প্রতীকী ছবি
শৈশব-কৈশোর দুরন্তপনার আরেক নাম। মাঠ, শহরের অলিগলি, বাড়ির উঠান, ছাদ কিংবা বারান্দায় নানা খেলাধুলায় সময়টা পার করার কথা। কিন্তু দিন দিন স্মার্টফোনের দুনিয়ায় বন্দী হয়ে পড়ছে বেশিরভাগ শিশুর শৈশব।
হয়তো খাওয়ানোর জন্য অথবা ব্যস্ত রাখার জন্য ছোট্ট শিশুর হাতে স্মার্টফোন তুলে দিয়েছেন অভিভাবক, তারপর ধীরে ধীরে সেই স্মার্টফোনের দুনিয়াতেই কখন যেন আটকা পড়েছে শিশু। জার্নাল অব দ্য হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড ক্যাপাবিলিটিতে প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, ১৩ বছর বয়সের আগে স্মার্টফোন ব্যবহার শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যের মারাত্মক ক্ষতি করছে।
১৩ বছরের কম বয়সী শিশুদের মধ্যে স্মার্টফোন ব্যবহারের সঙ্গে আত্মহত্যার চিন্তা, আবেগ নিয়ন্ত্রণে দুর্বলতা, মূল্যবোধহীনতা এবং বাস্তবতা থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার প্রবণতা লক্ষ করা গেছে। ছেলেশিশুদের চেয়ে মেয়েদের মধ্যে যা বেশি মাত্রায় দেখা গেছে। খবর সিএনএনের।
দিনের একটি বড় সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কাটায় এই শিশুরা, যা তাদের ঘুমের ব্যাঘাত ঘটানোর পাশাপাশি সাইবার বুলিংয়ের মতো নেতিবাচক অভিজ্ঞতার মুখোমুখি করে। গবেষণার ফলাফল এতটাই ভয়াবহ যে গবেষকেরা ১৩ বছরের কম বয়সী শিশুদের স্মার্টফোন এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার থেকে বিরত রাখতে বিশ্বব্যাপী বিধিনিষেধ আরোপের আহ্বান জানিয়েছেন।
আমেরিকার সামাজিক মনোবিজ্ঞানী ও লেখক জোনাথন হাইডট তার ‘দ্য অ্যাংশাস জেনারেশন’ বইয়ে শিশুদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করতে দেওয়ার জন্য ১৬ বছর বয়স পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বলেছেন। ব্রিটেনের একটি গবেষণায় দেখা যায়, বয়ঃসন্ধিকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করা কিশোরেরা এক বছরের মধ্যেই নিজের জীবনের প্রতি সন্তুষ্টি হারাতে থাকে।
স্মার্ট গ্যাজেটের এই যুগে শিশুকে সামাজিক যোগাযোগামাধ্যম থেকে দূরে রাখা মা-বাবার জন্য বেশ কঠিন। তবে সব মা-বাবা যদি একসঙ্গে এই উদ্যোগ নেন, তাহলে সফল হওয়া সম্ভব।
জে.এস/
খবরটি শেয়ার করুন