ছবি: সংগৃহীত
স্বপ্নের পদ্মা সেতু চালুর পর এবার পদ্মা সেতু দিয়ে দক্ষিণাঞ্চলে ছুটবে দ্রুতগামী ট্রেন। সড়কপথে দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগের উন্নয়ন যাত্রার সঙ্গে এবার যোগ হতে যাচ্ছে নতুন মাত্রা।
এর ফলে রেলপথে সারাদেশের সঙ্গে যুক্ত হবে ফরিদপুরসহ দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের আরও বেশ কয়েকটি জেলা। এদিকে, ট্রেন চালুর দিন-ক্ষণ যতোই এগিয়ে আসছে ততই যেনো এই জনপদের মানুষের কানে বাজছে ট্রেনের হুঁইসেল আর ঝকঝকা ঝক শব্দ। আনন্দিত-উচ্ছ্বসিত দক্ষিণ অঞ্চল তথা ফরিদপুরের সর্বস্তরের মানুষ।
স্বপ্নের পদ্মা সেতু দিয়ে রেল চলবে আগামীকাল মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর)। রেল যোগাযোগের মাহেন্দ্রক্ষণে সবুজ পতাকা নেড়ে শুভ উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
উদ্বোধনের পরের দিন থেকে যাত্রী চলাচল শুরু হবে। ইতিমধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেন চালানোর প্রাথমিক পদক্ষেপ সম্পন্ন করেছে রেল কর্তৃপক্ষ।
ইতিমধ্যে রেল মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন কমলাপুর-গেন্ডারিয়া-ভাঙ্গা জংশন পরিদর্শন করেছেন। সবকিছু ইতিবাচক করে যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রেলমন্ত্রীর এই পরিদর্শন কর্মসূচি-- বলছে রেলকর্তৃপক্ষ। পদ্মা সেতুতে রেল সংযোগ বর্তমান সরকারের একটি মেগা প্রকল্প। সেতু দিয়ে সড়ক পরিবহন নিশ্চিত করার পরেই রেল যোগাযোগের কর্মসূচি সরকার হাতে নেয়।
জানা গেছে, আগামীকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টায় মাওয়া রেল স্টেশনে পদ্মা সেতু দিয়ে রেল যোগাযোগের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় রেলপথমন্ত্রী মো. নুরুল ইসলাম সুজন, রেলসচিব ড. মো. হুমায়ুন কবীর, রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. কামরুল আহসান, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) সরদার সাহাদাত আলী, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (রোলিং স্টক) পার্থ সরকার, পদ্মা সেতুর দুই পাড়ের সংসদ সদস্যসহ স্থানীয় ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গেছে।
এর আগে গত ৭ সেপ্টেম্বর ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা রুটে পরীক্ষামূলক চালানো হয়েছে ট্রেন। এই রেলপথটি পুরোপুরি চালু হলে ঢাকার সঙ্গে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষের রেল যোগাযোগ সহজ হবে।
এ বিষয়ে রেলমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন জানান, পদ্মা রেল সংযোগ প্রকল্পের ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত অংশটি আগামীকাল আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। এর আগেই ৭ সেপ্টেম্বর ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা পর্যন্ত পরীক্ষামূলক ট্রেন চালানো হয়। এই অংশের কাজ ৯৭.৫০ শতাংশ শেষ হয়েছে। তবে পুরো যশোর পর্যন্ত প্রকল্পের বাকি অংশ ২০২৪ সালের জুনে শেষ হবে বলে জানান তিনি।
প্রকল্প সূত্র জানায়, এর আগে পদ্মা সেতু হয়ে ভাঙ্গা-মাওয়া পর্যন্ত পরীক্ষামূলক ট্রেন চালানো হয়েছে। এবার ঢাকার কমলাপুর স্টেশন থেকে মাওয়া হয়ে পদ্মা সেতু পেরিয়ে ভাঙ্গা পর্যন্ত ট্রেন চালানো হবে। এর জন্য চীন থেকে কেনা নতুন সাতটি কোচের সমন্বয়ে একটি বিশেষ ট্রেন প্রস্তুত করা হয়েছে।
এ বিষয়ে পদ্মা রেল সংযোগ প্রকল্পে পরিচালক মো. আফজাল হোসেন জানান, ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত ১৬৯ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৮৩ শতাংশ। তবে ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা পর্যন্ত প্রায় ৯৭.৫০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। এখনো শুধু কিছু স্টেশন ও সিগন্যালিংয়ের কাজ বাকি আছে। তাই আগামীকাল ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা পর্যন্ত পরীক্ষামূলক ট্রেন চালানো হবে বলে জানান তিনি।
প্রকল্প সূত্র জানায়, যশোর পর্যন্ত ১৬৯ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণসহ পদ্মা সেতু রেল সংযোগের পুরো প্রকল্পের কাজ ২০২৪ সালে জুনের মধ্যে শেষ হবে। এ পর্যন্ত প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৮২ শতাংশ। পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা-যশোর পর্যন্ত তিনটি অংশে রেলপথটি নির্মাণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে ঢাকা-যশোর পর্যন্ত ১৬৯ কিলোমিটার মেইন লাইন, ঢাকা-গেণ্ডারিয়া পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার ডাবল লাইন, লুপ, সাইডিং ও ওয়াই-কানেকশসসহ মোট ২১৫ দশমিক ২২ কিলোমিটার ব্রডগেজ রেললাইন নির্মাণ করা হচ্ছে।
ওআ/
খবরটি শেয়ার করুন