ছবি: সংগৃহীত
গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কর্মসূচিতে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ মহাপরিদর্শক বাহারুল আলম গতকাল বুধবার (১৬ই জুলাই) গণমাধ্যমকে জানান, গোপালগঞ্জের ঘটনায় প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করেনি পুলিশ। অথচ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওচিত্রে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার ও গুলির শব্দ শোনা গেছে। বেসরকারি সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) এক বিবৃতিতে এ বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছে। তারা বলেছে, তাহলে কারা এই আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করল?
আজ বৃহস্পতিবার (১৭ই জুলাই) দেওয়া এক বিবৃতিতে এ প্রশ্ন তোলে তারা। আসক মনে করে, এ প্রশ্নের সুস্পষ্ট ও প্রামাণ্য ব্যাখ্যা দেওয়া না হলে জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি, ভয় ও প্রশাসনের প্রতি অনাস্থা আরও বাড়বে।
আসক মনে করে, মতপ্রকাশ ও শান্তিপূর্ণভাবে সভা সমাবেশ করার অধিকার বাংলাদেশের সংবিধানে নিশ্চিত মৌলিক অধিকার। রাষ্ট্র ও প্রশাসনের দায়িত্ব হলো এই অধিকার সুরক্ষা করা এবং যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর বা অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির সময় উত্তেজনা প্রশমন ও মানুষের জীবনরক্ষা নিশ্চিত করা। একই সঙ্গে অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ থেকে বিরত থাকা। গোপালগঞ্জে যেভাবে জনসাধারণের ওপর বলপ্রয়োগ ও গুলি চালানোর ঘটনা ঘটেছে, তা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মানদণ্ড ও সংবিধান—উভয়েরই চরম লঙ্ঘন, যা একান্তই অগ্রহণযোগ্য।
গণমাধ্যম থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে বিবৃতিতে বলা হয়, গতকাল গোপালগঞ্জ পৌর পার্কে এনসিপির পূর্বঘোষিত একটি রাজনৈতিক সমাবেশ শেষে হঠাৎ করে উত্তেজনা তৈরি হয় এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগের একটি অংশ এই সমাবেশে হামলা চালায়। হামলার একপর্যায়ে বিভিন্ন স্থানে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে। এরপর সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়লে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা স্থানীয় জনতার ওপর বলপ্রয়োগ করেন এবং প্রকাশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করেন।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এ ঘটনায় দীপ্ত সাহা (২৫), রমজান কাজী (১৮), সোহেল মোল্লা (৪১) ও ইমন (২৪) নামের চারজন নিহত হন। আহত হন আরও অনেকে, যাদের কেউ কেউ গুলিবিদ্ধ হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
বিবৃতিতে বলা হয়, অবিলম্বে একটি স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও পূর্ণাঙ্গ তদন্ত কমিটি গঠন করে ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ অনুসন্ধান করতে হবে। এ ছাড়া এনসিপির নেতা ও সমর্থকদের ওপর ন্যক্কারজনক হামলার পেছনে দায়ীদের চিহ্নিত করার পাশাপাশি সমাবেশে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্বে থাকা কর্তৃপক্ষের কোনো গাফিলতি ছিল কী না, তা খতিয়ে দেখতে হবে। একই সঙ্গে এ ঘটনায় আহত ব্যক্তিদের সুচিকিৎসা ও নিহত ব্যক্তিদের পরিবারের প্রতি রাষ্ট্রকে দায়িত্বশীল আচরণ নিশ্চিত করতে হবে।
খবরটি শেয়ার করুন