নন্দিনী লুইজা
মাঝে মাঝেই সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখতে পাই চোখের সামনে এসে যায় "সুখবর" নামে একটি পেজ। সেই পেজ মানুষের পুরাতন চিঠি, ভালোবাসার চিঠি, হাতে লেখা চিঠি সংগ্রহ করেছে। খুব মজা করে তাদের পাতাটা পড়লাম। নিজেও খুব আবেগী হয়ে গেলাম। কেননা আমাদের সময় আমরা হাতে লেখা চিঠির জন্য কত অপেক্ষায় থেকেছি। একটা চিঠির জন্য যারা কিনা আমরা প্রেম করতাম, আমাদের একটাই ছিল বিনোদন। প্রেমিক-প্রেমিকার চিঠি হাতে পাওয়া, আর যেদিন হাতে পাওয়া সেদিন মনে হতো স্পেশাল একটা দিন।
তাই "সুখবর" নামে পেজটি,যারা মানুষের পুরাতন হাতে লেখা, কালির অক্ষরে লেখা চিঠি সংগ্রহ করছে, অপেক্ষা না করে ফোন দিয়েই ফেললাম। অনেক কথা আলাপের মাঝে নিজের আবেগটাকেও সংবরণ করতে না পেরে কথার ঝুড়ি খুলে ফেললাম। নিজের কথাটা বলে ফেললাম। আমারও রয়েছে অনেক চিঠি, যা আমি ধারণ করে রেখেছি- আমার হৃদয়ে, মগজে এবং কালির অক্ষরে বইয়ের পাতায়। অনেক আগে থেকেই ভেবেছিলাম আমার প্রেমের চিঠিগুলো বই আকারে বের করব। সে কাজটা সমাধান করতে পেরেছিলাম ২০১০ সালে। তখন বইমেলা এত জমতো না। বাংলা একাডেমির সামনে পুরো লম্বা রাস্তা ধরে বইয়ের দোকান বসতো। আমি সেই রাস্তার ধারে ফুটপাতে বইয়ের দোকান দিয়েছিলাম, 'অমৃত অক্ষর' চিঠির বই নিয়ে। তখন আমি মানুষের মধ্যে যে বই কেনার প্রবণতা দেখতাম তা এখন দেখি না। এখন অনেক বই বের হচ্ছে বাজারে। সবাই বই হাতে বইমেলায় সেলফি তোলে।
তারপরও আমি আশাবাদী, এক মাস ধরে একুশের বইমেলা মানুষকে কিছু সময়ের জন্য হলেও সংস্কৃতি চর্চার দিকে ধাবিত করে। সোশ্যাল মিডিয়া, প্রযুক্তির ব্যবহারে আমরা ভুলেই গেছি কাগজে লেখা চিঠির আলাপ, পত্রমিতালী।
ফলে 'সুখবর' এই প্রযুক্তির যুগে যে সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছে সত্যি তাদেরকে অভিনন্দন। আমার অন্তরের ভালোবাসা আর মনের গহীনে লুকিয়ে থাকা স্বপ্নটা বাস্তবায়ন করার ক্ষেত্রে তাদের দৃঢ় পদক্ষেপের প্রতি আমার রইল সাধুবাদ ও শুভকামনা।
নন্দিনী লুইজা : শিক্ষক, লেখক, গবেষক ও প্রকাশক, বর্ণপ্রকাশ লিমিটেড
১৪/১০/২০২৩
দ্রষ্টব্য : সুখবর ফেসবুক পেজটি সুখবর ডটকম (sukhabor.com, Govt. Reg. No. 37) নিউজ পোর্টালের একটি স্যোশাল মিডিয়া পেজ।
আই. কে. জে/