সোমবার, ১৮ই আগস্ট ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৩রা ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** হায়দরাবাদে বাংলাদেশি কিশোরী উদ্ধার, বেরিয়ে আসছে ভারত–বাংলাদেশ মানব পাচার চক্রের তথ্য *** হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার মাই টিভির চেয়ারম্যান নাসির উদ্দীন *** বাংলাদেশে ঢোকার অপেক্ষায় রাখাইন সীমান্তে আরও ৫০ হাজার রোহিঙ্গা *** অধ্যাপক আবুল বারকাতের জামিনে মুক্তি চেয়ে ১২২ নাগরিকের বিবৃতি *** যুদ্ধ বন্ধে পুতিনের প্রস্তাবের ‘পক্ষে’ ট্রাম্প *** অর্থ পাচার করে বিদেশে গড়ে তোলা ৪০ হাজার কোটি টাকার সম্পদের সন্ধান *** বাংলাদেশ যাতে মৌলবাদের অভয়ারণ্যে পরিণত না হয়: তারেক রহমান *** আওয়ামী লীগের সরকারের বিষয়ে জুলাই সনদে দাবিটা অতিরঞ্জিত: ডেভিড বার্গম্যান *** সাড়ে ৫ মাস পর হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি *** পরিবেশ ছাড়পত্র নেওয়ার শর্তে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রকল্প পাস

ভোট সুষ্ঠু হলেও হতে পারে একতরফা নির্বাচন!

এসএম শামীম

🕒 প্রকাশ: ০৬:৫৯ অপরাহ্ন, ১৪ই আগস্ট ২০২৫

#

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে জোরালো উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এ বি পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ। তিনি মনে করছেন, এবারের নির্বাচনটি সুষ্ঠু হলেও কার্যত হতে পারে একতরফা, এবং এটি বিএনপির জন্য রাজনৈতিকভাবে সম্মানজনক হবে না।

গতকাল বুধবার (১৩ই আগস্ট) গ্লোবাল টেলিভিশনের টকশোতে অতিথি হিসেবে অংশ নিয়ে তিনি এসব মন্তব্য করেন। আজ বৃহস্পতিবার (১৪ই আগস্ট) দুপুর দেড়টা পর্যন্ত টেলিভিশনের নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে ভিডিওটি দেখা হয়েছে প্রায় ৪ লাখ ৭৫ হাজার বার।

‘একতরফা হলেও এটাই বাস্তবতা’

ব্যারিস্টার ফুয়াদ বলেন, ‘বিএনপি এখন এমন এক জায়গায় আছে, যেখানে নির্বাচনটা কার্যত একতরফা হয়ে যেতে পারে। ১৯৭৩ আর ২০১৮ সালের নির্বাচন যেভাবে একতরফাভাবে হয়ে গেছে, এবারের নির্বাচনও তেমন হতে পারে। তবে পার্থক্য হলো—এবার নির্বাচনটা হতে পারে সুষ্ঠু, কিন্তু একতরফা।’

তার মতে, বিএনপি এই মুহূর্তে ইতিহাসে প্রথমবারের মতো এমন অবস্থায় রয়েছে, যেখানে—বিরোধী সব দল একসাথে হলেও তাদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার মতো ১০০ প্রার্থী নেই।  ‘বিএনপির সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে বিএনপি নিজে। বিদ্রোহী প্রার্থী নিয়ে নিজেদের মধ্যে লড়াই শুরু হয়ে গেছে। ১৩০-১৩৫টি আসনে সিরিয়াস বিদ্রোহী প্রার্থী আছে, যারা একে অপরের সঙ্গে লড়াই করবে।’

ফুয়াদ প্রশ্ন তোলেন, ‘সে রকম একটি নির্বাচনে যেখানে মাঠ ফাঁকা, ২৮০টা সিট জিতে নেওয়া যাবে—এই ধরনের ফলাফল বিএনপির জন্য কতটা সম্মানজনক হবে?’

জুলাই সনদ বাস্তবায়নে বিভক্তি

ব্যারিস্টার ফুয়াদ বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে গভীর মতানৈক্য রয়েছে। বিএনপি যে প্রস্তাব দিয়েছে—আগামী সংসদ দুই বছরের মধ্যে সংস্কারগুলো বাস্তবায়ন করবে—তা নিয়ে বাকিরা একমত নয়।

‘আমরা যারা বাকি দল, তারা মনে করি—যেসব বিষয়ে আমরা ইতোমধ্যে একমত হয়েছি, সেগুলো বাস্তবায়নে এত দীর্ঘ সময় কেন লাগবে? যদি আমরা এখনই সিদ্ধান্ত নিই যে, নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসন ৫০ থেকে ১০০ করা হবে, তাহলে সেটা ২০৩২ পর্যন্ত অপেক্ষা না করে ২০২৬ সালেই কেন করা যাবে না?’

তিনি আরও বলেন, ‘যদি সিদ্ধান্ত হয় যে নারীদের অন্তত ৫% আসনে সরাসরি মনোনয়ন দিতে হবে, তাহলে সেটিও কেন ২০৩২ সালে হবে—এখনই কেন নয়?’

ফুয়াদ বলেন, সব দল নির্বাচনে অংশ নিলেও সেটি একমুখী হয়ে যেতে পারে, কারণ অনেক বড় রাজনৈতিক শক্তি এখনো অনিশ্চয়তায় রয়েছে। জামায়াত ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশকে তিনি ‘বিএনপির পর দেশের সবচেয়ে বড় দুটি দল’ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, তারা সংসদে পিআর (প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন) চায়। যদি এই দাবিতে তারা অনড় থাকে এবং নির্বাচন বর্জন করে, এনসিপিও যদি একইভাবে সংস্কার নিয়ে অনড় থাকে, তাহলে একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনও একতরফা হয়ে উঠতে পারে।

বিকল্প বিরোধী দলের বিকল্প প্রস্তুতি?

এই পরিস্থিতিতে বিএনপি বা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার হয়তো কিছু ছোট রাজনৈতিক দলকে ৩-৪টি আসনে সমর্থন দিয়ে তাদের বিরোধী দলে পরিণত করতে পারে, এমন আশঙ্কার কথাও জানান ফুয়াদ। তবে সেটি বিএনপি এবং দেশের রাজনৈতিক পরিবেশের জন্য কতটা সম্মানজনক হবে—সে প্রশ্ন রাখেন তিনি।

তিনি আরও আশঙ্কা প্রকাশ করেন, যদি একটি অংশগ্রহণবিহীন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, তাহলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এবং বিশেষ করে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এই দায় নিতে নারাজ হতে পারেন। এমন পরিস্থিতিতে তিনি দায়িত্ব ছেড়ে দিতে পারেন এবং নির্বাচনকালীন একটি সরকার করে বিদায় নিতে পারেন।

‘সমাধান সম্ভব, দরকার কৌশলী নেতৃত্ব’

তবে ব্যারিস্টার ফুয়াদ আশাবাদী যে, এই সংকটগুলোর সমাধান সম্ভব, এবং এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রনায়কসুলভ নেতৃত্ব প্রদর্শনের প্রয়োজন বিএনপির। তিনি বলেন, ‘যেসব দাবিতে জামায়াত, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ বা এনসিপি আন্দোলন করছে, সেগুলো আসলে বাস্তবায়নযোগ্য। দরকার শুধু কিছু সেক্রিফাইস এবং দূরদর্শী সিদ্ধান্ত।’ তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘এই সুযোগটা যদি বিএনপি না নেয়, তাহলে ভবিষ্যতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্তও বিএনপিই হবে।

ব্যারিস্টার ফুয়াদ

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন