শুক্রবার, ২২শে নভেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
৮ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ফারুকের চিকিৎসায় বিক্রি করতে হয়েছিল ১৫ কোটি টাকা মূল্যের ফ্ল্যাট

বিনোদন ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০২:০৫ অপরাহ্ন, ১৫ই মে ২০২৩

#

ছবি: সংগৃহীত

বরেণ্য অভিনেতা ও সংসদ সদস্য আকবর হোসেন পাঠান ফারুকের দীর্ঘ মেয়াদী চিকিৎসা খরচ বহনের জন্য বিক্রি করতে হয়েছে প্রায় ১৫ কোটি টাকা দামের দুটি ফ্ল্যাট। ফারুকের স্ত্রী ফারহানা পাঠান গত বছর গণমাধ্যমে এ তথ্য জানান। সে সময় তিনি বলেন, ‘ব্যাংক অ্যাকাউন্ট শূন্য হয়েছিল। পাশাপাশি স্বজনদের কাছ থেকেও ধার-দেনা করতে হয়েছিল।’

ফারহানা বলেন, ‘সিঙ্গাপুর মাউন্ট এলিজাবেথে চিকিৎসা অনেক ব্যয়বহুল। সে জন্য সম্পত্তি বিক্রি করতে হয়েছে। সন্তানরা দেশে থেকে তার বাবার জন্য টাকা পাঠাচ্ছে। সহায়-সম্পত্তি সব চলে গেলেও আফসোস নেই। আপনাদের মিয়া ভাই দ্রুত সুস্থ হয়ে সবার মাঝে ফিরে আসুক, এটাই একমাত্র চাওয়া। ফারুক তো আমার একার নয়, পুরো বাংলাদেশের। দেশে সবাই তার অপেক্ষায় আছেন।’

সে সময় তিনি বলেন, ‘চিকিৎসকরা ফারুককে যখন আইসিইউতে রাখার পরামর্শ দেন ওই সময় আমাদের হাত একেবারে খালি ছিল। অনেক চেষ্টা করে করোনার কারণে উপযুক্ত দামে ফ্ল্যাটও বিক্রি করতে পারছিলাম না। তখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফারুকের চিকিৎসার জন্য প্রথমেই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন। তার দেওয়া টাকা দিয়েই আইসিইউর প্রথম মাসের বিল পরিশোধ করেছি। সে জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতার শেষ নেই।’

সে সময় ফারুকের একমাত্র ছেলে রওশন হোসেন পাঠান শরৎ বলেছিলেন, ‘দীর্ঘদিন আব্বু সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন। তার চিকিৎসার খরচ চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। ইতোমধ্যে বারিধারার দুটি ফ্ল্যাট বিক্রি করেছি। সেখানে আমরা থাকিনি। এর আগেই বিক্রি করতে হলো। আব্বু হাসপাতালে বেশিদিন থাকলে আরও টাকা লাগতে পারে। স্বজনদের কাছ থেকেও দেনা করেছি। আব্বুর সুস্থতার জন্য শেষ পর্যন্ত চেষ্টা করব। সরকারও সহযোগিতা করেছে, যা প্রয়োজনের তুলনায় কম। যেটুকু সহযোগিতা পেয়েছি, তাতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমরা কৃতজ্ঞ। বিপদের সময় তিনি আমাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন।’

তিনি জানান, দেশে আসার জন্য ফারুক উদগ্রীব। জমে আছে সংসদীয় এলাকার অনেক কাজকর্ম। দেশে ফিরে কাজগুলো সারবেন বলেছেন।

সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে দীর্ঘ দিন ধরে চিকিৎসাসেবা নেন অভিনেতা ও ঢাকা-১৭ আসনের সংসদ সদস্য ফারুক। সর্বশেষ ২০২০ সালে অক্টোবর মাসের শেষদিকে চিকিৎসা শেষে সিঙ্গাপুর থেকে দেশে আসেন তিনি। ২০২১ সালের ৪ মার্চ নিয়মিত চেকআপের জন্য আবারও সিঙ্গাপুর যান। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। উচ্চ রক্তচাপ, মস্তিষ্ক, স্নায়ুতন্ত্রের নানা সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। ছিল পুরোনো বেশ কিছু শারীরিক জটিলতাও। 

সোমবার (১৫ মে) সকাল ৮টায় সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে মারা যান বরেণ্য অভিনেতা ফারুক। তার বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর আট মাস। 

আরো পড়ুন: আমাকে দেখে ‘যথার্থ আদিবাসী’ মনে হতো : মিঠুন
 

১৯৪৮ সালের ১৮ আগস্ট ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন ফারুক। এইচ আকবর পরিচালিত ‘জলছবি’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে ১৯৭১ সালে ঢাকাই সিনেমার তার অভিষেক হয়। প্রথম সিনেমায় তার বিপরীতে ছিলেন কবরী। এরপর ১৯৭৩ সালে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র খান আতাউর রহমানের পরিচালনায় ‘আবার তোরা মানুষ হ’ ও ১৯৭৪ সালে নারায়ণ ঘোষ মিতার ‘আলোর মিছিল’ এ দুটি সিনেমায় পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি।

পাঁচ দশকের বেশি সময়ের অভিনয় ক্যারিয়ারে অভিনয় করেন বহু দর্শকপ্রিয় চলচ্চিত্রে। ‘মিয়াভাই’ চলচ্চিত্রের সাফল্যের পর তিনি চলচ্চিত্রাঙ্গনে ‘মিয়াভাই’ হিসেবে খ্যাতি পান। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ নানা সম্মাননায় ভূষিত হন এই নন্দিত চিত্রনায়ক। অভিনয় থেকে অবসর নেওয়ার পর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে ঢাকা-১৭ আসনে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। 

এসি/ আই. কে. জে/

 

ফারুক চিকিৎসায় দামী ফ্ল্যাট

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন