গোর-এ-শহীদ ঈদগাহ ময়দান-ছবি: সংগৃহীত
এমন বড় মাঠে নামাজ আদায় করতে প্রস্তুত মুসল্লিরাও। তাদের বিশ্বাস, বড় জামাতে নামাজ আদায় করলে বেশি সওয়াব হয়। তা ছাড়া গত কয়েক বছর যেভাবে শান্তিপূর্ণভাবে নামাজ আদায় হয়েছে, তাতে খুশি তারা। তাই শুধু জেলার মধ্যেই নয়, আশপাশের জেলাগুলো থেকেও আসেন মুসল্লিরা। এ জন্য দুটি ঈদ স্পেশাল ট্রেনেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে এবার। যেগুলোর একটি পার্বতীপুর থেকে আসবে এবং অপরটি আসবে ঠাকুরগাঁও থেকে। মুসল্লিদের নামাজ আদায় শেষে ওই ট্রেনে করেই তাদের গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়া হবে।
জানা গেছে, গোর-এ-শহীদ ঈদগাহজুড়ে কয়েকটি স্তরে নিরাপত্তাব্যবস্থায় পুলিশ, বিজিবি, র্যাব, আনসার ও স্বেচ্ছাসেবকরা দায়িত্ব পালন করবেন। সকাল ৭টা থেকেই মুসল্লিদের জন্য মাঠের ১৭টি প্রবেশপথ খুলে দেওয়া হবে। মাঠে প্রবেশের আগে মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে মুসল্লিদের তল্লাশি করা হবে। শুধু জায়নামাজ ও ছাতা নিয়ে প্রবেশ করবেন মুসল্লিরা।
এ ছাড়া থাকবে পর্যবেক্ষণ টাওয়ার। পুরো মাঠটি সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমে মনিটরিং করা হবে। ড্রোনের মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করা হবে পুরো মাঠ। ইতোমধ্যেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাদের কার্যক্রম শুরু করে দিয়েছেন। মুসল্লিদের জন্য মাঠের এক পাশে থাকবে স্বাস্থ্য ক্যাম্প, মিনারের পেছনে অজুখানা এবং পানি পানের ব্যবস্থা।
দিনাজপুর গোর-এ-শহীদ বড় ময়দানে নামাজ আদায় করতে দূর-দূরান্ত থেকে লোকজন আসবেন বলে জানান স্থানীয়রা। পাহাড়পুর এলাকার লোকমান হাকিম বলেন, আমার কয়েকজন আত্মীয় আসবেন ঠাকুরগাঁও থেকে। আমাদের এই মাঠে নামাজ আদায় করার জন্য অনেকেই আগ্রহী।
দিনাজপুর জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, প্রায় ২২ একর আয়তন নিয়ে গোর-এ-শহীদ ময়দান। ২০১৭ সালে ৫২ গম্বুজবিশিষ্ট এই ঈদগাহ মিনার তৈরিতে খরচ হয়েছে ৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা। ঐতিহাসিক নিদর্শন ও মনোরম কৃতীর সৌন্দর্য ও নান্দনিক হিসেবে এর নির্মাণকাজ শুরু করা হয়। এই ৫০ গম্বুজের দুই ধারে ৬০ ফুট করে দুটি মিনার, মাঝের দুটি মিনার ৫০ ফুট করে। ঈদগাহ মাঠের মিনারের প্রথম গম্বুজ অর্থাৎ মেহেরাব (যেখানে ইমাম দাঁড়াবেন) তার উচ্চতা ৪৭ ফুট। এর সঙ্গে রয়েছে আরও ৪৯টি গম্বুজ।
এ ছাড়া ৫১৬ ফিট লম্বায় ৩২টি আর্চ নির্মাণ করা হয়েছে। উপমহাদেশে এত বড় ঈদগাহ মাঠ দ্বিতীয়টি নেই। পুরো মিনার সিরামিক দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। প্রতিটি গম্বুজ ও মিনারে রয়েছে বৈদ্যুতিক লাইটিং। রাত হলে ঈদগাহ মিনার আলোকিত হয়ে ওঠে।