ছবি: সুখবর
আজ ৩০শে সেপ্টেম্বর, জাতীয় কন্যাশিশু দিবস। এবার দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘কন্যাশিশুর স্বপ্নে গড়ি আগামীর বাংলাদেশ’।
দিবসটি ঘিরে নানান কর্মসূচি হাতে নিয়েছে সরকারের বিভিন্ন দপ্তর ও সংস্থা। স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে দিবসটি উদযাপনে জেলা ও উপজেলা দপ্তরগুলোকে কর্মসূচি গ্রহণের নির্দেশনা দিয়েছে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর।
২০০৩ সালে কন্যাশিশুদের সুরক্ষা ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় ৩০শে সেপ্টেম্বরকে জাতীয় কন্যাশিশু দিবস ঘোষণা করা হয়।
বাংলাদেশে প্রতি বছর ৩০শে সেপ্টেম্বর ‘জাতীয় কন্যাশিশু দিবস’ পালিত হয়। সমাজে যাতে মহিলারা ভেদাভেদ বা বৈষম্যের শিকার না হন, সেদিকে লক্ষ্য রেখে ও জনসচেতনতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্য এ দিবসটি পালন করা হয়।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী, দেশের মোট জনসংখ্যার ৪০ শতাংশ শিশুর উন্নয়ন, সুরক্ষা ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করে যাচ্ছে সরকার। এই শিশুদের অন্তত ১৫ শতাংশ কন্যাশিশু। করোনাকালে কন্যাশিশুর ওপর বঞ্চনা বেড়ে যাওয়ায় দিবসটি বিশেষ গুরুত্ব সহকারে পালনের উদ্যোগ নেওয়া হয়।
এদিকে প্রতিবছর ২৯শে সেপ্টেম্বর থেকে ৫ই অক্টোবর পর্যন্ত আন্তর্জাতিক শিশু সপ্তাহ পালন করা হয়। এই শিশু সপ্তাহের দ্বিতীয় দিন, অর্থাৎ ৩০শে সেপ্টেম্বর পালন করা হয় জাতীয় কন্যা শিশু দিবস হিসাবে।
অন্যদিকে এ দিবসকে ঘিরে সোমবার (৩০শে সেপ্টেম্বর) বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। বাণীতে তিনি বলেছেন, আজকের কন্যাশিশুই আগামী দিনে গড়ে তুলতে পারবে একটি শিক্ষিত পরিবার।
তিনি দেশের কন্যাশিশুসহ সব শিশুকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, দেশকে সমৃদ্ধির সুউচ্চ শিখরে নিয়ে যেতে সুস্থ, সুন্দর ও শিক্ষিত প্রজন্ম অপরিহার্য নিয়ামক। মায়ের গর্ভাবস্থা থেকে শিশুদের প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা, পুষ্টি, চিকিৎসা, শিক্ষা, নিরাপত্তা ও সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিতের মাধ্যমে সরকার বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
তিনি আরও বলেন, কন্যাশিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সরকার বিভিন্ন আইন ও সুরক্ষা কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। ভবিষ্যৎ সুস্থ প্রজন্ম গড়ার প্রত্যয়ে কন্যাশিশুর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বিনিয়োগ বৃদ্ধি করা হয়েছে। উপবৃত্তির সুযোগসহ যুগোপযোগী শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার দাবিতে শাহবাগে সমাবেশ
এছাড়া, চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের সুযোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে তথ্যপ্রযুক্তি শিক্ষাকে পাঠ্য বইয়ে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সমাজ সচেতনতামূলক বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে কন্যাশিশুদের সম্পৃক্ত করায় তৃণমূল পর্যায়ের কন্যাশিশুরা শিক্ষিত ও নিজেদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন হয়ে উঠছে। আজকের কন্যাশিশুর মধ্যেই সুপ্তভাবে বিরাজ করছে আগামী দিনের আদর্শ মা। আর একজন আদর্শ ও শিক্ষিত ‘মা’ একটি আদর্শ জাতি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে, দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘কন্যাশিশুর স্বপ্নে গড়ি আগামীর বাংলাদেশ’ যথার্থ হয়েছে বলে আমি মনে করি।
রাষ্ট্রপতি বলেন, সরকারি-বেসরকারি নানাবিধ পদক্ষেপের কারণে দেশে কন্যাশিশুদের শিক্ষার হার বৃদ্ধির পাশাপাশি বাল্যবিবাহ ও যৌতুকের হার কমে এসেছে। কন্যাশিশুরা খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত হয়ে উল্লেখযোগ্য সফলতা প্রদর্শন করছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে যোগ্যতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে তারা জেন্ডার সমতায় বাংলাদেশকে অনেকটা এগিয়ে নিয়ে গেছে।
আজকের কন্যাশিশুই আগামী দিনে গড়ে তুলতে পারবে একটি শিক্ষিত পরিবার। তাই নতুন বাংলাদেশ গড়ার দৃঢ় প্রত্যয়ে কন্যাশিশুদের অধিকার রক্ষায় আরও বেশি সচেষ্ট হবে এটাই সবার প্রত্যাশা। ‘জাতীয় কন্যাশিশু দিবস-২০২৪’ উপলক্ষ্যে গৃহীত সব কর্মসূচির সাফল্য কামনা করেন রাষ্ট্রপতি।
এসি/কেবি