লাকি আলি ও জাভেদ আখতার। ছবি: সংগৃহীত
বলিউডের প্রখ্যাত গীতিকার ও চিত্রনাট্যকার জাভেদ আখতারের একটি পুরোনো ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। এ নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক চলছে। ওই ভিডিওতে তাকে হিন্দুদের উদ্দেশে ‘মুসলমানদের মতো হবেন না’ বলতে মন্তব্য করতে শোনা যায়। এই মন্তব্যের জেরে প্রখ্যাত গায়ক লাকি আলি জাভেদ আখতারের তীব্র সমালোচনা করেছেন।
জাভেদ আখতারের বক্তৃতার ওই ভিডিওটি কত পুরোনো বা কোন অনুষ্ঠানের, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে ভিডিওটি শেয়ার করা একটি ‘এক্স’ পোস্টে মন্তব্য করে লাকি আলি লেখেন, ‘জাভেদ আখতারের মতো হবেন না, তিনি কখনোই মৌলিক (সৃষ্টিশীল অর্থে) নন এবং জঘন্য কুৎসিত...!’ তথ্যসূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস।
ভাইরাল হওয়া ভিডিও ক্লিপটিতে জাভেদ আখতারকে বাক্স্বাধীনতা এবং বর্তমান ভারতে গণতন্ত্রের অবস্থা নিয়ে কথা বলতে শোনা যায়। ১৯৭৫ সালের ক্ল্যাসিক চলচ্চিত্র ‘শোলে’-এর একটি দৃশ্যের উল্লেখ করে তিনি তার মন্তব্যটি করেন।
ভিডিওতে জাভেদ আখতার বলেন, ‘শোলেতে এমন একটি দৃশ্য ছিল যেখানে ধর্মেন্দ্র শিবের মূর্তির পেছনে লুকিয়ে কথা বলেন, আর হেমা মালিনী ভাবেন শিবজি তার সঙ্গে কথা বলছেন। আজ কি এমন দৃশ্য তৈরি করা সম্ভব? না, আমি (আজ) এমন দৃশ্য লিখব না। ১৯৭৫ সালে কি হিন্দুরা ছিলেন না? ধর্মপ্রাণ মানুষ ছিলেন না? ছিলেন। রাজু হিরানি এবং আমি পুনেতে বিপুলসংখ্যক শ্রোতার সামনে বলেছিলাম, “আপনারা মুসলমানদের মতো হবেন না। তাদের আপনার মতো বানান। আপনারা মুসলমানদের মতো হয়ে যাচ্ছেন।” এটা একটা ট্র্যাজেডি!’
জাভেদ আখতারের এই মন্তব্যের সরাসরি প্রতিক্রিয়া হিসেবেই লাকি আলি সোশ্যাল মিডিয়ায় ওই তীব্র কটাক্ষটি করেন।
উল্লেখ্য, গায়ক লাকি আলী নিজেকের ধর্মপ্রাণ মুসলিম দাবি করেন। তার ধর্মীয় বিশ্বাস ও নিজস্ব ধারণা নিয়ে অতীতে বিতর্কের মুখে পড়েছেন। যেমন, ২০২৩ সালে তিনি ‘ব্রাহ্মণ’ শব্দটি ‘আব্রাহাম’ শব্দ থেকে এসেছে বলে দাবি করে বিতর্কের মুখে পড়েন। পরে অবশ্য তিনি পোস্টটি মুছে দিয়ে ‘হিন্দু ভাই ও বোনদের’ কাছে দুঃখপ্রকাশ করে জানান, তার উদ্দেশ্য কাউকে ‘কষ্ট দেওয়া বা ক্ষুব্ধ করা’ নয়।
জাভেদ আখতার এর আগেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সাম্প্রদায়িক ও বিদ্বেষপূর্ণ মন্তব্যের জন্য প্রভাবশালী ব্যক্তিদের বহুবার তিরস্কার করেছেন। এর জন্য সমালোচনা ও প্রতিবাদ হয়েছে।
গত মাসে জমিয়াত উলেমা-ই-হিন্দ জাভেদ আখতারকে প্রধান অতিথি করার বিরোধিতা করলে কলকাতায় একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান স্থগিত করে সরকার। এই বিতর্কের জবাবে এনডিটিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জাভেদ আখতার বলেন, তিনি ক্রমাগত হিন্দু ও মুসলিম উভয় মৌলবাদীদের কাছ থেকেই ঘৃণা পান।
জাভেদ আখতার বলেন, ‘কেউ কেউ আমাকে “জিহাদি” বলে পাকিস্তানে চলে যেতে বলে। আবার কেউ কেউ বলে আমি “কাফের” এবং আমি নিশ্চিত জাহান্নামে যাব, তাই আমার মুসলিম নামের অধিকার নেই।’
জাভেদ আখতার ওই সাক্ষাৎকারে জানান, গত ২৫ বছরে মুম্বাই পুলিশ তাকে অন্তত চারবার নিরাপত্তা দিয়েছে। এর মধ্যে তিনবারই মুসলিম সংগঠন বা ব্যক্তিদের কারণে এবং একবার অন্যদিক (প্রতিপক্ষের নাম নেননি) থেকে তাকে হুমকি দেওয়া হয়েছিল।
খবরটি শেয়ার করুন