ছবি: সংগৃহীত
প্রত্যেক মানুষই জীবনের কোনো না কোনো সময় মাথাব্যথায় আক্রান্ত হয়ে থাকেন। আসলে এটি কোনো রোগ নয় একটি উপসর্গ মাত্র। প্রতিদিন মাথা ব্যথা নিয়ে কাজ করা বেশ অস্বস্তিকর। ঘনঘন মাথাব্যথা প্রাত্যহিক পারিবারিক ও কর্মজীবনকে বিষাদময় করে তুলতে পারে। এছাড়া তীব্র মাথাব্যথা ডিপ্রেশনের ঝুঁকি বাড়ায়।
একাধিক কারণে মাথাব্যথা হয়ে থাকে। যেমন মাইগ্রেন, টেনশন-টাইপ মাথাব্যথা, ক্লাস্টার মাথাব্যথা ইত্যাদি। আবার অনেক সময় উল্টোপাল্টা খাবার খেলে কিংবা অনেক ক্ষণ খালি পেটে থাকলেও মাথা ধরে যেতে পারে। আমাদের মস্তিষ্কে যখন কিছু রক্তনালী ফুলে যায় তখনই শুরু হয় মাথাব্যথা।
অনেকেই মাথাব্যথার কারণে ডিসপ্রিন জাতীয় ওষুধ খেয়ে থাকেন যার রয়েছে মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। এই ধরনের ওষুধ না খেয়ে প্রাকৃতিক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াবিহীন পদ্ধতি ব্যবহার করে মাথাব্যথার হাত থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব, যা ম্যাজিকের মতো ১ মিনিটেই মাথাব্যথা কমাতে সক্ষম।
# লেবুর খোসার পেস্ট:
লেবুর খোসা মাথাব্যথা সারাতে বেশ কার্যকরী একটি জিনিস। লেবুর খোসার পেস্ট তৈরি করে হাতের কাছে রেখে দিতে পারেন। প্রথমে দুই থেকে তিনটি লেবুর খোসা কেটে আলাদা করে নিন। এবার শুধুমাত্র লেবুর খোসা বেটে ঘন পেস্টের মতো তৈরি করে নিন। মাথাব্যথা শুরু হলে এই পেস্টটি কপালে লাগান বামের মতো করে। এতে তাৎক্ষণিক মাথাব্যথা উপশম হবে।
# আকুপ্রেশার:
আকুপ্রেশার বেশ পুরনো এই পদ্ধতি মাথাব্যথার অব্যর্থ দাওয়াই। এটি একধরনের ম্যাসাজ করার পদ্ধতি। বাঁ হাতের বুড়ো আঙুল ও তর্জনির মাঝের অংশে ডান হাতের বুড়ো আঙুল ও তর্জনি চেপে ধরুন। তারপর ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে জায়গাটা মাসাজ করুন। একইভাবে বিপরীত হাতেও করুন। কয়েক নিমেষেই কমবে মাথাব্যথা।
# লবঙ্গ:
রান্নাঘরে হাতের কাছেই লবঙ্গ থাকে। একটি চাটুতে লবঙ্গ ভাল করে গরম করে নিন। তারপর একটা পাতলা রুমালে লবঙ্গ মুড়ে নাকের সামনে দিয়ে কিছুক্ষণ শুঁকুন। আস্তে আস্তে এই গন্ধতেই মাথাব্যথা কমবে।
# গ্রিন টি ও লেবুর পানীয়:
গ্রিন টি’র অ্যান্টিইনফ্লেমেশন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান খুব দ্রুত মাথাব্যথার হাত থেকে মুক্তি দেয়। দুই কাপ পানি চুলায় বসিয়ে ফুটিয়ে এক কাপ পরিমাণ করে নিয়ে তা কাপে ঢালুন। একটি গ্রিন টির টি-ব্যাগ কাপে দিয়ে গ্রিন টি তৈরি করে নিন। এবার একটি গোটা লেবুর অর্ধেকটা রস চিপে গ্রিন টিতে মেশান। এই পানীয়টি ছোটো ছোটো চুমুকে পান করুন। মিনিটেই মাথাব্যথা দূর হয়ে যাবে।
# আদা:
মাথাব্যথা উপশমে আদার জুড়ি নেই। কারণ আদায় প্রাকৃতিকভাবেই রয়েছে ‘প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিন সিনথেসিস ইনহিবিটর’ যা বিভিন্ন ব্যথানাশক ওষুধে ব্যবহার করা হয়। গলা ব্যথা বা সর্দি হলে আদার কুচি চিবিয়ে খাওয়ার অভ্যাস অনেকেরই আছে। এতে বেশ আরাম পাওয়া যায়। আদা যে কোনও ধরনের প্রদাহ কমাতেই সহায়তা করে। তাই মাথা ধরলে দু-এক কুচি আদার টুকরো মুখে রেখে দিন, মাথাব্যথা কমে যাবে।
# পানি:
মাথাব্যথা হলে এক কাপ হালকা গরম পানি অল্প অল্প করে খান, অনেক সময় শরীরে বদহজম থেকে মাথাব্যথা হয়ে থাকে, এই গরম পানি খেলে সেটা কমবে। এছাড়া শরীরে পানির ঘাটতি হলেও মাথাব্যথা হতে পারে। সেক্ষেত্রে এক চুমুকে এক গ্লাস পানি খেতে পারেন।
# লবণ দেয়া আপেল:
মাঝে মাঝে এত বেশি মাথাব্যথা হয় যে, কোনও টোটকাই কাজে দেয় না। তখন এই টোটকাটির উপর ভরসা করে দেখতে পারেন। এক-দু টুকরো আপেলের উপর লবণ ছড়িয়ে খান, মাথাব্যথার তীব্রতা অনেকটাই কমবে।
আরো পড়ুন: অলস হলে বিপদ বাড়ে
# দারুচিনি গুঁড়া ও পুদিনার পেস্ট:
দারুচিনি মাথাব্যথা সারাতে বেশ কার্যকরী। দুই টেবিল চামচ দারুচিনি গুঁড়া নিন। এতে পুদিনা পাতার রস চিপে দিয়ে পেস্টের মতো তৈরি করে নিন। এই পেস্টটি মাথাব্যথা শুরু হলে কপালে এবং নাকের উঁচু অংশে লাগান। খুব দ্রুত ১ মিনিটেই মাথাব্যথা থেকে রেহাই পাবেন।
এম এইচ ডি/