরে আবদুল হামিদ বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনীর (এসএসএফ) তত্ত্বাবধানে রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে ভিভিআইপি মোটর শোভাযাত্রায় রওনা করবেন নতুন ঠিকানায়। বঙ্গভবন ছেড়ে আবদুল হামিদ উঠবেন রাজধানীর নিকুঞ্জে তার নিজ বাড়িতে। এরই মধ্যে আসবাবপত্রসহ সব সরঞ্জাম সেই বাসায় স্থানান্তর করা হয়েছে।
আবদুল হামিদকে সর্বোচ্চ সম্মান ও রাষ্ট্রীয় প্রটোকল অনুযায়ী নিকুঞ্জের বাসায় নিয়ে যাওয়া হবে। এরই মধ্যে ওই এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার আর বাইরের মানুষের প্রবেশাধিকার সীমিত করা হয়েছে।
কিশোরগঞ্জের সন্তান আবদুল হামিদ ২০১৩ সালের মার্চ মাসে অস্থায়ী ও ২৪ এপ্রিল প্রথম দফায় দেশের ২০তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেন। এরপর ২০১৮ সালে দ্বিতীয় মেয়াদে ২১তম রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব নেন।
এম/
আরো পড়ুন:
রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নিলেন মো. সাহাবুদ্দিন
খবরটি শেয়ার করুন