সোমবার, ৮ই জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২৩শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শুল্কমুক্ত থাকছে না এমপিদের গাড়ি

নিউজ ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০৪:৫২ অপরাহ্ন, ১৩ই মে ২০২৪

#

ছবি: সংগৃহীত

গাড়ি আমদানিতে সাধারণ নাগরিকদের সিসিভেদে ৮৯ থেকে ৮৫০ শতাংশ শুল্ক পরিশোধ করতে হলেও সংসদ সদস্যরা (এমপি) বিনা শুল্কে গাড়ি আমদানির সুযোগ পান। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) চাপে আইনপ্রণেতাদের এই সুবিধা তুলে দিচ্ছে সরকার।

আগামী অর্থবছরের বাজেটে এমপিদের আমদানি করা গাড়িতে সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ হতে পারে। বাজেট প্রণয়নের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।

আসছে ৬ই জুন জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন করা হবে। বাজেট চূড়ান্ত করার আগে গতকাল রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ভবনে বাজেট সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বিশেষ বৈঠক করেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী ও অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান। বৈঠকে এনবিআরের কর্মকর্তারা আসছে বাজেটে কী কী প্রস্তাব করা যেতে পারে, তার নানান দিক তুলে ধরেন। এরই অংশ হিসেবে এমপিদের গাড়ি আমদানিতে সর্বোচ্চ ২৫% শুল্ক আরোপের সুপারিশ করা হয়। এ প্রস্তাব শুনে মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী সবুজ সংকেত দেন বলে বৈঠক সূত্রে জানা যায়।

এমপিরা সাধারণত উচ্চ সিসির বিলাসবহুল গাড়ি আমদানি করে থাকেন। এসব গাড়িতে শুল্কছাড়ের কারণে সরকার এত দিন কোনো রাজস্বই পায়নি। এনবিআর জানায়, ২০১৭ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত এমপিরা ৩১৬টি শুল্কমুক্ত গাড়ি আমদানি করেন। এসব গাড়ির আমদানিমূল্য ২৬০ কোটি টাকা। সর্বোচ্চ শুল্ক বিবেচনায় নিলে এসব গাড়ির পেছনে সরকারের রাজস্ব ক্ষতি প্রায় ২ হাজার ২১০ কোটি টাকা।

এ ব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, ‘গত বেশ কয়েকটি সংসদ থেকেই এমপিদের শুল্কমুক্ত বিলাসবহুল গাড়ি আমদানির অবাধ সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এ সুযোগে সরকারের বিপুল অঙ্কের রাজস্ব ক্ষতি হয়। আইএমএফ চায় এ খাত থেকে অন্তত কিছু হলেও রাজস্ব আদায় হোক। তারই আলোকে আসছে বাজেটে এ রকম একটি প্রস্তাব থাকতে পারে।’

এনবিআরের শুল্ক ও ভ্যাট খাতের সাবেক সদস্য আবদুল মান্নান পাটোয়ারী গণমাধ্যমকে বলেন, ‘রাজস্ব আয় বাড়ানোর উপায় হিসেবে এমপিদের বিলাসবহুল গাড়িতে শুল্কছাড় সুবিধা তুলে দিয়ে নতুন করে শুল্ক বসানো হলে সরকার কিছু রাজস্ব পাবে। এ প্রস্তাব খুবই ইতিবাচক।’

আরো পড়ুন: চামড়া শিল্পখাতের উন্নয়নে করণীয় নির্ধারণ করা হয়েছে : শিল্পমন্ত্রী

আইএমএফ তথ্যপ্রযুক্তি (আইসিটি) খাতে করছাড় তুলে দেওয়ার সুপারিশ করেছিল। তবে তাতে সাড়া দিচ্ছে না সরকার। তাই আগামী বাজেটেও আইসিটি খাতের করছাড় সুবিধা বহাল রাখা হতে পারে। বৈঠকে অর্থমন্ত্রী যেকোনোভাবে সম্ভাবনাময় এ খাতের করছাড় সুবিধা আরো কয়েক বছর বহাল রাখার পক্ষে মত দেন।

চলতি বছর মাত্রাতিরিক্ত গরমের কারণে কোমল পানীয়র রমরমা বাণিজ্য হয়েছে। আগের বছরের তুলনায় এ বাণিজ্য বেড়েছে প্রায় ২৫ শতাংশ। এ সুযোগে এনবিআর আসছে বাজেটে এ খাতের ন্যূনতম করহার ৩ থেকে বাড়িয়ে ৫ শতাংশ করার পক্ষে।

বৈঠক সূত্র জানায়, আসছে বাজেটে করপোরেট করহার আড়াই শতাংশ কমানোর পক্ষে মত দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। তবে বাজেটে নতুন করে ব্যক্তির আয়ের ওপর ন্যূনতম কর বসানোর প্রস্তাব দেওয়া হলে অর্থমন্ত্রী তাতে সায় দেননি।

ব্যক্তির ওপর ন্যূনতম কর না বসানো ও করপোরেট কর কমানোর উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন এনবিআরের সাবেক করনীতির সদস্য ড. সৈয়দ আমিনুল করিম। তিনি বলেন, এ বছর ব্যক্তির ওপর ন্যূনতম কর আরোপ করা ঠিক হবে না। আর বর্তমান ব্যবসায়িক পরিস্থিতিতে করপোরেট কর কমানো হলে ব্যবসা-বিনিয়োগের জন্য ভালো হবে।

এসি/


এমপি শুল্কমুক্ত

খবরটি শেয়ার করুন