সোমবার, ১৮ই আগস্ট ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৩রা ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** হায়দরাবাদে বাংলাদেশি কিশোরী উদ্ধার, বেরিয়ে আসছে ভারত–বাংলাদেশ মানব পাচার চক্রের তথ্য *** হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার মাই টিভির চেয়ারম্যান নাসির উদ্দীন *** বাংলাদেশে ঢোকার অপেক্ষায় রাখাইন সীমান্তে আরও ৫০ হাজার রোহিঙ্গা *** অধ্যাপক আবুল বারকাতের জামিনে মুক্তি চেয়ে ১২২ নাগরিকের বিবৃতি *** যুদ্ধ বন্ধে পুতিনের প্রস্তাবের ‘পক্ষে’ ট্রাম্প *** অর্থ পাচার করে বিদেশে গড়ে তোলা ৪০ হাজার কোটি টাকার সম্পদের সন্ধান *** বাংলাদেশ যাতে মৌলবাদের অভয়ারণ্যে পরিণত না হয়: তারেক রহমান *** আওয়ামী লীগের সরকারের বিষয়ে জুলাই সনদে দাবিটা অতিরঞ্জিত: ডেভিড বার্গম্যান *** সাড়ে ৫ মাস পর হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি *** পরিবেশ ছাড়পত্র নেওয়ার শর্তে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রকল্প পাস

জেড আই পান্নার শেখ হাসিনার আইনজীবী হতে চাওয়া, যা বলছেন জাহেদ উর রহমান

নিজস্ব প্রতিবেদক

🕒 প্রকাশ: ১১:৪৭ অপরাহ্ন, ১৩ই আগস্ট ২০২৫

#

ছবি: সংগৃহীত

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের একটি মামলার পলাতক আসামি ও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে আইনজীবী হতে চেয়েছিলেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী, মানবাধিকারকর্মী জেড আই খান পান্না। তার আবেদন গতকাল মঙ্গলবার (১২ই আগস্ট) খারিজ করে দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। বিষয়টি নিয়ে দেশের টিভি চ্যানেল, অনলাইন সংবাদমাধ্যম ও দৈনিক পত্রিকাগুলোর অনলাইন সংস্করণে গতকাল প্রতিবেদন প্রচারিত হয়। এসব সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি নিয়ে তাৎক্ষণিক এক ভিডিও সমালোচনা করেন কলামিস্ট জাহেদ উর রহমান।

ভিডিওতে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্নার কড়া সমালোচনা করেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক জাহেদ উর রহমান। তিনি বলেন, জেড আই খান পান্না শেখ হাসিনার পক্ষে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে লড়তে চেয়েছিলেন; কিন্তু সেটি সম্ভব হচ্ছে না। বিভিন্ন গণমাধ্যম সংবাদ প্রচার করেছে, যেখানে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনার পক্ষে আইনি লড়াইয়ের জন্য তিনি আবেদন করেছিলেন। কিন্তু ট্রাইব্যুনাল মন্তব্য করেছেন—‘ট্রেন ছেড়ে যাওয়ার পর স্টেশন মাস্টারকে বলে ট্রেনে ওঠার সুযোগ নেই। অর্থাৎ, ট্রাইব্যুনাল ইতিমধ্যে আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছে। এখন নতুন কাউকে সুযোগ দেওয়ার আর অবকাশ নেই।

গতকাল নিজের ইউটিউব চ্যানেলে 'জাহেদ টেকস'এ আপলোড করা ভিডিওতে জাহেদ উর রহমান আইনজীবী পান্নাকে নিয়ে এসব কথা বলেন। আজ বুধবার (১৩ই আগস্ট) রাত ১০টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তার ভিডিওটি দেখা হয়েছে ৩১ হাজার বার। এতে মন্তব্য এসেছে ৪৭০টি। 'জেড আই খান পান্না লড়ুক হাসিনার পক্ষে' শিরোনামে ভিডিওটি আপলোড করা হয়েছে। তার ভিডিওর বক্তব্য কেন্দ্র করে দর্শক ও নেটিজেনদের মধ্যে নানামুখী আলোচনা চলছে। অনেকে বলছেন, জাহেদ উর রহমানের উপস্থাপনায় সহনশীলতার অভাব আছে। তার বক্তব্য একপেশে, আক্রমণাত্মক। জেড আই খান পান্নার রাজনৈতিক অবস্থানের সঙ্গে দ্বিমত থাকলেও প্রবীণ নাগরিক হিসেবে তার প্রতি বক্তব্যে অন্তত শ্রদ্ধাবোধের প্রকাশ ঘটা উচিত ছিল। 

জাহেদ উর রহমান ভিডিওতে বলেন, ‘পান্নাকে আমরা মূলত ৫ই আগস্টের পর থেকে চিনতে শুরু করেছি। বলা যেতে পারে, তিনি একজন আওয়ামী লীগপন্থী অ্যাক্টিভিস্ট। কেন এটা বলা হচ্ছে? কারণ, একজন প্রতিষ্ঠিত আইনজীবী যখন নিজের আইনজীবী পরিচয়ের বাইরে গিয়ে রাজনৈতিক অবস্থান থেকে বক্তব্য দেন, তখন এমন ধারণা হতেই পারে।’ জাহেদ উর রহমান বলেন, ‘একজন ম্যাজিস্ট্রেট বা সরকারি কর্মকর্তা ফেসবুকে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে (অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা) নিয়ে কুৎসিত ভাষায় আক্রমণ করেছিলেন, তখন তাকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছিল। সেই সময় পান্না এই বরখাস্তের কঠোর সমালোচনা করেছিলেন এবং বলেছিলেন এটি ওই কর্মকর্তার বাকস্বাধীনতা।'

তিনি বলেন, 'কিন্তু একজন সরকারি কর্মচারী সংবিধান ও সরকারি চাকরি বিধিমালার আওতাধীন থাকেন। তারা যা পারেন, যা পারেন না, তার সুস্পষ্ট সীমাবদ্ধতা আছে। সেই কর্মকর্তার ফেসবুক পোস্টে যেভাবে সরকারের প্রধানকে আক্রমণ করা হয়েছিল, তা ছিল পরিষ্কারভাবে আইন ও নৈতিকতার লঙ্ঘন। একজন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী যদি সেটাকে বাকস্বাধীনতা বলে রক্ষা করতে চান, তাহলে হয় তার আইন বোঝার ঘাটতি আছে অথবা তিনি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’

তিনি বলেন, শেখ হাসিনার পক্ষে পান্নাকে আইনি লড়াইয়ের সুযোগ দেওয়া উচিত। আমি জানি না আইনের দৃষ্টিতে ট্রাইব্যুনাল যা বলেছেন, সেটাই হয়তো যথাযথ। কিন্তু আমি মনে করি, বিশেষ বিবেচনায় হলেও যদি সম্ভব হয়, তাহলে তাকে এই সুযোগ দেওয়া উচিত ছিল। শুধু পান্না নন, বিশ্বের যেকোনো প্রথিতযশা আইনজীবী যদি শেখ হাসিনার পক্ষে লড়তে চান, তাদের সুযোগ দেওয়া উচিত। কারণ, আমরা শেখ হাসিনার বিচারকে কোনোভাবেই প্রশ্নবিদ্ধ করতে চাই না।

তিনি আরো বলেন, ‘এই একই ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জামায়াত নেতাদের বিচার হয়েছিল, তাদের অনেককে মৃত্যুদণ্ডও দেওয়া হয়েছে। এটা আদালতের রায় ছিল, তবে আমরা জানি, এক্সিকিউটিভ ডিভিশনের প্রভাব ছিল না—এমনটা বলা কঠিন। আজ শেখ হাসিনার বিচার হচ্ছে। আমরা চাই না কেউ এটা নিয়ে বলুক, শেখ হাসিনার পক্ষের ভালো আইনজীবীকে সুযোগ দেওয়া হয়নি। কারণ অনেক সাধারণ মানুষ আইনি প্রক্রিয়া বোঝেন না। তখন তারা ধরে নিতে পারেন, এটা সরকারের ষড়যন্ত্র।’

জাহেদ উর রহমান বলেন, বিশেষ বিবেচনায় হলেও যদি আইনি কাঠামোর মধ্যে সম্ভব হয় পান্নাকে শেখ হাসিনার পক্ষে লড়ার সুযোগ দেওয়া উচিত। আমরা চাই, বিচার যেন স্বচ্ছ হয়, প্রশ্নবিদ্ধ না হয়। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে যদি তথ্য-প্রমাণ শক্তিশালী হয়, তাহলে শাস্তি হওয়াটা সময়ের ব্যাপার। সেটা ঠেকাতে কেউ পারবে না। কিন্তু বিচার প্রক্রিয়ায় যেন কোনো প্রশ্ন না ওঠে, সেই স্বচ্ছতা বজায় রাখা জরুরি।

জেড আই খান পান্না জাহেদ উর রহমান

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন