মঙ্গলবার, ২২শে জুলাই ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৭ই শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** ইস্তাম্বুলে শান্তি আলোচনায় বসতে যাচ্ছে রাশিয়া-ইউক্রেন *** গত বছর ব্রিটেনে আশ্রয়প্রার্থীদের শীর্ষে পাকিস্তানিরা, বাংলাদেশিরা চতুর্থ *** বিচার বিভাগ থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারপ্রধান নিয়োগে একমত বিএনপি-জামায়াত *** শিক্ষাসচিবকে প্রত্যাহার, জানালেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম *** মাইলস্টোনে আহতদের জন্য সিঙ্গাপুর থেকে আসছে চিকিৎসক দল: শ্রম উপদেষ্টা *** সেপ্টেম্বরের মধ্যে মিগ-২১ যুদ্ধবিমানের বহর বাতিল করবে ভারত *** বিমান বিধ্বস্ত হয়ে হতাহতের ঘটনায় আজ রাষ্ট্রীয় শোক *** সংসদে সংরক্ষিত আসন চায় দলিত সম্প্রদায় *** উত্তরায় বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নরেন্দ্র মোদির শোক *** সাগরিকার হ্যাটট্রিকে নেপালকে উড়িয়ে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ

বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে মোবাইল মানি, বাংলাদেশও পিছিয়ে নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক

🕒 প্রকাশ: ০৯:৫৪ পূর্বাহ্ন, ৩০শে এপ্রিল ২০২৩

#

প্রতীকী ছবি

বিভিন্ন ডিজিটাল সেবার অব্যাহত জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির পাশাপাশি মোবাইল মানি সেবা বিশ্বজুড়ে ধারণা বা পূর্বাভাসের চেয়ে দ্রুতগতিতে বাড়ছে। সম্প্রতি প্রকাশিত জিএসএমএর বার্ষিক প্রতিবেদনে (স্টেট অব দ্য ইন্ডাস্ট্রি রিপোর্ট অন মোবাইল মানি ২০২৩) এ কথা জানানো হয়েছে।

বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে জিএসএমএ প্রতি বছর এই প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এতে দেখা যাচ্ছে, মোবাইল মানি সেবা গ্রহণের হার প্রত্যাশার চাইতে এখন অনেক বেশি এবং বার্ষিক নিবন্ধিত মোবাইল মানি অ্যাকাউন্টের সংখ্যা ১৩ শতাংশ বেড়েছে। ২০২১ সালে যেখানে ১৪০ কোটি মোবাইল মানি অ্যাকাউন্ট ছিল, তা বেড়ে ২০২২ সালে ১৬০ কোটিতে পৌঁছায়। প্রথম ৮০ কোটি গ্রাহক পেতে এ  খাতের ১৭ বছর লেগেছে, কিন্তু পরবর্তী ৮০ কোটি গ্রাহক পেতে মাত্র পাঁচ বছর সময় লাগার বিষয়টি অত্যন্ত তাত্পর্যপূর্ণ।

২০২২ সালে মোবাইলে আর্থিক লেনদেনের পরিমাণ দৈনিক ৩৪৫ কোটি মার্কিন ডলারে পৌঁছায়, আগের বছর ২০২১ সালে যা ৩০০ কোটি হবে বলে আভাস দেয়া হয়েছিল। মোবাইল মানি লেনদেনের মোট মূল্যমান ২০২১ এবং ২০২২ সালের মধ্যে অবিশ্বাস্যভাবে ২২ শতাংশ বেড়েছে। ১ লাখ কোটি থেকে এটি প্রায় ১ লাখ ২৬ হাজার কোটিতে পৌঁছেছে।

তবে বিশ্বের অনেক এলাকায় সেবাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর কাছে নিরাপদ, ঝুঁকিমুক্ত ও কম খরচে আর্থিক সেবা পৌঁছে দিতে আরও কাজ করার প্রয়োজন রয়ে গেছে। বিশ্বজুড়ে এখনো ১৪০ কোটি মানুষ ব্যাংকিং সেবার আওতার বাইরে রয়েছে।

২০২৩ সালের প্রতিবেদনে দেখা যায়, বর্তমানে বিশ্বজুড়ে ৩১৫টি সচল মোবাইলনির্ভর আর্থিক সেবা চালু রয়েছে, যার মধ্যে ব্যক্তি থেকে ব্যক্তি (পিটুপি) অর্থ স্থানান্তর (মানি ট্রান্সফার) এবং ক্যাশ-ইন/ক্যাশ-আউট লেনদেন এখনো সবচেয়ে জনপ্রিয় সেবাগুলোর তালিকায় শীর্ষে রয়েছে।

মোবাইল মানি সেবা ব্যবহার করে বিভিন্ন বিল পরিশোধ বছরে ৩৬ শতাংশ বেড়েছে, যার গতি ছিল অন্য কোনো সেবা ব্যবহারের চাইতে দ্রুত। মোবাইল মানি শিল্প এই সেবার বিভিন্ন দিকের বৈচিত্র্যের প্রতি গুরুত্ব আরোপ অব্যাহত রেখেছে বিভিন্ন দেশের অর্থনীতির ডিজিটাল রূপান্তরে (ডিজিটালাইজেশন) গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। বিশ্ব যখন কোভিড-১৯ মহামারীর প্রভাব থেকে দ্রুত বেরিয়ে আসছে, মোবাইল মানি সেবাসমূহ তার টেকসই অগ্রগতি অব্যাহত রেখেছে। মহামারীর সময় এই খাতে অগ্রযাত্রায় নতুন মাত্রা যোগ হয়েছিল। কেবল মহামারীর সময় ৪০ কোটি নতুন অ্যাকাউন্ট যুক্ত হয়েছিল। এই দ্রুত অগ্রগতির নেপথ্যে রয়েছে নিম্ন ও মধ্য-আয়ের দেশগুলোর লাখো মানুষকে ডিজিটাল আর্থিক সেবার সুযোগ করে দিতে প্রযুক্তির ভূমিকা। এই অগ্রগতির ধারা অবাহত রয়েছে, যার প্রমাণ পুরো মাসজুড়ে (৩০ দিন) সচল অ্যাকাউন্টের সংখ্যা বৃদ্ধি। ২০২২ সালে এ সংখ্যা বেড়ে ৪০ কোটি ১০ লাখে পৌঁছেছে এবং এই  বার্ষিক বৃদ্ধির হার ১৩ শতাংশ।

প্রতিবেদনে আরও দেখা যায়, ২০২২ সালে মোবাইল মানি সেবা ব্যবহারের কারণে আন্তর্জাতিক মুদ্রা প্রবাহ বছরে ২৮ শতাংশ বেড়ে দুই হাজার ২০০ কোটি ডলারে পৌঁছেছে। মহামারীর সময় প্রবাসীদের অনেকে মোবাইল মানি সেবার মাধ্যমে আত্মীয়-স্বজনদের কাছে আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি অর্থ পাঠিয়েছেন সেনেগাল ও বাংলাদেশ এর গ্রাহকরা। তবে এই হার এখনো অনেক কম পাকিস্তানে (৬%), কেনিয়া (৭%) এবং ঘানায় (৯%)। ফলে আন্তর্জাতিক মুদ্রার প্রবাহ ২০২০ এবং ২০২১ সালে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়েছে। আর প্রেরকদের অনেকে মোবাইল মানি সেবা বেছে নিয়েছেন এর কার্যকারিতা, দ্রুতগতি, নিরাপত্তা ও কম খরচের কারণে। ২০২২ সালেও এই প্রবণতা অব্যাহত ছিল যদিও তার গতি কিছুটা কমে যায়।  মোবাইল মানি বিশ্বের ব্যাংকবিহীন, বিশেষ করে গ্রামীণ সম্প্রদায়ের মহিলাদের মধ্যে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি চালিয়ে যাচ্ছে, যেখানে মোবাইল মানি অ্যাক্সেস একটি রূপান্তরমূলক এবং ক্ষমতায়ন ভূমিকা পালন করতে পারে।

আরো পড়ুন: এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা আজ শুরু

তবে জিএসএমএর তথ্য-উপাত্ত অনুযায়ী মোবাইল মানি সেবার ক্ষেত্রে এখনো একটি  বড় জেন্ডার বৈষম্য রয়ে গেছে যা গত বছর বৃদ্ধির ইঙ্গিত মিলেছে, বিশেষত ভারত, ইন্দোনেশিয়া ও পাকিস্তানে। মোবাইল ফোনের মালিকানা বা নিজস্ব মোবাইল থাকার বিষয়টি  এই মোবাইল মানি ব্যবহারে নারী-পুরুষ বৈষম্যের একটি বড় কারণ। এছাড়া আরও বেশ কিছু বাধা এবং সাংস্কৃতিক রীতিনীতির কারণে নারীরা মোবাইল মানি সেবা গ্রহণের ক্ষেত্রে বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন। ফলে নিম্ন ও মধ্য-আয়ের দেশগুলোতে নারীদের বর্তমানে একটি নিজস্ব মোবাইল মানি অ্যাকাউন্ট ব্যবহারের হার পুরুষের চেয়ে ২৮ শতাংশ কম। 

মোবাইল মানি এজেন্টদের সংখ্যাও গত বছর উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়েছে, এই হার ২০২১ এবং ২০২২ সালের মধ্যে ৪১ শতাংশ বেড়েছে। এজেন্টদের সামগ্রিক সংখ্যা ২০২১ সালে এক কোটি ২০ লাখ থেকে বেড়ে ২০২২ সালে এক কোটি ৭৪ লাখ হয়েছে। সক্রিয় এজেন্টদের সংখ্যা ২৫ শতাংশ বেড়ে ২০২২ সালে ৭২ লাখে পৌঁছেছে। এই অগ্রগতির ক্ষেত্রে বড় অবদান নাইজেরিয়ার, নিয়ন্ত্রক সংস্থার উদারপন্থী নীতিমালার কারনে মোবাইল মানি সেবাদাতাদের কাজের সুযোগ বাড়িয়ে দিয়েছে। এজেন্টরা মোবাইল মানি সেবাসমূহের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে নিজেদের অব্যাহতভাবে তুলে ধরতে পেরেছেন এবং ২০২২ সালে সমস্ত ক্যাশ-ইন লেনদেনের দুই-তৃতীয়াংশ অর্জনে অবদান রেখেছেন।

এম/


 

বিশ্বজুড়ে মোবাইল মানি বাংলাদেশ

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন