ছবি: সংগৃহীত
রাঙামাটি জেলা শহরের ট্রাইবাল আদাম বটগাছতলার সেই শতবর্ষী বটবৃক্ষ বাঁচাতে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছেন স্থানীয়রা। জেলা তথ্য অফিসের স্থায়ী ভবনের জন্য প্রস্তাবিত ভূমিটি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
অবকাঠামো নির্মাণে স্থানীয়দের আপত্তি না থাকলেও বটগাছটি কাটতে দেবেন না তারা। এখন পর্যন্ত কয়েক দফায় ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয়দের বাধার মুখে পড়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
মঙ্গলবার (৩০শে এপ্রিল) দুপুরেও ঘটনাস্থলে গিয়ে বাধার মুখে পড়েন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। বেলা ১১টার দিকে ট্রাইবাল আদাম বটগাছ তলায় যান অতিরিক্তি জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) জোবাইদা আক্তার, সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বিজয় কুমার জোয়ার্দার, রাঙামাটি পৌরসভার মেয়র আকবর হোসেন চৌধুরী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. জাহেদুল ইসলাম, কোতোয়ালি থানার ওসি মুহাম্মদ আলী প্রমুখ।
এসময় স্থানীয়দের বাধার মুখে পড়েন পুলিশ-প্রশাসনের কর্মকর্তারা। স্থানীয়দের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের দাবি মন্ত্রণালয়ে জানাবেন বলে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন এডিএম জোবাইদা আক্তার।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ট্রাইবাল আদাম এলাকার বাসিন্দা রিনা চাকমা, গীতা চাকমা ও মুনা চাকমার মালিকানাধীন ভূমিটি তথ্য অফিসের স্থায়ী ভবনের জন্য অধিগ্রহণের কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
বিষয়টি জানাজানির পর থেকেই আপত্তি জানিয়ে আসছে এলাকাবাসী। পরে শ্রমিকরা শতবর্ষী বটগাছটি কাটার জন্য গিয়েও বাধার মুখে পড়েন। স্থানীয়দের একটাই দাবি, অফিস ভবন নির্মাণে আপত্তি না থাকলেও শতবর্ষী বটগাছটি তারা কাটতে দেবেন না। যে গাছটি দীর্ঘকাল ধরে ছায়া ও অক্সিজেন দিয়ে আসছে সেটির গায়ে আঘাত দিতে দেবেন না। এছাড়া স্থানীয়রা বটগাছটিকে পূজাও করে থাকেন।
ট্রাইবাল আদাম এলাকার বাসিন্দা ও জেলা মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্মলীগের সভাপতি সদানন্দ চাকমা গণমাধ্যমকে জানান, শত বছরের বটগাছটি কেটে ফেলতে একপক্ষ কাজটি করতেছে। এই গরমের দিনে মানুষ এখানে এসে বিশ্রাম নেন। বটগাছটি নিয়ে তাদের অনেক-আবেগ অনুভূতি রয়েছে। আমরা প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছি, আমাদের একটাই কথা এই বটগাছ কাটতে দেব না।
আরো পড়ুন: তীব্র দাবদাহের মধ্যেই আড়াই হাজার গাছ কাটছে বন বিভাগ!
স্থানীয় বাসিন্দা ও আওয়ামী লীগ নেতা অভয় প্রকাশ চাকমা গণমাধ্যমকে বলেন, বটগাছটি অনেক পুরানো। এটি পুরো এলাকার মানুষের জন্য একটা প্রশান্তির জায়গা। এভাবে গাছটি আমরা কেটে ফেলতে দেব না।
রাঙামাটি পৌরসভার কাউন্সিলর জামাল উদ্দিন গণমাধ্যমকে বলেন, এই বটগাছটি শত বছরের; গাছটির কারণে এই এলাকাকে সবাই বটতলা নামে চেনেন। বটগাছটা পুরো এলাকার আশ্রয়স্থলের মতো। বিশাল অংশজুড়ে ছায়া দেয়। শুনেছি এটা অধিগ্রহণ হয়েছে একটি প্রতিষ্ঠানের জন্য। এলাকাবাসীর কথা গাছটি যদি কেটে ফেলে, মানুষের ছায়ায় বসে বিশ্রাম নেওয়ার জায়গা থাকবে না।
এইচআ/ আই.কে.জে/
খবরটি শেয়ার করুন