শুক্রবার, ৫ই জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২১শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মালয়েশিয়ায় যেতে না পারা কর্মীরা এখন কী করবেন, তদন্তে কী লাভ হবে?

নিজস্ব প্রতিবেদক

🕒 প্রকাশ: ১১:১৯ পূর্বাহ্ন, ৩রা জুন ২০২৪

#

ছবি - সংগৃহীত

মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠাতে সিন্ডিকেটের অনিয়ম এবং তাতে প্রভাবশালী এমপিদের জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে প্রবাসীকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী রোববার রাজধানীর ইস্কাটনে প্রবাসীকল্যাণ ভবনে সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘তদন্ত করা হবে। রিক্রুটিং এজেন্সির মালিক এমপি না কে, তা আমরা জানি না। কোনো এমপিকে চিনি না, দায়ী যেই হোক, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

তিনি বলেন, কর্মীরা কেন মালয়েশিয়া যেতে পারেননি, সেই কারণ অনুসন্ধান করে সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেবে ছয় সদস্যের তদন্ত কমিটি। আগামী বুধবার মালয়েশিয়ার হাইকমিশনারের সঙ্গে বৈঠক হবে। যেতে না পারা কর্মীদের দেশটিতে প্রবেশের সুযোগ দিতে অনুরোধ করা হবে। গত শুক্রবার মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার বন্ধ হয়ে গেছে। হাজার হাজার বাংলাদেশি কর্মী রিক্রুটিং এজেন্সি ও আদম ব্যবসায়ীর কাছে টাকা দিয়েও দেশটিতে যেতে পারেননি। শুক্রবার শেষ দিনে বিমানের টিকিট না পেয়ে বিমানবন্দরে ভিড় করা হাজারো মানুষ আহাজারি করেন।

কর্মীরা জানান, সরকার মালয়েশিয়া যাওয়ার খরচ ৭৮ হাজার ৯৯০ টাকা নির্ধারণ করলেও তাদের কাছ থেকে সাড়ে ৬ লাখ টাকা পর্যন্ত নেওয়া হয়েছে। জমি বিক্রি করে, সুদে ঋণ নিয়ে টাকা দিয়ে সর্বস্বান্ত হয়ে গেছেন তারা। এদিকে ক্ষতিগ্রস্ত কর্মীরা কীভাবে টাকা ফেরত পাবেন, তা স্পষ্ট করেননি প্রবাসীকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী ও সচিব। সচিব রুহুল আমিন বলেছেন, তদন্ত কমিটির কাছে অভিযোগ জানাতে পারবেন কর্মীরা।

কর্মী ও এজেন্সির চুক্তিপত্রে সরকার নির্ধারিত ব্যয় উল্লেখ থাকে। কর্মীর কাছ থেকে বাড়তি টাকা আদায় করা হয় বিনা রসিদে। এই টাকা কর্মীরা কীভাবে ফেরত পাবে– এমন প্রশ্নে সচিব বলেন, তদন্ত কমিটি বিষয়টি খতিয়ে দেখবে। যত টাকা নেওয়া হয়েছে, তা ফেরত দিতে হবে। রিক্রুটিং এজেন্সি মালিকদের সংগঠন বায়রা এর দায়িত্ব নিয়েছে।

যদিও জনশক্তি ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, বাড়তি টাকার বড় অংশ চলে গেছে সিন্ডিকেটের পকেটে এবং মালয়েশিয়ায়। ফলে টাকা ফেরত পাওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, মালয়েশিয়া থেকে আসা ৫ লাখ ২৬ হাজার ৬৭৩ চাহিদাপত্রের বিপরীতে গত ৩১ মে পর্যন্ত জনশক্তি কর্মসংস্থান এবং প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি) ৪ লাখ ৯৩ হাজার ৬৪২ জনকে ছাড়পত্র দেয়। তাদের মধ্যে ৪ লাখ ৭৬ হাজার ৬৭২ জন মালয়েশিয়া গেছেন। ১৬ হাজার ৯৭০ কর্মী যেতে পারেননি।

জনশক্তি ব্যবসায়ীদের সংগঠন বায়রার মতে, কর্মীদের মধ্যে ৫ হাজার ৯৫৩ জন শুধু বিমানের টিকিট না পাওয়ায় যেতে পারেননি। বাকি ১১ হাজার যেতে পারেননি বিভিন্ন কারণে। জনশক্তি ব্যবসায়ী ও হাইকমিশন সূত্রে জানা গেছে, বিমানের টিকিটের জন্য যেতে না পারা ৬ হাজার কর্মীর সবাই ৫ থেকে ৬ লাখ টাকা করে দিয়েছেন। ছাড়পত্র পাওয়া বাকিরা বিমান ভাড়া বাদে বাকি টাকা দিয়েছেন আদম ব্যবসায়ী ও এজেন্সিকে। এর বাইরে গ্রামে-গঞ্জে হাজারো মানুষের কাছ থেকে বিভিন্ন অঙ্কের টাকা নিয়েছে তারা। ফলে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তের সংখ্যা ৫০ হাজারের বেশি।

আই.কে.জে/

মালয়েশিয়া

খবরটি শেয়ার করুন