সোমবার, ২০শে অক্টোবর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৫ই কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** পাকিস্তান দেখাল কীভাবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ‘ডিল’ করতে হয় *** দেশে লাগাতার অগ্নিকাণ্ডে স্বরাষ্ট্রসচিবের নেতৃত্বে সরকারের কোর কমিটি *** নাহিদের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় যা বলল জামায়াত *** প্রথম আলোর আলোচনায় জুলাই সনদ *** আলোচনা-সমালোচনায় কবি-সাংবাদিক আলতাফ, সহকর্মীরা প্রতিবাদমুখর, সরব নারীনেত্রীরা *** জামায়াত সম্পর্কে কী এনসিপির নতুন উপলব্ধি *** খালেদা জিয়ার সংসদ নির্বাচনের প্রচারে অংশ নেওয়ার বিষয়ে যা জানাল বিএনপি *** একের পর এক অগ্নিকাণ্ড নিয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে জরুরি বৈঠক *** জামায়াতসহ সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর নতুন কর্মসূচি *** আন্দোলনের জবাবে ট্রাম্প বললেন, ‘আমি রাজা নই’

মাহফুজ আনামের বর্ণনায় একাত্তরে ড. ইউনূসের অবস্থান ও ভূমিকা

নিজস্ব প্রতিবেদক

🕒 প্রকাশ: ০৮:৩৬ অপরাহ্ন, ১২ই আগস্ট ২০২৫

#

ছবি: সংগৃহীত

প্রখ্যাত সাংবাদিক ও ইংরেজি পত্রিকা ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনাম একাত্তর সালের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অবস্থান ও ভূমিকার কথা তুলে ধরেছেন। তিনি বলেন, '১৯৭১ সালে ড. ইউনূস আমেরিকায় প্রবাসী একটি সংগঠনের সক্রিয় সদস্য ছিলেন। তারা অন্যদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের নৈতিক ও আইনি ন্যায্যতা তুলে ধরতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।'

মাহফুজ আনাম বলেন, ''তিনি (ড. ইউনূস) আমেরিকার সিনেটর এবং রিপাবলিকান ও ডেমোক্রেট উভয় দলের রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন এবং পুস্তিকা ও সংবাদমাধ্যমে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চিত্র উপস্থাপন করেছেন। তখন তিনি আমেরিকান নেতাদের কী বলেছিলেন? 'গণহত্যা' (একাত্তরে) কী তার বক্তব্যের অংশ ছিল না? তাহলে এখন তিনি নিজেই নিজের সেই গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা থেকে সরে আসছেন? যদি না হয়, তাহলে তিনি যে ঘোষণাপত্র পাঠ করলেন, সেখানে সেই অংশ নেই কেন?"

জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে গত ৫ই আগস্ট ঢাকায় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা জুলাই ঘোষণাপত্র পাঠ করেন। এর বিভিন্ন দিকের সমালোচনা করতে গিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে মাহফুজ আনাম এসব কথা বলেন। 'জুলাই ডিক্লেয়ারেশন: হোয়ার ইজ দ্য রোডম্যাপ ফর আউয়ার জার্নি' শিরোনামে প্রকাশিত এক উপসম্পাদকীয়তে তিনি কথাগুলো বলেন। তার লেখা এ উপসম্পাদকীয় গত ৮ই আগস্ট ডেইলি স্টারের ছাপা সংস্করণে প্রকাশিত হয়।

লেখাটি প্রকাশিত হওয়ার পর এটিকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানামুখী আলোচনা চলছে পাঠকদের মধ্যে। লেখাটি ইংরেজি পত্রিকার পাঠকদের মধ্যে ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে। এতে ড. ইউনূসের সরকারের একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে অস্বীকার করা ও এড়িয়ে যাওয়ার কঠোর সমালোচনা করেছেন তিনি। এসব আচরণকে 'লজ্জার' বলে আখ্যায়িত করেন বিশিষ্ট এই সাংবাদিক।

আওয়ামী লীগের সমালোচনার নামে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস এড়িয়ে যাওয়া ও বদলানোর সুযোগ নেই বলে মনে করেন মাহফুজ আনাম। ১৯৭১ সালের নয় মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, অনুপ্রেরণা ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তার নাম জুলাই ঘোষণাপত্রে একবারও উল্লেখ না করায় তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্রের বিভিন্ন দিকের সমালোচনা করে মাহফুজ আনাম বলেন, ঘোষণাপত্রে উল্লেখ নেই আমাদের ভাষা আন্দোলন, নেই পাকিস্তান রাষ্ট্র গঠনের পরপরই ছাত্র হত্যার ঘটনা এবং 'একুশে ফেব্রুয়ারির' জন্ম কথা। ১৯৭০ সালের ঐতিহাসিক নির্বাচনের কথাও সেখানে নেই, যে নির্বাচন আমাদের রাজনৈতিক নেতৃত্বকে জনগণের পক্ষে কথা বলার বৈধতা দিয়েছিল।

তিনি বলেন, জুলাই ঘোষণাপত্রের কোথাও মুক্তিবাহিনীর কথাও নেই। অথচ, তারা আমাদের ইতিহাসের সবচেয়ে গৌরবময় অধ্যায়ের নায়ক। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের কেন্দ্রবিন্দু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তখন ছিল মুক্তিবাহিনীর গঠন ও প্রসারের কেন্দ্র। এমনকি আলোচনাই নেই আমাদের নারীদের ওপর পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর নির্বিচার ধর্ষণের কথা নিয়ে!

মাহফুজ আনাম বলেন, আমাদের সবচেয়ে বিস্মিত করেছে, এই ঘোষণাপত্রে তরুণদের আলাদা কোনো গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। তরুণরাই আমাদের নতুন এক বাংলাদেশ গড়ার সুযোগ দিয়েছে। একাধিক সম্মেলনে ড. ইউনূস তরুণদের ভূমিকার প্রশংসা করেছেন এবং কেবল বাংলাদেশের নয়, গোটা বিশ্বের ভবিষ্যৎ গড়ার ক্ষেত্রে তাদের গুরুত্ব তুলে ধরেছেন।

তার মতে, সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী নিয়ে কোনো আলাপ নেই ঘোষণাপত্রে। আশ্চর্যজনক হলেও সত্য, নারীদের জন্য কিছুই নেই। অথচ, তারা আমাদের জনসংখ্যার ৫০ শতাংশ। তারপরও তাদের কষ্ট বা অবস্থান নিয়ে একটি বাক্যও নেই এই ঘোষণাপত্রে।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রধান উপদেষ্টা মাহফুজ আনাম

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন

Footer Up 970x250