ছবি: সংগৃহীত
ভারতকে 'নিরবচ্ছিন্নভাবে' জ্বালানি তেল সরবরাহের ঘোষণা দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। আজ শুক্রবার (৫ই ডিসেম্বর) নয়াদিল্লির রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন হায়দরাবাদ হাউসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শেষে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে পুতিন এ ঘোষণা দেন। সংবাদ সংস্থা এএফপি তাদের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
দ্বিপক্ষীয় বৈঠক সম্পর্কে পুতিন বলেন, 'আমাদের মধ্যে "গঠনমূলক" এবং "বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশে" আলোচনা হয়েছে। পুতিন বলেন, 'তেল, গ্যাস, কয়লা এবং ভারতের জ্বালানি উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছুর একটি নির্ভরযোগ্য সরবরাহকারী রাশিয়া।'
অন্যদিকে পুতিনকে 'আমার বন্ধু' সম্বোধন করেছেন মোদি। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, 'ভারত-রাশিয়া অংশীদারিত্বের একটি শক্তিশালী এবং গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ হলো জ্বালানি নিরাপত্তা।' তবে মোদি পারমাণবিক শক্তির কথা উল্লেখ করলেও, তেলের কথা নির্দিষ্ট করে উল্লেখ করেননি।
ইউক্রেন সংঘাত সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর ইউরোপ যখন রাশিয়ার তেল কেনা কমিয়ে দেয়, তখন মস্কোকে তেলের গুরুত্বপূর্ণ রপ্তানি বাজার দেয় ভারত। ২০২৪ সালে ভারতের মোট অপরিশোধিত তেল আমদানির প্রায় ৩৬ শতাংশ সরবরাহ করে রাশিয়া। যা প্রতিদিন প্রায় ১.৮ মিলিয়ন ব্যারেল।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের চাপের মুখে রাশিয়ার অপরিশোধিত তেল আমদানি কমিয়েছে ভারত। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত আগস্টে ভারতের অধিকাংশ পণ্যের উপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন। রাশিয়া থেকে তেল কেনা অব্যাহত রাখার জন্যই এমন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে যুক্তি দেখায় ওয়াশিংটন। তাদের দাবি, তেল বিক্রির অর্থ ইউক্রেন যুদ্ধে ব্যবহার করছে রাশিয়া।
সংবাদ সম্মেলনে নয়াদিল্লি ও মস্কোর দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্কের প্রশংসা করে মোদি বলেন, 'ভারত-রাশিয়া সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করতে আমরা সহযোগিতার সকল ক্ষেত্র নিয়ে আলোচনা করেছি।' তিনি আরও বলেন, 'আমরা ২০৩০ সাল পর্যন্ত অর্থনৈতিক সহযোগিতা কর্মসূচিতে একমত হয়েছি।' বাণিজ্য ও বিনিয়োগকে বৈচিত্র্যময় ও টেকসই করার ওপর জোর দেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।
ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়েও কথা বলেন দুই নেতা। পুতিন বলেন, 'ইউক্রেন পরিস্থিতি নিয়ে সম্ভাব্য শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য যুক্তরাষ্ট্রসহ কিছু অংশীদারদের সাথে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে মস্কো।' এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য মোদিকে জানিয়েছেন বলে জানান পুতিন।
এ ব্যাপারে মোদি বলেন, 'ভারত সবসময় ইউক্রেন পরিস্থিতিতে শান্তির পক্ষে কথা বলেছে।' সফরে অভিবাসন, কর্মসংস্থান, স্বাস্থ্য, জাহাজ চলাচলসহ একাধিক চুক্তি করেছে ভারত ও রাশিয়া। ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরুর পর এটিই রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের প্রথম ভারত সফর। রাষ্ট্রীয় ভোজে অংশ নেওয়ার পর আজ রাতেই মস্কো রওনা হবেন পুতিন।
খবরটি শেয়ার করুন