সোমবার, ২৩শে ডিসেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
৯ই পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইয়া রাসূলাল্লাহ্, আপনাকে যদি স্বচক্ষে একটিবার দেখতে পারতাম

সাহিত্য ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০৪:৩২ অপরাহ্ন, ২৬শে সেপ্টেম্বর ২০২৩

#

ইয়া রাসূলাল্লাহ্ (সা:)

অসংখ্য, অজস্র দরুদ ও সালাম আপনার প্রতি। আমি আপনার ভাই বলছি। সুদূর বাংলাদেশ থেকে। আপনার একজন অযোগ্য, অধম, নাফরমান উম্মত। আশা করি আল্লাহর মেহমানখানায় অনেক ভালো আছেন। আমাকেও আপনার রব অনেক ভালো রেখেছেন। আপনার উম্মত হিসেবে আপনার রব আমাকে অনেক সম্মানিত করেছেন। কিন্তু আপনাকে ছাড়া মনটা একদম ভালো নেই। আপনার যুগ থেকে কতদূরে আছি।

মনের মধ্যে শুধু একটাই আফসোস নিয়ে ঘুরি, আপনাকে যদি স্বচক্ষে দেখতে পারতাম। যদি এমন হতো, হযরত জারির ইবনে আব্দুল্লাহ (রা:)’র মতো আমি যখনই আপনার কাছে আসতাম তখনই আপনি আমাকে দেখে মুচকি হাসি দিতেন। অথবা জাবির ইবনে সামুরা (রা:)’র মতো একবার চাঁদের দিকে তাকাতাম, একবার আপনার দিকে। একবার আপনার দিকে একবার চাঁদের দিকে। আবার, বারবার। তারপর আমি সিদ্ধান্ত নিতাম, চাঁদের চেয়ে আপনিই বেশি সুন্দর। প্রতিদিন আপনার কাছে বসে চাতক পাখির ন্যায় চেয়ে থেকে আপনার মুখ থেকে তাওহীদের বাণী শুনতাম। জান্নাত-জাহান্নামের বর্ণনাগুলো শুনতাম এবং নিজেকে সেইসব জায়গায় উপলব্ধি করতাম। কিন্তু সেই সৌভাগ্য তো আমার হয়নি। 

এমনকি আপনার রওযা মোবারক থেকেও অনেক দূরে আছি। প্রতিদিন আপনার শিয়রে গিয়ে একটু মন খুলে সুখ-দুঃখগুলো শেয়ার করতাম। আপনার কাছে মনের জমা দুঃখগুলো চোখের পানির মাধ্যমে ঝরে পড়তো। তাও পারি না। যখন মনের আকাশে কালো মেঘ জমে, তখন আপনার নামের দরুদের বারিধারা বর্ষণ করি মনকে শান্ত করার জন্য। আপনার সেই হাদীসটি যখন পড়ি, যেখানে আপনি একদিন বসে বসে কান্না করছিলেন। তখন সাহাবীরা এসে আপনাকে জিজ্ঞাসা করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্ (সা:) ! আপনি কান্না করছেন কেন? তখন আপনি উত্তর দিলেন, “আমার ভাইদের অনেক দেখতে ইচ্ছা করছে।” তখন সাহাবীরা আপনাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “আমরা কি আপনার ভাই নই?” তখন আপনি বললেন, “না, তোমরা আমার ভাই নও। তোমরা আমার সাহাবী। আমার ভাই হলো তারা, যারা আমার পরে আসবে। কিন্তু আমাকে না দেখে তারা বিশ্বাস করবে”। 

ইয়া রাসূলাল্লাহ্ (সা:) আপনি আমাকে ভাই বলে সম্বোধন করেছেন। আমি যখনই আপনার এই হাদীসটি শুনি, তখনই আমার চোখ অশ্রুশিক্ত হয়ে যায়। মনটা অস্থির হয়ে পড়ে। বারবার আপনার এই বাণীটা শুনতে ইচ্ছা করে। ইয়া রাসূলাল্লাহ্ (সা:) ! আপনার এই উম্মতের অবস্থা খুবই খারাপ। আপনার হাতে গড়া এই নন্দিত জাতি আজ নিন্দিত গন্তব্যে ছুটছে। তারা আপনাকে প্রতিনিয়িত অনেক কষ্ট দিচ্ছে। তারা আপনার রবের নাফরমানিতে লিপ্ত হয়ে পড়েছে। আমার এই পরিবেশে দম বন্ধ হয়ে আসছে ইয়া রাসূলাল্লাহ্ (সা:) ! আপনি আমাকে আপনার কাছে ডেকে নিন। আমি আর পারছি না এইভাবে চলতে। আপনি আপনার রবের কাছে আমার জন্য ফরিয়াদ করে আপনার কাছে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দিন। আমার একটি গোপন ইচ্ছা আছে, কোনো এক ভোরে আপনার রওজার পাশে আমার জীবনের সফর শেষ হবে। ফজরের নামাজের পরে সবাই আমাকে নিয়ে গিয়ে আপনার কাছাকাছি কোনো এক কবরস্থানে দাফন করবে। তারপর কিয়ামত পর্যন্ত আপনার কাছেই পড়ে থাকবো। 

ইয়া রাসূলাল্লাহ্ (সা:) ! আপনি হয় আমাকে ডেকে নিন, নয়তো আমাকে এসে নিয়ে যান। এই অবাধ্যতায় পরিপূর্ণ ফিতনাময় দুনিয়ায় আর থাকতে পারছি না। আপনি আমাকে ডেকে নিন আপনার কাছে। এই ফরিয়াদ নিয়েই আমি আমার ইতি টানলা-ম।  

“আল্লহুম্মা সল্লি ওয়া সাল্লিম ’আলা নাবিয়্যিনা মুহাম্মাদ, সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।”

--ইতি  

 আপনার আদরের উম্মত    

 আব্দুল্লাহ্ আল মারুফ

আরও পড়ুন : মাত্র একটি চিঠিতে বদলে গেছে সেসব সাহিত্যিকের জীবন

এস/ আই.কে.জে

রাসূলাল্লাহ্ হাদীস

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন